অবৈধ বাংলাদেশিদের বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে ভারত

ভারতে বাংলাদেশি নাগরিকদের অবৈধ থাকার বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশিরা চাকরি, পাসপোর্ট পেতে ভুয়া পরিচয়পত্র দিয়ে প্রাপ্ত নথি ব্যবহার করছেন।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশকে অবৈধ বাংলাদেশিদের বিষয়ে কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদের বলা হয়েছে, অবৈধ অভিবাসীরা পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে প্রবেশ করে দেশ জুড়ে বসতি স্থাপন করেছে। তাদের বিরুদ্ধে যেন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
০৬ নভেম্বর (রবিবার) এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে পশ্চিমবঙ্গে স্থানীয় লোকজন এবং এজেন্টদের গভীরভাবে সংযুক্ত একটি নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানানো হয়েছিল। তারা বিদেশী নাগরিকদের ভারতে প্রবেশ, জাল ঠিকানা, পরিচয় ইত্যাদির সাহায্যে আসল নথি পেতে সহায়তা করে।
প্রাথমিকভাবে আধার কার্ড প্রাপ্ত অবৈধ অভিবাসীরা কর্মসংস্থানের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যান এবং সেখানেই বসতি স্থাপন করেন। কেউ কেউ ঠিকানা বা পরিচয়ের অন্যান্য প্রমাণ যেমন ব্যাঙ্কের পাসবুক, ভোটার পরিচয়পত্র এবং প্যান কার্ডও পেয়ে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা দ্য হিন্দুকে বলেছেন, ‘এই নথিগুলি তাদের একটি প্রদত্ত ঠিকানায় জাল পরিচয় প্রতিষ্ঠা করতে এবং চাকরি পেতে সহায়তা করে। বিদেশ ভ্রমণের পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য অনেকেই এগুলো ব্যবহার করছেন। যেহেতু পাসপোর্টসহ নথিগুলি উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রদান করা হয় তাই অভিযুক্ত ব্যক্তিরা সন্দেহের বাইরেই থাকেন এবং ঝামলো ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারেন।’
কেন্দ্রের সতর্কতায় বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের কিছু স্থানীয়রা জালিয়াতি করে প্রাপ্ত ভারতীয় পরিচয় নথি, বিশেষ করে আধার কার্ড প্রদান করার এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে।
ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দেওয়া বিদেশীরা ভারত জুড়ে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে নথিগুলি ব্যবহার করছে। অভিযুক্ত বিদেশী নাগরিকরা তামিলনাড়ু, কেরালা এবং কর্ণাটকসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বসতিও স্থাপন করেছেন।
সতর্কতা জারি হওয়ার কয়েকদিন পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গুজরাটের মেহসানা এবং আনন্দের জেলা কালেক্টরদের পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশের হিন্দু, শিখ, পার্সি, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ এবং জৈন সম্প্রদায়ের সদস্যদের নাগরিকত্বের শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে।
কয়েক বছর আগে তামিলনাড়ু পুলিশ বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছিল। তারা পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে বিভিন্ন জেলায় বসতি স্থাপন করেছিল এবং কন্সট্রাকশন, হসপিটালিটি এবং টেক্সটাইল শিল্পে চাকরিও পেয়েছিল। কয়েকজনকে ফরেনার্স অ্যাক্টের ধারায় গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়। এই ধরনের সন্দেহভাজনদের বেশিরভাগই তিরুপুর, চেঙ্গলপাট্টু, ইরোদ, কুদ্দালোর এবং কাঞ্চিপুরম জেলায় বসতি স্থাপন করেছে।
মহামারির লকডাউনের সময় যখন কয়েক লাখ অভিবাসী শ্রমিক তাদের নিজ নিজ রাজ্যে রওনা হয়েছিল, তখন বাংলাদেশি শ্রমিকরা সেখানেই থেকে যান। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এই সময়কালে মাদক ব্যবসার মতো কার্যকলাপেও লিপ্ত হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/৭নভেম্বর/এসএটি)

মন্তব্য করুন