বায়ুদূষণ: অবৈধ ইটভাটা বন্ধসহ ১৫ সুপারিশ

বায়ুদূষণ রোধ করতে অবৈধ ইটভাটা বন্ধসহ ১৫ দফা সুপারিশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এরমধ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র বা ক্যাপসের ৬৪ জেলার বায়ুমান সমীক্ষা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সুপারিশের কথা বলা হয়৷
জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবাদ সম্মেলনে সমীক্ষার ফল প্রকাশ করে ক্যাপস। প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন গবেষক দলের প্রধান ও স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার
এতে বলা হয় সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ হওয়া এলাকা গাজীপুর জেলা। আর কম বায়ুদূষণ প্রবণ এলাকা মাদারীপুর।
এসময় আয়োজকদের পক্ষ থেকে বায়ুদূষণ রোধে ১৫ দফা সুপারিশ করা হয়। সেগুলো হলো-
১. শুষ্ক মৌসুমে সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে দূষিত শহরগুলোতে প্রতিদিন দুই থেকে তিন ঘণ্টা পরপর পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করা।
২. নির্মাণকাজের সময় নির্মাণ স্থান ঘেরাও দিয়ে রাখা ও নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনের সময় ঢেকে নেয়ার ব্যবস্থা করা।
৩. রাস্তায় ধুলা সংগ্রহের জন্য সাকশন ট্রাকের ব্যবহার করা।
৪. অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বিকল্প ইটের প্রচলন বাড়ানো।
৫. ব্যক্তিগত গাড়ি এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে প্রয়োজনে নম্বর প্লেট অনুযায়ী জোড়-বিজোড় পদ্ধতিতে গাড়ি চলাচলের প্রচলন করা।
৬. সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রচুর পরিমাণ গাছ লাগাতে হবে এবং ছাদ বাগান করার জন্য সবাইকে উৎসাহ দিতে হবে।
৭. আলাদা সাইকেল লেনের ব্যবস্থা করা।
৮. দূষিত শহরগুলোর আশপাশে জলাধার সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা।
৯. আগুনে পোড়ানো ইটের বিকল্প হিসেবে স্যান্ড বক্লের ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বাড়াতে হবে।
১০. সিটি গভর্ন্যান্সের প্রচলনের মাধ্যমে উন্নয়নমূলক কার্যকলাপের সমন্বয় সাধন করা।
১১. নির্মল বায়ু আইন-২০১৯ যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়ন করা।
১২. পরিবেশ সংরক্ষণ ও সচেতনতা তৈরির জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে। নিয়মিত বায়ু পর্যবেক্ষণ স্টেশনের (ক্যামস) ব্যাপ্তি বাড়িয়ে ঢাকা শহরের সব এলাকাকে এর আওতাধীন করতে হবে। এ ছাড়াও বায়ু দূষণের পূর্বাভাস দেয়ার প্রচলন করতে হবে।
১৩. গণপরিবহনসহ ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন করা।
১৪. সংবাদমাধ্যমে বায়ুদূষণ সম্পর্কে আরও বেশি তথ্যনির্ভর অনুষ্ঠান প্রচারের ব্যবস্থা করা।
১৫. পরিবেশ ক্যাডার সার্ভিস এবং পরিবেশ আদালত চালু ও কার্যকরের ব্যবস্থা করা।
সমীক্ষার ফল উপস্থাপনের সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কাজী সারওয়ার ইমতিয়াজ হাশমী, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক ডা. লেনিন চৌধুরী, প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রাশিদা বেগম প্রমুখ।
ঢাকাটাইমস/০৩ফেব্রুয়ারি/বিইউ/ইএস

মন্তব্য করুন