আজ সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:১৬

১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে ৬ ডিসেম্বর পাক-হানাদার বাহিনীকে হটিয়ে সুনামগঞ্জকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করে উল্লাসে মেতে উঠেন মুক্তিযোদ্ধা-জনতা। মানুষ নেমে আসেন রাস্তায়। পাক-হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়। জয়বাংলা স্লোগানে সেদিন মুখর হয় সুনামগঞ্জ শহর।

৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

তার মধ্যে অন্যতম হল সদর উপজেলার ডলুরায় ৪৮ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভোর থেকে সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর মোতালেবের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীরা হানাদার বাহিনী ও রাজাকার-আলবদরদের ওপর হামলা চালালে সেদিন পালিয়ে যায় পাকিস্তানিরা।

১৯৭১ সালে সুনামগঞ্জ শহরতলির ডলুরা ও নলুয়া গ্রামে রাজাকারদের সহায়তায় কয়েকশ মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যারাকের ভেতর হামলা চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালায়।

এছাড়া দোয়ারাবাজার, জগন্নাথপুর, ছাতক, সদর উপজেলাসহ জেলার সব জায়গায় পাকিস্তানিরা বর্বর হামলা চালায়। এই শহীদদের স্মরণে সেখানে স্মৃতিফলক নির্মাণ করেন মুক্তিযোদ্ধারা।

যা এখন পিটিআই (প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট) বধ্যভূমি নামে পরিচিত। তাদের স্মৃতি আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে সেখানে স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা হয়েছে।

এছাড়া সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বেরিগাঁও ৫ নম্বর সেক্টর ছিল ভারতের বালাট সাব সেক্টরের অধীনে। এখানে ৭১ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর সম্মুখ সমরে ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। জেলার অন্যতম যুদ্ধ ছিল এটি। এ যুদ্ধে অনেক পাকবাহিনীর সদস্য নিহত হয়। এ যুদ্ধে আটজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধাকে জীবিত ধরে নিয়ে যায় পাক হানাদার বাহিনী। দুজন মুক্তিযোদ্ধা পালিয়ে এলেও ২৪ জনকে মেরে ফেলে পাকবাহিনী। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নলুয়া গ্রামে গণকবর দেয় পাকিস্তানিরা। বাকিদের ধরে নিয়ে হানাদার বাহিনীর সদস্যরা সুনামগঞ্জের আহসানমারা ফেরীঘাটে নিয়ে গুলি করে নদীতে ফেলে দেয়।

এলাকার মুক্তিকামী মানুষ পরে নদী থেকে নিহত মুক্তিযোদ্ধাদের লাশ উদ্ধার করে এনে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার উজানীগাঁও গ্রামে সমাহিত করেন।

সুনামগঞ্জ শহরের পিটিআই ও বেরিগাঁও স্কুলে চলে হানাদার বাহিনীর ভয়াবহ বর্বরতা। পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা এখানে দিনের পর দিন অমানসিক নির্যাতন চালাতো।

এই জায়গার নাম ছিল লালঘর টর্চার সেল। এখানে হানাদাররা হত্যা করে গণকবর দেয় শতশত বীর মুক্তিযোদ্ধা, নারী ও শিশুদের।

(ঢাকাটাইমস/৬ডিসেম্বর/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :