মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা খুন

কুমিল্লা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল ২০২০, ১৪:৩৩| আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২০, ১৪:৫৬
অ- অ+

শূন্যে তুলে মাটিতে আছাড় দেয়া হলো। এরপর কয়েকজন মিলে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম। মৃতপ্রায় অবস্থা ফেলে দেয়া হয় রাস্তার পশে। ফলাফল মৃত্যু। মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় ইউপি মেম্বারের হাতে এভাবেই জীবন দিতে হয়েছে এক বাবাকে। কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত কৃষক আমান উল্যাহ উপজেলার বেলঘর উত্তর ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামের বাসিন্দা। শনিবার তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

নিহতের পরিবার ও পুলিশ জানায়, কৃষক আমান উল্যাহর এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়েকে কিছুদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছে বেলঘর উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ও ইউপি মেম্বার দেলোয়ার হোসেন মজুমদারের ছোট ভাই কাঠমিস্ত্রী সোহরাব। গত ১৬ এপ্রিল রাত ১১টায় দিকে কৃষক আমান উল্যাহর বাড়িতে গিয়ে তার মেয়েকে ডাকাডাকি শুরু করেন সোহরাব। এ সময় আমান উল্যাহ ও তার ছেলেরা চোর চোর বলে চিৎকার দেয়। তাদের চিৎকার শুনে আশেপাশের বাড়ির লোকজন বেরিয়ে আসে। খুঁজতে গিয়ে সবাই দেখে ইভটিজার সোহরাব বাড়ির পাশের ধান খেতে শুয়ে আছে। এ সময় তাকে ধরে উত্তম মধ্যম দেয় স্থানীয়রা।

এ খবর পেয়ে সোহরাবের ভাই দেলোয়ার মেম্বারের নেতৃত্বে ১০/১২জন রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমান উল্যাহর বাড়িতে হামলা করে। পরদিন ১৭ এপ্রিল দুপুরে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের আমান উল্যাহ বিষয়টি জানান। গ্রামবাসীকে জানানোর কারণে দুপুরে দেলোয়ার মেম্বারের নেতৃত্বে তার ভাইয়েরাসহ কয়েকজন আমান উল্যাহকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। ঘর থেকে বের করার সময় দেলোয়ার মেম্বার আমান উল্যাহকে শূন্যে তুলে মাটিতে আছাড় দেয়। এরপর সবাই মিলে তাকে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করে ইছাপুরা গ্রামের শহীদের বাড়ির সংলগ্ন সড়কের পাশে ফেলে দেয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। শনিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় আমান উল্যাহর ছেলে আনোয়ার হোসেন ১৭ এপ্রিল বিকালে দেলোয়ার মেম্বারসহ এজাহারভুক্ত চারজন ও অজ্ঞাতনামা সাত-আটজনের বিরুদ্ধে লালমাই থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ ইছাপুরা গ্রামের ফজর আলীর ছেলে তোফাজ্জল ও আজগর আলীর ছেলে রবিউলকে গ্রেপ্তার করে।

নিহতের ছেলে ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আবদুল জলিল জানান, সোহরাবের চরিত্র খারাপ হওয়ায় তার স্ত্রী চলে গেছে। বেশ কিছুদিন ধরে তার বোনকে উত্ত্যক্ত করে আসছে সোহরাব। ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় দেলোয়ার মেম্বারের নেতৃত্বে তার বাবাকে খুন করা হয়েছে। খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচার চান তিনি।

লালমাই থানার ওসি মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, নিহতের ছেলে আনোয়ার হোসেন একটি মামলা করেছেন। ১৮ এপ্রিল সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভিকটিমের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা শাহবাগ থানার মাধ্যমে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করি। এখন পর্যন্ত দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছি। ইউপি মেম্বার দেলোয়ারসহ বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৯এপ্রিল/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বৈষম্যবিরোধী ও এনসিপির আন্দোলনের মুখে পটিয়া থানার ওসি প্রত্যাহার
বাংলামোটরে এনসিপির জুলাই চিত্র প্রদর্শনীর গাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ
তাড়াশে সম্পত্তি লিখে নিয়ে বাবা-মাকে বাড়িছাড়ার অভিযোগ
সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা