আম্পান কেড়ে নিল কয়রার ঈদ

ব্যুরো প্রধান, খুলনা
  প্রকাশিত : ২৫ মে ২০২০, ১৪:৪৬| আপডেট : ২৫ মে ২০২০, ১৫:১১
অ- অ+

করোনাভাইরাসের কারণে স্বাভবিক জীবনযাপন গত দুই মাস যাবৎ ব্যহত রয়েছে। এরই মধ্যে প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাত। সব কিছুই শেষ হয়ে গেছে খুলনার কয়রা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলের হাজার হাজার মানুষের। এ উপজেলার মৎস্য ঘের, কৃষি, ঘর-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজ সব কিছু পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। এরই মধ্যে পবিত্র ঈদুল ফিতর এসে হাজির। তাই ঈদের নামাজের জামায়াত পানির ভেতরেই আদায় করলেন অসহায় এ মানুষগুলো।

সোমবার সকালে কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়নে শত শত মানুষ পানির ভেতরেই ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। ঈদের নামাজের জামাতের ইমামতি করেছেন কয়রা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা তমিজ উদ্দিন। এ সময় বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামসহ কয়েকশ মানুষ ঈদের জামাতে অংশ নেন।

ঈদের নামাজের জামাতে অংশগ্রহণকারী মানুষের পরনে ছিল বেড়িবাঁধ ভাঙন মেরামতের সময়কালীন পোষাক। অনেকের কাঁধে ছিল কোদালসহ অন্যান্য জিনিসপত্র। এ ঈদের জামায়াতের চিত্র দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের হৃদয় কাঁদিয়ে দিচ্ছে। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিগুলো ভাইরাল হয়ে গেছে। লাখ লাখ মানুষ হৃদয় বিদারক মন্তব্য করছেন।

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, আমাদের জন্য বেঁচে থাকাটা কঠিন হয়ে গেছে। তাই ঈদে নেই কোনো আনন্দ। বোঁচে আছি এটাই ঈদের আনন্দ।

গত বুধবার রাতে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তোড়ে কয়রা উপজেলার অনেক বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। কপোতাক্ষ নদের পাড়ের কাশির হাট খোলা স্লুইস গেট, তার পাশের বেড়িবাঁধ, গাজীপাড়া বেড়িবাঁধ ভেঙে ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। গৃহহীন হয়ে পড়েছেন এ এলাকার হাজার হাজার মানুষ। চারিদিকেই শুধু থৈ থৈ পানি। ঘরে খাবার নেই। মাথা গোজার ঠাঁই নেই। খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করছেন। আবার কেউ রাস্তা বা বাঁধের ওপর অস্থায়ী ঘর তুলে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন।

কয়রা পাউবোর ১৩/১৪-১ ও ১৩/১৪-২ নম্বর পোল্ডারের (চারদিকে নদীবেষ্টিত দ্বীপ অঞ্চল) অন্তর্ভুক্ত। এর পূর্ব পাশে সুন্দরবনের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে শাকবাড়িয়া নদী, দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে কপোতাক্ষ ও উত্তর পাশে রয়েছে কয়রা নদী। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে খুলনার নয়টি উপজেলার ৮৩ হাজার ৫৬০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন সাড়ে চার লাখ মানুষ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে কয়রা উপজেলাবাসী, সেখানে ৪০ কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে ৮০ শতাংশ এলাকাই প্লাবিত হয়েছে। অসহায় হয়ে পড়েছেন প্রায় সাত লাখ মানুষ।

১৪টি পয়েন্টে নদী ভাঙনের কারণে এসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ঝড় ও বন্যার কারণে কয়রা উপজেলার প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির ফসল লবণ পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভেঙে ছোটবড় প্রায় পাঁচ হাজার মাছের ঘের ভেসে গেছে।

(ঢাকাটাইমস/২৫মে/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
খুলনায় যৌথ অভিযানে অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবাসহ আটক ১
বিএনপির বিরুদ্ধে চিহ্নিত গোষ্ঠী অপপ্রচার চালাচ্ছে: ড্যাব
প্রথম ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধন হচ্ছে সোমবার
জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে : মির্জা ফখরুল 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা