যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীর আত্মহত্যা: পরকীয়া প্রেমিক ধরা পড়লেও স্ত্রী লাপাত্তা

আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৫ মে ২০২২, ২১:১৩
অ- অ+

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক শেখ সোহেব সাজ্জাদ তার স্ত্রীর অনৈতিক সম্পর্কের কারণে আত্মহত্যা করেছেন। এমন অভিযোগে ক্যান্টনমেন্ট থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার একটি মামলা হয়েছে। এই মামলায় স্ত্রীর কথিত প্রেমিক কাজী ফাহাদকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। তবে প্রধান অভিযুক্ত স্ত্রী সাবরিনা শারমিন পলাতাক। তাকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

গত ৩০ এপ্রিল রাজধানীর বনানী ডিওএইচএসের শ্বশুরবাড়িতে আত্মহত্যা করেন সাজ্জাদ। এ ঘটনায় করা মামলার দুই নম্বর আসামি কাজী ফাহাদকে শুক্রবার ওয়ারী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশ। মামলাটির তদন্ত করছেন ক্যান্টমেন্ট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শ্যামল আহমেদ।

উপপরিদর্শক (এসআই) শ্যামল আহমেদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, মামলার প্রধান অভিযুক্ত সাবরিনা শারমিনকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারিনি। তবে তার কথিত প্রেমিক কাজী ফাহাদকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছি। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। আমরা সাবরিনাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।

সাজ্জাদের পরিবারের একটি সূত্র জানায়, স্ত্রী সাবরিনা শারমিনের অনৈতিক সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় স্বামী থেকে শত্রুতে পরিণত হন শেখ সোহেব সাজ্জাদ। তাকে প্রতিনিয়ত তাকে মানসিক নির্যাতন করতেন সাবরিনা ও তার প্রেমিক কাজী ফাহাদ। নির্যাতন সহইতে না পেরে সাজ্জাদ আত্মননের পথ বেছে নেন।

মামলার বাদী ও সাজ্জাদের ভাই শেখ সোহেল সায়াদ আহমেদ গণমাধ্যকর্মীদের বলেছেন, কাজী ফাহাদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়ান সাবরিনা। এতে বাধা দেওয়ায় ফাহাদ ও সাবরিনা তার ভাইকে প্রতিনিয়ত মানসিক নির্যাতন করতেন। তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছেন তারা। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত-পূর্বক সাবরিনা ও ফাহাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।

ক্যান্টনমেন্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তাসলিমা আক্তার ঢাকাটাইমসকে বলেন, দুই নম্বর আসামি কাজী ফাহাদকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছিলাম শনিবার সকালে। তখন তাকে পাঁচ দিনের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। এছাড়াও তাকে একদিন জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন। নিয়মানুযায়ী কারাগারের প্রধান ফটকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। এখনও ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাইনি। ওই প্রতিবেদন হাতে পেলে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে পারাে।

মৃত শেখ সোহেব সাজ্জাদ ঢাকার ওয়ারী থানার ওয়ারস্ট্রিট রোডের শেখ তৌফিক আহমেদের ছেলে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।

জানা গেছে, বনানীর ডিওএইচএসের শাখাওয়াত হোসেনের মেয়ে সাবরিনা শারমিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতেন। সেখানে দেশে আসা সাজ্জাদ ও সাবরিনার পরিচয় হয়। তারা ২০১৭ সালে বিয়ে করেন। ২০১৮ সালের মে মাসে সাবরিনা একা দেশে ফিরে শ্বশুরবাড়ি ওয়ারীতে বসবাস শুরু করেন। ওই বাড়ির পাশের বাসার ভাড়াটে কাজী ফাহাদের সঙ্গে পরিচয় হয় সাবরিনার। অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা। সাজ্জাদ ও তার পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জেনে গেলে মনোমালিন্য শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। স্ত্রীকে ফাহাদের কাছ থেকে ফেরাতে না পেরে গত ১৬ মার্চ সাজ্জাদ দেশে ফেরেন।

এরপর বনানী ডিওএইচএসের মসজিদ রোডে বাবার বাসায় চলে যান সাবরিনা। সেখানেই স্ত্রীকে নিয়ে সাজ্জাদ বসবাস করছিলেন। এ সময় কৌশলে স্বামীর আমেরিকান পাসপোর্ট ও মোবাইল ফোন নিয়ে নানাভাবে মানসিক নির্যাতন করতেন সাবরিনা। পরবর্তীতে সেগুলো স্ত্রীর কাছ থেকে ফেরত পাননি সাজ্জাদ। এসব ফেরত না দিয়ে ১৫ এপ্রিল সাবরিনা বাসা থেকে চলে যান, আর বাসায় ফেরেননি। সাজ্জাদ ও তার শ্বশুর শাখাওয়াত সাবরিনা এবং কাজী ফাহাদের কাছে ফোন করে পাসপোর্ট ও ফোন ফেরত চান। কিন্তু তারা সেসব না দিয়ে সাজ্জাদের ওপর নানা ধরনের চাপ সৃষ্টি করেন। পরে ৩০ এপ্রিল শ্বশুরের বাসায় সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে সাবরিনা ও ফাহাদের বিরুদ্ধে ১ মে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৪ মে/এএ/ইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ বিমান হামলায় নিহত ৯৫, মোট মৃত্যু ছাড়াল ৫৮ হাজার
লন্ডনে উড্ডয়নের পরই বিমান বিধ্বস্ত, বাতিল সব ফ্লাইট
পল্লীবন্ধু এরশাদ চিরকাল মানুষের হৃদয়ে কণক প্রদীপ হয়ে জ্বলবেন
চাঁদা না দেওয়ায় পল্লবীতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা, গুলিবর্ষণ: গ্রেপ্তার ৩
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা