১০ কোটির মেমোরি কার্ড গায়েবের সুরাহা হয়নি চার বছরেও
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কাস্টমসের গোডাউন থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের মেমোরি কার্ড গায়েব হওয়ার ঘটনার চার বছর পরও কোনো সুরাহা হয়নি। উচ্চ আদালতের রায়ের পরও খোয়া যাওয়া মালামাল কিংবা ক্ষতিপূরণ কোনোটাই পাননি ব্যবসায়ি মামুন হাওলাদার। সর্বশেষ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরে লিখিত অভিযোগে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪০ কোটি টাকা দাবি করেছেন এই ভুক্তভোগী।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১১ জুন হংকং থেকে দুই লাখ ১০ হাজার পিস মেমোরি কার্ড আমদানি করেন মামুন হাওলাদার। তখন মাল খালাসের জন্য শুল্কাদি পরিশোধের আগ পর্যন্ত চালানটি জিম্মায় নেয় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। চালানটি সংরক্ষণ করা হয় বিমানবন্দরের সংরক্ষিত গোডাউনে। যেখানে আটককৃত সোনাসহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসও রাখা হয়। শুল্ককর পরিশোধ সাপেক্ষে ২১ দিনের মধ্যে মামুনের চালানটি খালাসের কথা উল্লেখ করে রশিদও দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। নির্ধারিত শূল্ক পরোশোধ করে নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও মাল খালাসে টালবাহানা শুরু করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। একপর্যায়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে রিট পিটিশন দাখিল করেন মামুন হাওলাদার। আদালত ২০১৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আবেদন নিষ্পত্তি করে মামুনের পক্ষে আদেশ দেন।
পরে গোডাউন থেকে মাল আনতে গিয়ে মামুন দেখেন তার লাগেজ কাটা এবং খোলা। ভেতরের সব মেমোরি কার্ডও গায়েব। সুরক্ষিত ও গুরুত্বপূর্ণ এ গোডাউন থেকে মাল গায়েবের ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
কাস্টমসের একাধিক সূত্র জানায়, বিমানবন্দর কাস্টমসের গোডাউন থেকে মূল্যবান মেমোরি কার্ডগুলো গায়েব করে ফেলেন তৎকালীন গোডাউন কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ। তার সাথে বাইরের একটি অসাধু সিন্ডিকেটও জড়িত ছিল। দীর্ঘদিন থেকে তারা এ কাজটি করে আসছিল। পরে মামুনের অভিযোগের পর তদন্ত কমিটি গঠন করে ঢাকা কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, সেই তদন্তেও হারুনকে দায়ী করে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়।
ভুক্তভোগি মামুন হাওলাদার জানান, গত প্রায় চার বছরেরও বেশি সময় ধরে তার মাল আটকে রাখা হয়েছে। প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের মেমোরি কার্ডের চালানটি ফেরত পেতে এখনো দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি। এতে তিনি আর্থিক ও সামাজিকভাবে হয়রানি হয়েছেন। সেজন্য সরকারের কাছে ৪০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ এবং অসাধু এ চক্রের কঠিন শাস্তি চান তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কাস্টমস হাউস কমিশনার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, তদন্তে কাস্টমসের তৎকালীন কয়েকজন কর্মকর্তা ও একজন বহিরাগতের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে কবে নাগাদ ব্যবস্থা নেয়া হবে সে সম্পর্কে তিনি কিছু জানাননি।
(ঢাকাটাইমস/১৬জুলাই/টিএ/জেবি)