মাটি নেওয়ার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি রাবি শিক্ষকদের

রাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল ২০২১, ২১:৩৮
অ- অ+

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পুকুর খননের মাটি ইট ভাটায় যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের শিক্ষকরা। তবে প্রগতিশীল শিক্ষকদের আহবায়ক ও আহবায়ক কমিটির সদস্যদের দুইটি আলাদা বিবৃতি এসেছে গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে। দুইটি বিবৃতিতেই দ্রুত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা। এছাড়া দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠনের দাবিও জানানো হয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে কমিটির ১৬ সদস্যের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে মাটি বাইরে নেওয়ার সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ইন্ধন রয়েছে দাবি করে শিক্ষকরা বলেছেন, অত্যন্ত বিস্ময়ের সাথে লক্ষ করছি যে, প্রশাসন এ প্রক্রিয়া বন্ধে বা উক্ত ইজারাদারের বিরুদ্ধে আইনানুগ কোনো ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত গ্রহণ করেনি। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পরিচালিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ হরিলুট বা বিধিবহির্ভূতভাবে কারো কাছে ছেড়ে দেয়া অথবা এমন কর্মকান্ডে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা নিশ্চিতভাবেই দুর্নীতি ও হরিলুটকে সমর্থনের শামিল।

শিক্ষকদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং এর প্রতিটি সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব এর প্রশাসনের। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি দপ্তর যেমন কৃষি প্রকল্প, এস্টেট এবং প্রক্টরিয়াল অফিসও রয়েছে। এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রশ্রয় ও ইন্ধন রয়েছে এবং প্রকারান্তরে তারা এই ন্যাক্কারজনক কাজে জড়িত বলে জাতির কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান তার দায়িত্বের শেষ কর্তৃত্বহীন হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করা হয়।

তবে আহবায়ক অধ্যাপক হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে শুধুমাত্র কৃষি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা কমিটির অযোগ্যতা ও পরিকল্পনাহীনতাকে দায়ি করা হয়েছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ্য করা হয়েছে, কৃষি প্রকল্পের উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহাকে বারবার অবগত করেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ অবৈধভাবে বিক্রির দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এড়িয়ে যেতে পারে না। অবিলম্বে মাটি চুরি বন্ধ ও প্রকল্পের ফলে পূর্বপাড়ায় পয়নিস্কাশনের কি ক্ষতি হতে পারে সেটি খতিয়ে দেখার অনুরোধ করছি। এছাড়া আবাসিক এলাকার শিক্ষক পরিবারদের সম্ভ্রম ও নিরাপত্তার প্রশ্নটি কেনো বিবেচনা করা হয়নি তাও খুঁজে বের করার দাবি জানান তিনি। একই সাথে একটি তদন্ত কমিটি করার দাবি জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।

আলাদা বিবৃতি ও কমিটির বড় অংশ শিক্ষকের অবস্থানের বিপরীতে নতুন বিবৃতির বিষয়ে জানতে চাইলে আহবায়ক অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান বলেন, আমি সদস্যদেরকে বলেছিলাম বিবৃতিটা থেকে মাটি কাটা সংশ্লিষ্ট নয়, উপাচার্যকে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ও নতুন ভবন নির্মাণের টেন্ডার সম্পর্কিত বিষয়গুলো বাদ দিতে। তারা বাদ দিতে চাননি। ১৬ জনের স্বাক্ষরে বিবৃতি দিয়েছেন। আর আমি নিজে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে বিবৃতি দিয়েছি।

উল্লেখ্য, গতবছর মার্চে শহীদ শামসুজ্জোহা হলের পূর্বপাশের প্রায় ১০ বিঘা জমিতে পুকুর খননের টেন্ডার হয়। এতে মাসুদ রানা ও অহনা ট্রেডার্স নামে দুইটি প্রতিষ্ঠান এই ইজারা পান। তবে শর্তভঙ্গ করে গত ২৭ মার্চ থেকে খননরত পুকুরের মাটি ট্রাক ভর্তি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে নিয়ে যেতে থাকে জোহা হলের পূর্বে দক্ষিণ জলাশয় লিজ গ্রহিতা দুই পক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি মাটি বিক্রি বন্ধে দুই দফা নির্দেশনা দেওয়া হলেও এই নির্দেশ তোয়াক্কা করছে না।

সর্বশেষ ২২ এপ্রিল বিষয়টি বন্ধের উদ্যোগ নিতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ একটি সভা করেছেন বলে জানিয়েছেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা। ২৪ এপ্রিল ওই ইজারা নেওয়া দুইটি পক্ষের সাথে প্রশাসনের বসার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২৩এপ্রিল/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
টয়োটার ব্যবসা হারাচ্ছে নাভানা?
সারজিস বনাম নওশাদ: ভোটে কার পাল্লা ভারি?
মনোহরদীতে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ছাত্রদল নেতা গণধোলাইয়ের শিকার
গণভবন জয় করেছি, এবার জাতীয় সংসদও জয় করব: নাহিদ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা