দই খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:১৬| আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:৩৩
অ- অ+

করোনাকালে মানুষ বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্ত এবং শঙ্কিত। গবেষকদের মতে, গত দশ বছরে যে যে মারণ রোগ বেশি মাত্রায় থাবা বসিয়েছে মানুষের ওপরে যেমন ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক, ক্যানসার, উচ্চ রক্তচাপ প্রভৃতি রোগের প্রকোপ কমাতে দইয়ের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, প্রতিদিনের ডায়েটে একবাটি দইকে জায়গা করে দিলে আরও নানাবিধ উপকার পাওয়া যায়।

শরীরের অ্যাসিডিটি নিয়ে চিন্তিত। বেশিরভাগ বাড়ির মাসের বাজারে থাকে অ্যান্টাসিড আর লিভারের সমস্যার ওষুধ। কিন্তু মুড়ি-মুড়কির মতো ওষুধ যে কোনো কাজেই লাগে না সেই নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে কজন!

করোনা আবহে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর জাতীয় অ্যান্টাসিড খেলে কোভিড সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। কিন্তু তাতেও হুঁশ ফেরে না। পেটের যাবতীয় সমস্যা সমাধানে নিয়ম করে দই খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যার পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে ভালো থাকা যায়। প্রো-বায়োটিক খাবারের প্রসঙ্গে প্রথমেই আসে দই এর প্রসঙ্গ। দইয়ে থাকে বেশ কিছু উপকারী জীবাণু যারা আমাদের নানান অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করে সুস্থ থাকতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। উপকারী জীবাণুদের মধ্যে আছে ল্যাকটোব্যাসিলাস অ্যাসিডোফিলাস, ল্যাকটোকক্কাস ল্যাকটিস, ল্যাকটোকক্কাস কেমোরিস ইত্যাদিরা।

দইয়ের মধ্যে আছে স্ট্রেপটোকক্কাস থার্মোফিলাস ল্যাকটোব্যাসিলাস বুলগারিকাস নামক জীবাণু। এরা সকলেই আমাদের নানা অসুখের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। অর্থাৎ শরীরে কোনও ক্ষতিকর জীবাণু অনুপ্রবেশ করে আক্রমণ করে দইয়ে থাকা সৈনিক জীবাণুরা যুদ্ধ শুরু করে দেয়। আর বেশিরভাগ সময়েই তারা জিতে যায় বলে আমরা ভাল থাকি। এই কারণেই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় দই রাখার পরামর্শ চিকিৎসক তথা পুষ্টিবিদদের। টক দইয়ে আছে বেশ কিছু ভিটামিন মিনারেলস যা আমাদের ভাল থাকতে সাহায্য করে।

পুষ্টিবিদদের মতে, যে ভিটামিন বি_২, ভিটামিন বি_১২, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম থাকায় দইয়ের পুষ্টি মূল্য এত বেশি। উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে দই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। দইয়ে থাকা পটাশিয়াম রক্তে সোডিয়াম শোষণের মাত্রা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। সোডিয়াম ব্লাড প্রেশার বাড়ায়।এই উপাদান কম থাকলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিমন্ত্রণ বাড়িতে খাবার পর শেষ পাতে দই খাবার প্রচলন ছিল। খাবার হজম করতে দইয়ের উল্লেখযোগ্য ভূমিকার কথা জেনেই এই প্রচলন। রং দেওয়া বা প্রচুর চিনি দেওয়া দই নয়, শরীর সুস্থ রাখতে বাড়িতে পাতা টক দই ভাল। দইয়ের উপাদান রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএলের মাত্রা কমিয়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। অন্যদিকে ভাল বা বন্ধু কোলেস্টেরল এইচডিএলের মাত্রা বাড়িয়ে হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে পারে দই।

একই সঙ্গে দইয়ের ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্ককে আচমকা রক্ত বন্ধ হয়ে স্ট্রোক ও রক্তক্ষরণ থেকে বাঁচায়। কোনও শারীরিক সমস্যা না থাকলে রোজ ৫০-১০০ গ্রাম করে বাড়িতে পাতা টক দই খেতে পারেন। এর ফলে মেটাবলিক সিনড্রোম অর্থাৎ উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি ওজন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত দই খেলে অগ্ন্যাশয় বা প্যাংক্রিয়াসের কার্যক্ষমতা বাড়ে। ফলে ইনসুলিন নিঃসরণ স্বাভাবিক হয়, একথা সকলের জানা যে ইনসুলিনই আমাদের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে। সুতরাং রোজকার ডায়েটে দই রাখলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ হয়।

দইয়ে থাকা ল্যাকটোব্যাসিলাস জাতীয় বন্ধু জীবাণুরা আমাদের পাকস্থলীতে পৌঁছে খাবার চট করে হজম করতে সাহায্য করে। যারা অ্যাসিডিটি, হজমের অসুবিধা বা অন্যান্য পেটের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য দই অত্যন্ত উপকারি। কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়ারিয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে কার্যকর এই ম্যাজিক ফুড। যাদের চট করে ঠান্ডা লেগে সর্দি জ্বর বা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো সমস্যা হয় তাঁদের জন্যেও দই অত্যন্ত উপকারী।

দাঁত ও হাড় মজবুত করতেও দই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। অন্ত্র পরিষ্কার করে শরীরকে টক্সিন মুক্ত রাখে টক দই। ফলে ত্বক ও চুল হয় ঝকঝকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। এমনকি ওজন স্বাভাবিক রাখতেও বাড়িতে পাতা দই অত্যন্ত দরকারি। দইয়ের ঘোল বা রায়তা কিংবা স্যালাদে দই মিশিয়ে খেতে পারেন অনায়াসে। যে কোনও ভাবেই এক কাপ দই রাখুন প্রতিদিনের খাবারের তালিকায়।

(ঢাকাটাইমস/২৩ সেপ্টেম্বর/আরজেড/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাজনীতিতে অভিভাবক দল হিসেবে আমরা বারবার ধৈর্য ধরেছি: অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া
এনবিআরের আরও ৬ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরখাস্ত
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাস
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আরও একজন গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা