তথ্যমন্ত্রীর ফোনে ব্যাটারিচালিত রিকশা পেলেন সেই সুমি

রিমন রহমান, রাজশাহী
  প্রকাশিত : ৩০ মার্চ ২০২০, ১৪:৫৯| আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২০, ২২:৪৩
অ- অ+

রাজশাহীর রিকশাচালক সুমি ক্রুসের খোঁজ নিয়েছেন খোদ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তার নির্দেশনা মোতাবেক সুমির পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। তিনি সুমিকে ব্যাটারিচালিত একটি নতুন রিকশা কিনে দিয়েছেন। এছাড়া সুমির পাশে দাঁড়িয়েছেন অনেকেই।

সুমির দেশের বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার পার্বন্নী গ্রামে। প্রায় ১৫ বছর আগে তার স্বামী মারা যান। তারপর কোলের দুই সন্তানকে নিয়ে কিছু দিন বাবার বাড়িতে থাকেন সুমি। বাবা মারা যাওয়ার পর তিনি হয়ে পড়েন আশ্রয়হীন। দুই সন্তানকে নিয়ে চলে আসেন রাজশাহী। এখন নগরীর পাঠারমোড় এলাকায় একটি দোকানের পাশে পলিথিন দিয়ে ঘর বানিয়ে থাকেন। জীবিকার তাগিদে রিকশা চালান।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার খুব প্রয়োজন ছাড়া সরকার সাধারণ মানুষকে ঘর থেকে বের হতে বারণ করছে। ফলে রাস্তায় কমেছে যাত্রীর সংখ্যা। গত তিন দিন ধরে সুমির রিকশার মালিককে দেয়ার ২০০ টাকাই তুলতে পারছিলেন না।

তাকে নিয়ে রবিবার ঢাকাটাইমসে একটি মানবিক সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সুমির সঙ্গে যোগাযোগ করেন অনেকেই।

এদের মধ্যে রাতে খোদ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারকে ফোন করেন। তিনি সুমির ব্যাপারে কিছু করার নির্দেশনা দেন। পরে সোমবার দুপুরে ডাবলু সরকার সুমিকে ডেকে একটি নতুন রিকশা কিনে দেন। এছাড়া এক মাস রিকশা না চালিয়ে ঘরে থাকতে সুমিকে নগদ পাঁচ হাজার টাকা এবং বেশকিছু খাদ্যসামগ্রী দেন।

তখন ডাবলু সরকার সুমিকে জানান, তথ্যমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক তিনি সুমিকে এসব দিলেন। সব সময় তার পাশে থাকবেন।

এর আগে সকালে জেলা প্রশাসক হামিদুল হক সুমিকে তার কার্যালয়ে ডাকেন। এ সময় তিনি সুমিকে তিন হাজার টাকা, একটি মশারি এবং বেশকিছু খাদ্যসামগ্রী দেন। তারও আগে ভোরেই নগরীর সাত নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি সুমিকে নিজের কার্যালয়ে ডেকে কিছু টাকা এবং খাদ্যসামগ্রী দেন।

নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার যখন সুমিকে রিকশার চাবি দিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই সুমির জন্য সেখানে সুমির জন্য খাদ্যসামগ্রী আনেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক শরিফুল ইসলাম। আসেন একজন ছাত্রলীগ নেতাও। তিনি সুমিকে দোকানে নিয়ে গিয়ে খাদ্যসামগ্রী কিনে দেন।

নগরীর ভদ্রা ও বাটার মোড় এলাকার দুই ব্যক্তি সুমিকে ডেকে নগদ টাকা দেন। কাজীহাটা এলাকার এক গৃহিনী দেন খাদ্যসামগ্রী। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেকেই সুমিকে বিকাশের মাধ্যমে আর্থিক সহযোগিতা করেন। তারা পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি। নিউইয়র্ক এবং ইতালি থেকেও ফোন পেয়েছেন সুমি। এ প্রতিবেদকের কাছ থেকে সুমির নম্বর সংগ্রহ করেছেন একজন সহকারী পুলিশ সুপার এবং বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা। একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ আরও অনেকেই সুমির পাশে দাঁড়াতে চেয়েছেন।

মানুষের এমন সহানুভূতিতে সুমি আবেগাপ্লুত। তিনি বলেন, রাজশাহী শহরে আসার পর এই প্রথম এতো মানুষের ভালোবাসা পেলাম। দুনিয়ায় এখনও মানুষ আছেন, যারা মানুষের পাশে থাকেন। মানুষকে ভালোবাসেন। আজকে তার প্রমাণ পেলাম। সুমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ঢাকাটাইমসের প্রতিও।

আরও পড়ুন: রিকশায় যাত্রী না পেয়ে সুমির চোখে পানি

(ঢাকাটাইমস/৩০মার্চ/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনা-কামালের বিচার শুরুর আদেশ
জামালপুরে সীমান্ত দিয়ে নারীসহ ৭ জনকে পুশইন করল বিএসএফ
যেকোনো বৈরী পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি প্রস্তুত: মহাপরিচালক
শ্রীমঙ্গলে সেপটিক ট্যাংকে নেমে ৪ তরুণের মৃত্যু
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা