বিদ্যালয়টির নতুন ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল

শেখ খলিলুর রহমান, শরীয়তপুর
 | প্রকাশিত : ০৪ জুলাই ২০২১, ১৭:৪৭

ঠিকাদারের পক্ষ থেকে ভবনটি বুঝিয়ে না দিতেই শরীয়তপুর সদর উপজেলার ৯৯ নম্বর খায়েরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরেছে। বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে নিচে পড়ছে পানি। যেকোনো সময় ভবনটি ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

এ অবস্থায় গত ২৩ জুন এলজিইডির সদর উপজেলা প্রকৌশলী কেএম রেজাউল করিম পরিদর্শন করেছেন।

প্রকৌশলী কেএম রেজাউল করিম বলেন, ২০১৮ সালে ওই বিদ্যালয়ের ভবনটির কাজ শুরু হয়। ২০২০ সালের জুনের আগে কাজটি শেষ হয়। ঠিকাদার এলজিইডিকে ভবনটি এখনো বুঝিয়ে দেয়নি। ত্রুটির কথা শুনে আমি বিদ্যালয় ভবনটি পরিদর্শন করেছি। জানালা, ছাদ, ফ্লোর, দরজা, জানালাসহ বিভিন্ন ত্রুটি রয়েছে ভবনটিতে। তাই ঠিকাদারকে ত্রুটিগুলো সমাধানের জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৯৯ নম্বর খায়েরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। নব্য জাতীয়করণ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের আওতায় ২০১৮ সালে এলজিইডি বিভাগ ৬৪ লাখ ৩৩ হাজার ৮৪৮ টাকা ব্যয়ে একটি নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে। চারতলা ভবনটির দোতলার নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০২০ সালে। স্কুল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ কক্ষের ভবনটি বুঝিয়ে না দিতেই বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফ্লোরে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে এবং বৃষ্টি হলেই সাদ চুইয়ে নিচে পড়ছে পানি। এছাড়া জানালা, ছাদ, ফ্লোর, দরজাসহ বিভিন্ন ত্রুটি রয়েছে ভবনটিতে। মেসার্স নিয়াজ ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভবনটি নির্মাণ করে।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ রয়েছে। বিদ্যালয়ের নতুন ভবনটি ঝুকিপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হওয়ার আগে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করা উচিৎ। নতুন ভবনটিতে ফাটলসহ বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, নিচতলার পূর্ব পাশের কক্ষটি কলাম ও ফ্লোরে বড় বড় ফাটল। ফ্লোর দেবে যাচ্ছে। বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে নিচে পানি জমে থাকছে। বেশিরভাগ জানালা বন্ধ করা যায় না। দরজায় নিম্নমানের কাঠ, ফ্যানের কোনটিতেই রেগুলেটর দেয়া হয়নি, ফ্যান ও বৈদ্যুতিক তার নিম্নমানের। ভবনের দেয়ালেও বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য ফাটল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৯৯ নম্বর খায়েরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থী রয়েছে ১০০ জন। শিক্ষক আছেন চারজন।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাজমা ও জিয়াসমিন আক্তার বলেন, যে ঠিকাদার ভবনটি নির্মাণ করেছেন তিনি অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছেন। প্রাথমিক শিক্ষার একটি স্লোগান আছে ‘নিরাপদ পরিবেশে পাঠদান’। কিন্তু আমরা নিরাপদ পরিবেশে নাই, আমরা ঝুঁকিতে আছি। তাই ভবনটির সংস্কার প্রয়োজন।

ঠিকাদার সোহেল খান বলেন, ‘কাজটি মেসার্স নিয়াজ ট্রেডার্সের নামের। সব বিষয় নিয়েই কি নিউজ করতে হয়? আমি অসুস্থ বাসায় আছি। এ বিষয়ে পরে কথা বলবো।’

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভবনটি করেছে এলজিইডি। ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরেছে। বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে নিচে পানি পড়ছে বলে শুনেছি। আমি পরিদর্শনে যাব। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’

(ঢাকাটাইমস/৪জুলাই/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :