জিন্স পরায় মেয়েটিকে পিটিয়ে মারল স্বজনরা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৮ জুলাই ২০২১, ১৫:১৩| আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২১, ১৫:৩১
অ- অ+

১৭ বছর বয়সী ভারতীয় তরুণী নেহা পাসওয়ান। শুধুমাত্র জিন্স পরার অপরাধে তাকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করল তার আত্মীয়স্বজনরা। গত সপ্তাহে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া দেওরিয়া এলাকার সাভরেজি খার্গে গ্রামে। খবর বিবিসির।

নিহত নেহা পাসওয়ানের মা শকুন্তলা পাসওয়ান গণমাধ্যমকে বলেন, পোশাক নিয়ে তর্কের এক পর্যায়ে নেহার দাদা এবং চাচারা তাকে লাঠি দিয়ে প্রচণ্ড পেটায়। এতে সে অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর প্রহারকারীরা অটোরিকশা ডেকে আনে এবং জানায় নেহাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে।

নেহার মায়ের অভিযোগ, ‘তারা আমাকে সঙ্গে যেতে দেয়নি। তাই আমি আমার আত্মীয়স্বজনকে জানাই যাতে তারা সদর হাসপাতালে গিয়ে আমার মেয়ের খোঁজ নেয়। কিন্তু তারা সেখানে গিয়ে নেহাকে খুঁজে পায়নি। পরদিন সকালে শুনতে পাই গন্ডক নদীর ওপরের একটি সেতু থেকে একটি মেয়ের মৃতদেহ ঝুলছে। সেখানে গিয়ে জানতে পারি, লাশটি নেহার।’

সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শকুন্তলা পাসওয়ান জানান, ‘নেহা দিনভর উপবাস পালন করেছিল। সন্ধ্যাবেলায় ধর্মীয় আচার পালনের জন্য জিন্স ও টপ পরেছিল। তার দাদা-দাদি এটা নিয়ে আপত্তি জানান। নেহা তখন জবাব দেয়, জিন্স তৈরিই করা হয়েছে পরার জন্য, সে জন্যই আমি এটা পরেছি।’

তর্কাতর্কির মাত্রা ক্রমেই বাড়ছিল বলে জানান নেহার মা শকুন্তলা। এক পর্যায়ে তা সহিংসতায় রূপ নেয়। নির্দয়ভাবে পেটানো হয় নেহাকে। শুধুমাত্র জিন্স পরার অপরাধে! শকুন্তলা পাসওয়ান বলেন, তার মেয়ে পুলিশ অফিসার হতে চেয়েছিল। কিন্তু সে স্বপ্ন আর কোনোদিন পূরণ হবে না।

নেহার মায়ের অভিযোগ, তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা প্রায়ই নেহাকে স্কুল ছাড়ার জন্য চাপ দিত এবং ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় পোশাক না পরার জন্য প্রায়ই তিরস্কার করতো। কিন্তু নেহা সেগুলো পছন্দ করতো না। তার পছন্দ ছিল আধুনিক পোশাক।

পুলিশ এ ঘটনায় ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা ও প্রমাণ নষ্টের অভিযোগে মামলা করেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে নেহার দাদা-দাদী, চাচা-চাচী, চাচাতো ভাইবোন ও অটোরিকশা চালকও রয়েছে। অভিযুক্তরা এখন পর্যন্ত প্রকাশ্য কোনো বক্তব্য দেননি।

সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা স্রিয়াশ ত্রিপাঠি জানান, নেহার দাদা-দাদী, একজন চাচা এবং অটো চালককে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের জন্য খোঁজা হচ্ছে।

পাঞ্জাবের একটি শহর লুধিয়ানায় দিনমজুরের কাজ করেন নেহার বাবা অমরনাথ পাসওয়ান। তিনি খবর শুনে বাড়ি ফিরে এসেছেন। বলেছেন, নেহাসহ বাকি সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করেন। মেয়েকে হারিয়ে এখন তিনি শোকে কাতর।

ঢাকাটাইমস/২৮জুলাই/এএইচ

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এনবিআরের আরও ৬ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরখাস্ত
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাস
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আরও একজন গ্রেপ্তার
বনানীতে পথশিশু ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা