জন্মদিনে ফিরে দেখা

মোহাম্মদ ইউসুফ থেকে দিলীপ কুমার, নেপথ্যে কী?

বিনোদন ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১১ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:০৭| আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:১৯
অ- অ+

ভারতীয় চলচ্চিত্রের ‘ট্রাজেডি কিং’ বলা হয় অভিনেতা দিলীপ কুমারকে। আজ সেই প্রয়াত কিংবদন্তির জন্মদিন। ১৯২২ সালের ১১ ডিসেম্বর তার জন্ম হয়েছিল ব্রিটিশ ভারতে, বর্তমানে যেটি পাকিস্তানের পেশোয়ার। দিলীপ কুমারকে ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বলিউডের অন্যতম বড় মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চনও একটি ব্লগে তাকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে বেছে নিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন।

১৯৪৪ সালে ‘জোয়ার ভাটা’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রেখেছিলেন দিলীপ কুমার। এরপর আর পেছনে তাকাননি। ৬০ বছরের বেশি সময়ের ক্যারিয়ার তার। অভিনয়ও করেছেন ৬০টির বেশি ছবিতে। রোমান্টিক, বেপরোয়া বা হঠকারী, চালবাজ, হাস্যরসাত্মক- সব ধরনের চরিত্রেই তাকে পাওয়া গেছে। দিলীপ কুমার সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন অভিনেত্রী বৈজয়ন্তীমালার সঙ্গে। একসঙ্গে তারা সাতটি ছবি প্রযোজনাও করেন।

অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারত সরকার ১৯৯১ সালে ‘পদ্মভূষণ’ পুরস্কারে সম্মানিত করেন দিলীপ কুমারকে। ১৯৯৪ সালে পান চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার। সে সময় রাজ্যসভায় তাকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের সদস্যও মনোনীত করা হয়। দিলীপ কুমারই ১৯৫৪ সালে ফিল্মফেয়ারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার গ্রহণ করা প্রথম অভিনেতা। এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশিবার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পাওয়ার ইতিহাস তার ঝুলিতে। মোট আটটি বিভাগে পুরস্কার জিতেছেন দিলীপ কুমার।

মোহাম্মদ ইউসুফ যেভাবে হয়েছিলেন দিলীপ কুমার

হিন্দি সিনেমার জগতে এই অভিনেতা দিলীপ কুমার নামে পরিচিত হলেও তার প্রকৃত নাম মুহাম্মদ ইউসুফ খান। তাহলে কীভাবে তিনি দিলীপ কুমার হলেন? ধর্ম পাল্টে? একেবারেই নয়। তিনি মুসলমান ধর্মের অনুসারী। ব্রিটিশ ভারতের পেশোয়ারে সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্ম হয়েছিল দিলীপ কুমারের। তখন তার নাম রাখা হয় মুহাম্মদ ইউসুফ খান।

অভিনেতার বাবা লালা গোলাম সারওয়ার একজন ফলের ব্যবসায়ী ছিলেন যিনি পেশোয়ার ও দেওলালীর মধ্যে ফলের বাগানের মালিক ছিলেন। তার মায়ের নাম আয়েশা বেগম। তিনি নাসিকের (মহারাষ্ট্র) কাছাকাছি মর্যাদাপূর্ণ দেওলিয়ার বার্নস স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু করেন।

১৯৩০ সালে শেষ সময়ে ১২ সদস্যের পরিবার নিয়ে মুম্বাইয়ে পাড়ি জমান দিলীপ কুমার। ১৯৪০ সালে অভিনেতা তাদের পুনের বাড়ি ছাড়েন, যেখানে তিনি একজন ক্যান্টিন মালিক এবং একজন শুষ্ক ফল সরবরাহকারী হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন।

১৯৪৩ সালে ‘বম্বে টকিজ’-এর মালিকানাধীন অভিনেত্রী দেবিকা রানী ও তার স্বামী হিমাংশু রাই পুনের অন্ধ সামরিক ক্যান্টিনে দিলীপ কুমারকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। পরের বছর ১৯৪৪ সালে ‘জোয়ার ভাটা’ চলচ্চিত্রটির জন্য দিলীপকে প্রধান চরিত্রে অন্তর্ভুক্ত করেন দেবিকা রানী ও হিমাংশু রাই। তার প্রকৃত নাম মুহাম্মদ ইউসুফ খান হলেও হিন্দি লেখক ভগবতি চরণ বর্মা পরবর্তীতে তার পর্দার নাম দেন দিলীপ কুমার। সেই থেকে তিনি এই নামেই ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পরিচিত।

কিংবদন্তি এই অভিনেতা চলতি বছরের ৭ জুলাই না ফেরার দেশে চলে যান। এদিন সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মুম্বাইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দিলীপ কুমার। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছিলেন। মৃত্যুশয্যায় তার পাশে ছিলেন স্ত্রী সায়রা বানু।

ঢাকাটাইমস/১১ডিসেম্বর/এএইচ

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পাবনায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ: মোটরসাইকেল ও অফিস ভাঙচুর, হাসপাতালে ভর্তি ৫
বিএনপি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চায়: আমিনুল হক 
অভ্যুত্থানের পর সরকারের কর্তব্য ছিল শিক্ষাখাতের সংস্কারে মনোযোগ দেওয়া: সাকি
৫ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা