সাইবার হামলায় অচল ইরানের সব পেট্রল স্টেশন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  প্রকাশিত : ২৮ অক্টোবর ২০২১, ১১:২১
অ- অ+

সাইবার আক্রমণের মাধ্যমে জ্বালানি বিতরণ নেটওয়ার্ককে অচল করে দেয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে ইরান। মঙ্গলবারে হওয়া এই সাইবার আক্রমণের পেছনে একটি দেশের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।

প্রিডেটরি স্প্যারো নামে পরিচয় দেয়া একটি গ্রুপ দাবি করেছে যে, তারা ওই সাইবার আক্রমণ চালিয়েছে। কিন্তু ইরানের শীর্ষ ইন্টারনেট নীতি-নির্ধারণী সংস্থা এর পেছনে একটি বেনামী 'স্টেট অ্যাক্টর (বিদেশী কোন সরকার দ্বারা পরিচালিত কেউ)' রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। খবর বিবিসির

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, এর লক্ষ্য ছিল 'মানুষের মধ্যে ক্ষোভ জাগিয়ে তোলা'।

ওই আক্রমণের মাধ্যমে ইরানের পেট্রল বিক্রির বিভিন্ন সংস্থার আন্তঃসংযুক্ত নেটওয়ার্ককে বিকল করে দিয়েছে। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেশটির মোটর গাড়ি চালকেরা সরকারের ইস্যু করা স্মার্ট কার্ড দিয়ে হ্রাসকৃত মূল্যে পেট্রল কিনতে পারতেন। ভর্তুকি দেয়া জ্বালানি কেনার জন্য দেশটির পেট্রোল স্টেশনগুলোতে সব সময়ই দীর্ঘ লাইন থাকত।

একই সঙ্গে হ্যাকাররা রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরের হাইওয়েতে বসানো ডিজিটাল বিলবোর্ডেরও দখল নেয়। সেগুলোতে তারা একটি বার্তা পোস্ট যাতে লেখা ছিল 'খামেনি, আমাদের জ্বালানি কোথায়?'

ইরানের জ্বালানি তেল বিতরণ সংক্রান্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বুধবার সকাল নাগাদ দেশটির মোট ৪,৩০০ পেট্রল স্টেশনের মাত্র পাঁচ শতাংশ হ্যাকারদের কবল থেকে মুক্ত করে চালু করা হয়েছে। যদি তিনি জানিয়েছেন, প্রায় তিন হাজার স্টেশন ভর্তুকি-বিহীন দামে 'অফলাইনে' জ্বালানি বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অবরোধ, ইরান সরকারের অব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতির কারণে দেশটির মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ক্রমে খারাপ হয়েছে। সে কারণে ইরানে বেশিরভাগ মানুষ সরকারের ভর্তুকি দেয়া দামে বিক্রি করা জ্বালানির ওপর নির্ভর করে।

বুধবার মন্ত্রীসভার বৈঠকে রাইসি বলেন, 'বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং জনজীবনে বিঘ্ন ঘটিয়ে মানুষের মনে ক্ষোভের সঞ্চার করার জন্য কেউ এ কাজ করেছে।'

প্রেসিডেন্ট দাবি করেছেন যে কর্তৃপক্ষের সতর্কতার কারণে হ্যাকাররা এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারেনি। ইরানের সুপ্রিম কাউন্সিল অব সাইবারস্পেসের সেক্রেটারি আবোলহাসান ফিরুজাবাদী বলেছেন, হামলাটি একটি রাষ্ট্র চালিয়েছিল। কিন্তু 'কোন দেশ এবং কীভাবে' সে হামলা চালানো হয়েছিল তা জানানোর সময় এখনো হয়নি।

এদিকে আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা ফারস বলছে, হ্যাকিংয়ের এই ঘটনাটি দুই বছর আগে ইরানে পেট্রলের দাম ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়া হলে দেশজুড়ে যে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল, তার দ্বিতীয় বার্ষিকী উদযাপনের সাথে সম্পর্কিত। ওই বিক্ষোভ দমনে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক শক্তি প্রয়োগ করে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, সেসময় ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।

যদিও ইরানের কর্মকর্তারা সে দাবি নাকচ করে দিয়ে আসছেন। মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে এক পোস্ট দিয়ে প্রিডেটরি স্প্যারো বলছে, সাইবার আক্রমণটি আসলে 'এ অঞ্চল এবং বিশ্বের মানুষের বিরুদ্ধে তেহরানের সন্ত্রাসী সরবারের চালানো সাইবার কর্মকাণ্ডের একটি জবাব'।

একই সঙ্গে ইরানের জরুরী সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল বলে দাবি করেছে হ্যাকার গ্রুপটি। তারা বলছে, ইরানের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে 'খুব দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি' হতে পারে এমন কিছু না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা।

গ্রুপটি দাবি করেছে, জুলাই মাসে ইরানের রেল নেটওয়ার্কে সাইবার আক্রমণের পিছনেও ছিল তারা। সেসময় স্টেশনের বোর্ডগুলোতে বিলম্বিত বা বাতিল বলে ভুল বার্তা প্রদর্শিত হয়।

ঢাকাটাইমস/২৮অক্টোবর/একে

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
খানসামায় পাটক্ষেত থেকে ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার
১৫ লাখ সরকারি চাকরিজীবী পাবেন উচ্চতর গ্রেড, আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
নিবন্ধন চাওয়া ১৪৪ দলের কোনোটিই প্রাথমিক বাছাইয়ে টেকেনি
নোয়াখালীতে খালের উপরের শতাধিক অবৈধ বাঁধ ও স্থাপনা উচ্ছেদ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা