সোনালি মুরগিতে রুপালি স্বপ্ন

সুকুমল কুমার প্রামাণিক, রানীনগর (নওগাঁ)
 | প্রকাশিত : ২৭ অক্টোবর ২০১৯, ১৪:৩৭

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে সোনালি মুরগির খামার। রোগ-বালাই ও মৃত্যুর ঝুঁকি কম থাকায় এবং লাভ বেশি হওয়ায় সোনালি মুরগি পালন বেড়েই চলেছে। সোনালি মুরগি পালন বৃদ্ধি পাওয়ায় পুরো উপজেলায় বছরে প্রায় ২০০ মেট্রিকটন মাংস উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের। এই মুরগি চাষে এখানকার খামারিদের স্বপ্ন পূরণ হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, রানীনগর উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় মুরগির ৮০টি খামার রয়েছে। এসব খামারে প্রথম দিকে ব্রয়লার মুরগি পালন করলেও বাচ্চার দাম ও খাদ্যের দাম বেশি এবং রোগ-বালাইয়ে মুরগির মৃত্যুহার বেশি হওয়ার কারণে ইতিমধ্যে বেশ কিছু খামারি খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। এ ছাড়া অধিকাংশ ব্রয়লার পালনকারীরা ব্রয়লার ছেড়ে সোনালি মুরগি পালনে ঝুঁকে পড়েছেন। সোনালি মুরগি পালনে মৃত্যুঝুঁকি কম হওয়ায় এবং লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে এই মুরগি পালন। উপজেলার সবচেয়ে বড় মুরগি খামারি সিম্বা গ্রামের মৃত আব্বাস আলী আকন্দের ছেলে আবু সাইদ টিংকু ও তার ভাই সানোয়ার হোসেন রিংকু গত প্রায় ১১ বছর আগে ব্রয়লার মুরগি পালন শুরু করেন। বছরখানেক পর ব্রয়লারে লোকসান হওয়ায় স্বল্প পরিসরে সোনালি মুরগি পালন শুরু করেন তারা। মৃত্যুঝুঁকি কম থাকায় ও বাজারদর ভালো পাওয়ায় ধীরে ধীরে ব্যবসার পরিধি বাড়াতে থাকেন। বর্তমানে তারা দুই ভাই আলাদাভাবে মুরগি পালন করছেন। তাদের দেখাদেখি বেকারত্ব ঘোচাতে একই গ্রামের সোয়েব ইবনে প্রিন্স প্রায় তিন বছর আগে সোনালি মুরগি পালন শুরু করেন। বর্তমানে এই তিনজনের পাঁচটি খামারে প্রায় ৩৩ হাজার সোনালি মুরগি রয়েছে।

খামারি আবু সাইদ টিংকু জানান, দীর্ঘদিন যাবত এই ব্যবসার সাথে জড়িত থেকে লাভ লোকসান দুটারই দেখা পেয়েছি। ব্যবসা শুরুর দিকে প্রশিক্ষণ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা দিয়ে বর্তমানে ব্যবসার পরিধি বাড়িয়েছি। তিনি জানান, অপরিকল্পিতভাবে ফার্ম নির্মাণ, মানসম্মত বাসস্থানের পরিবেশ তৈরি করতে না পারা, বায়ু সিকিউরিটি না মানা, গুণগত মানসম্পন্ন খাদ্য বাছাই করতে না পারা, স্বল্প পুঁজি ও অদক্ষ শ্রমিকের কারণে মুরগি পালনে বেশিভাগ খামারি অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও পুঁজি হারিয়ে পোল্ট্রি ব্যবসা থেকে সরে যাচ্ছে। অথচ রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা, মানসম্মত খাদ্য, সঠিক সময়ে খাবার, ফার্মের উপযুক্ত আর্দ্রতা বজায়, সার্বক্ষণিক নজরদারি ও প্রশিক্ষিত শ্রমিক থাকলে লোকসানতো দূরের কথা একই খরচে আরও অনেক অংশে মাংস উৎপাদন করে অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বি হওয়া সম্ভব।

খামারি সানোয়ার হোসেন ও সোয়েব ইবনে প্রিন্স জানান, সরকার পর্যায় থেকে বাচ্চার দর কমে মূল্য নির্ধারণ, খাদ্যের দাম স্বাভাবিক, খাদ্যের গুণগত মান ঠিক রাখতে বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা এবং পাইকারি বাজারদরের উন্নতি হলে ব্যবসার পরিধি আরও বাড়বে।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, উপজেলায় হাঁস, মুরগি ও কবুতর থেকে মাংস উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তার চেয়ে বেশি মাংস উৎপাদন হচ্ছে সোনালি মুরগি থেকে। বছরে প্রায় ২০০ মেট্রিকটন মাংস উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। তিনি আশা করছেন, আগামীতে সোনালি মুরগি পালন আরও বাড়বে।

(ঢাকাটাইমস/২৭অক্টোবর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :