রাজশাহীতে পানির দাম বাড়লো তিন গুণ

রাজশাহী ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৯:০১
অ- অ+

চলতি বছরের শুরুতেই তিন গুণ পানির দাম বাড়নোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল রাজশাহী ওয়াসা। সেই সিদ্ধান্ত অনুযারী মঙ্গলবার থেকে আবাসিক ও বাণিজ্যিক উভয় স্থানেই পানির নির্ধারিত মূল্য কার্যকর করা হলো।

রাজশাহী ওয়াসা কর্তৃপক্ষ জানায়, আগের চাইতে পানির দাম তিন গুণ বাড়ানো হলেও তা উৎপাদন ব্যয়ের চেয়ে অনেক কম। বর্তমানে এক হাজার লিটার পানি উৎপাদনে তাদের খরচ হয় আট টাকা ৯০ পয়সা। আর তিন গুণ বাড়ানোর পরও আবাসিক এলাকার গ্রাহকদের পরিশোধ করতে হবে ছয় টাকা ৮১ পয়সা।

অন্যদিকে বাণিজ্যিকভাবে এক হাজার লিটার পানি ব্যবহারের জন্য দিতে হবে ১৩ টাকা ৬২ পয়সা। যেকোনো প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য এই দাম বেশি নয়। এর আগে রাজশাহীতে আবাসিক সংযোগে প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম ধরা হতো দুই টাকা ২৭ পয়সা। এছাড়া বাণিজ্যিকে ছিল চার টাকা ৫৪ পয়সা।

সর্বশেষ ২০১৪ সালে পানির মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছিল। ২০১৪ সালে যে পানির মূল্য বৃদ্ধি হয়েছিল তাও কয়েক দফায় বিভিন্ন পর্যায়ে আলাপ-আলোচনার প্রেক্ষিতেই তা নির্ধারিত হয়েছিল।

এরপর বিগত ৭ বছরে পানির মূল্য আর বৃদ্ধি হয়নি। সাত বছর পর উৎপাদন খরচ ও আনুসাঙ্গিক ব্যয় সঙ্কুলানের কথা বিবেচনায় রেখে পুনরায় পানির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এসব রাজশাহী ওয়াসা বোর্ড ও সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়েই নির্ধারিত হয়েছে।

এছাড়াও ভবিষ্যতে রাজশাহীতে ওয়াসার যে বড় বড় প্রকল্প রয়েছে তার ব্যয় নির্বাহী করতে গিয়েও অর্থের প্রয়োজন হবে। এ সকল বিষয় বিবেচনায় রেখে উৎপাদন খরচের সঙ্গে সমন্বয় করেই পানির মূল্য বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ।

ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) পানি সরবরাহ শাখাকে আলাদা করে ২০১০ সালের ১ আগস্ট প্রতিষ্ঠা হয় রাজশাহী ওয়াসা। এরপর ২০১১ সালের ১০ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়াসার কার্যক্রম চালু হয়। তখন মহানগরীর ৩০ ওয়ার্ডের ১০৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় ৫৬টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করেছিল ওয়াসা।

বর্তমানে ওয়াসা জনসংখ্যা ভিত্তিক পানির প্রাপ্যতা (কাভারেজ) ৫২ শতাংশ থেকে ৮৪ শতাংশে উন্নীত করেছে। পানির কাভারেজ বাড়াতে পানি উৎপাদক নলকূপের সংখ্যা ৫৬টি থেকে ১১০টি করা হয়েছে। সঙ্গে পানির পাইপ লাইন ৫৫০ কিলোমিটার থেকে ৭১২ কিলোমিটারে উন্নীত করা হয়েছে। বর্তমানে রাজশাহী ওয়াসা প্রতিষ্ঠানটি দৈনিক ১৩ দশমিক ৫ কোটি লিটার পানির চাহিদার বিপরীতে দৈনিক ৯ দশমিক ৯ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করছে। উৎপাদিত পানির ৯০ শতাংশ ভূ-গর্ভস্থ পানি।

এদিকে জানতে চাইলে রাজশাহীর ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকীর হোসেন বলেন, ওয়াসার আয়ের একমাত্র উৎস হচ্ছে পানির বিল। অথচ, বাংলাদেশ সরকার এই প্রতিষ্ঠানটিকে জনসেবায় বছরের পর বছর লোকসান গুনে গুনেই চালিয়ে যাচ্ছে। সময়ের সাথে সাথে ওয়াসা তার সেবার পরিধি বাড়িয়েছে। কিন্তু সবকিছুরই দাম বাড়লেও বাড়েনি সেই তুলনায় পানির মূল্য। তাই সময় ও উৎপাদন খরচের সাথে সঙ্গতি রেখেই পানির নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

জাকীর হোসেন বলেন, পানির মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে চলতি বছরের শুরুতেই একটি ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

এ নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু পানির মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে কেউ কোনো প্রকার আপত্তি জানায়নি। এমনকি কোনো প্রকার মানববন্ধন বা আন্দোলনও হয়নি। গ্রাহক ও প্রতিষ্ঠানের এসব সার্বিক দিক বিবেচনা করেই পানির মূল্য বাড়ানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১ফেব্রুয়ারি/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
কাকরাইল মোড়ে বাসের পর বাসে আসছেন জবি শিক্ষার্থীরা, চলছে অবস্থান
ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব দিতে নগরভবনের ভেতরে অবস্থান নিয়েছে হাজারো নগরবাসী
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উচ্ছেদ অভিযান, গুঁড়িয়ে দিচ্ছে অবৈধ দোকানপাট
ময়মনসিংহ-১১ আসনের সাবেক এমপি কাজিম উদ্দিন গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা