সাবরিনা একজন চিকিৎসক হয়েও কেন প্রতারণা করল?

সাহাদাত পারভেজ
  প্রকাশিত : ১২ জুলাই ২০২০, ১১:৪২
অ- অ+

টেস্ট না করে ভুয়া সনদ দিয়ে দিনের পর দিন মানুষকে ঠকিয়ে আসছিল জেকেজি হেলথকেয়ার। প্রতারণার দায়ে জেকেজির কয়েকজন গ্রেপ্তার হলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। সে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের রেজিস্টার ডাক্তারও। একজন সরকারী কর্মকর্তা হয়ে সে কেমন করে জেকেজির চেয়ারম্যান হন, ভাবা দরকার।

বিষয়টি সরকারি চাকরির বিধিবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিকও। অথচ জেকেজির দুর্নীতি ও কেলেংকারি ধরা পড়ার পর সাবরিনার গলায় ভিন্ন সুর। এখন বলছে, সে নাকি জেকেজির চেয়ারম্যান না। সবাই নাকি তাকে চেয়ারম্যান ডাকতো। সবার মুখে মুখে সে চেয়ারম্যান তকমা পেয়ে যায়। অথচ অনেক ভিডিও ক্লিপসেও তার এই চেয়ারম্যান পরিচয়টি ভেসে বেড়াতে দেখা যায়।

তার অন্য একটি দাবিও চোখে পড়লো। সে নাকি এক মাস আগেই এই পদ ছেড়ে দিয়েছে। অথচ করোনা সংক্রমণের শুরুতে তার তদবিরেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছ থেকে করোনার বুথ স্থাপনের কাজ পায় জেকেজি।

ঢাকাসহ দেশের ৪৪টি স্থানে করোনার নমুনা সংগ্রহের বুথ বসিয়ে তারা ১৬ হাজার করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট দেয়।

এছাড়া বাসায় গিয়ে যাদের কাছ থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহ করতো তাদের কাছ থেকে নেওয়া হতো পাঁচ হাজার টিকা। আর বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে আদায় করা হতো এক শত ডলার। তারা নিজেরা নিজেরা মশকরা করে বিদেশি নাগরিকদের বলতো বিদেশি বা ফার্মের মুরগী। আজ দৈনিক দেশ রূপান্তর লিখেছে, তিতুমীর কলেজে নমুনা সংগ্রহের বুথ বসিয়ে প্রশিক্ষণের নামে তারা অনৈতিক কর্মকাণ্ড চলতো।

করোনার বুথে মদ সেবনের আসর বসতো। রাতভর নাচানাচি হতো। জোড়ায় জোড়ায় কলেজের বিভিন্ন কক্ষে কর্মীরা অবস্থান করতো। শুনলাম এই আপত্তিকর কাজে বাঁধা দিতে গিয়ে কলেজের শিক্ষক, ছাত্র আর কর্মচারীদের উপর হামলা চালিয়েছে সাবরিনার স্বামী আরিফুলের ক্যাডার বাহিনী। দেশ রূপান্তরের নিজস্ব প্রতিবেদক আলাউদ্দিন আরিফ বেশ সাহসের সঙ্গেই লিখেছেন, কোভিড-১৯ এর ভুয়া সনদ দেওয়ার বিষয়টি জেকেজির প্রায় সব কর্মীই জানতো।

তারা যেনো বিষয়টি বাইরে প্রকাশ না করে, তার জন্য তাদের দেওয়া হতো বাড়তি অর্থ। এর পাশাপাশি আনন্দ ট্রিপ হিসেবে সপ্তাহে এক দিন তাদের নারী ও পুরুষ কর্মীদের একসঙ্গে হোটেলে থাকার সুযোগ করে দেওয়া হতো। এই খবর পড়ার পর মানুষ হিসেবে আমার আর বাঁচতে ইচ্ছে করে না।

সাহেদের না হয় পড়াশোনা নাই, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যায় নাই; কিন্তু সাবরিনা? সাবরিনা তো একজন মানবিক পেশার মানুষ, একজন কার্ডেও সার্জন। টেলিভিশনে ভালো ভালো বুলি আওড়াতো। চিকিৎসক হিসেবেও তো তার একটা এথিকসের জায়গা থাকা দরকার ছিল। কোথায় হারালো সেসব? চারপাশে কেবল অমানিশার ঘোর অন্ধকার দেখতে পাচ্ছি।

লেখক: সংবাদচিত্রী ও শিক্ষক

ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/এসকেএস

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এবার এনসিপির ‘কলম’ ও ‘মোবাইল ফোন’ মার্কা নিয়ে টানাটানি
সৌদিতে বিদেশি পর্যটক ও ভ্রমণকারীদের জন্য নতুন ড্রাইভিং নির্দেশনা
ঢাকাসহ ১৩ জেলায় ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস
গাজায় ত্রাণ নিতে আসা ৮৩৮ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরায়েল
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা