ইউক্রেনকে ট্যাংক দিতে ইউরোপ-আমেরিকার মতানৈক্য, দ্রুত সিদ্ধান্ত চান জেলেনস্কি
ইউক্রেনকে ট্যাংক প্রদানের বিষয়ে একমত হতে পারেনি পশ্চিমা মিত্ররা। কিয়েভে সম্ভাব্য বসন্তকালীন আক্রমণের জন্য জার্মানির কাছে লিওপার্ড ভারী ট্যাংক চেয়েছিল ইউক্রেন। কিন্তু দেশটির আশাকে ম্লান করে দিয়েছে পশ্চিমা মিত্ররা। স্বয়ং যুক্তরাষ্ট্রই কিয়েভকে এ ধরনের অভিযান থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শুক্রবার বলেছেন, পশ্চিমারা ইউক্রেনকে ভারী ট্যাঙ্ক দেওয়া ছাড়া ‘কোন বিকল্প নেই’।
জার্মানির রামস্টেইন বিমান ঘাঁটিতে মিত্রদের একটি বৈঠকের পর শীর্ষ মার্কিন জেনারেল বলেন, এই বছর রাশিয়ার আক্রমণকারী বাহিনীকে দেশ থেকে তাড়ানো ইউক্রেনের পক্ষে খুব কঠিন হবে।
রামস্টেইনের বৈঠকে জার্মানি ইউক্রেনে লিউপার্ড-২ ট্যাঙ্ক পাঠাতে রাজি হবে বা অন্য দেশগুলির কাছে এটি করার অনুমতি দেবে কিনা তা নিয়ে প্রাধান্য পেয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত শুক্রবারের বৈঠকে ট্যাঙ্ক প্রদানের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয়নি বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
যদিও বৈঠকে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং অন্যান্য ট্যাঙ্ক মডেলসহ প্রচুর পরিমাণে অন্যান্য অস্ত্রের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ওলেস্কি রেজনিকভ বৈঠকের পর বলেছেন, ‘লিউপার্ডস ২ নিয়ে আমাদের খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। এটি চালিয়ে যেতে হবে।’
ওয়াশিংটনে একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ইউক্রেনকে এখনও আব্রামস ট্যাঙ্ক না দেওয়ার সিদ্ধান্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনড় ছিল।
ইউএস জেনারেল মার্ক মিলি এবং জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান রামস্টেইনের সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘একটি সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে, এখনও মনে করি যে এই বছরের জন্য রাশিয়া-অধিকৃত ইউক্রেনের প্রতি ইঞ্চি অংশ থেকে রাশিয়ান বাহিনীকে সামরিকভাবে বিতাড়িত করা খুব কঠিন হবে।’
শুক্রবারের বৈঠকের পর ইউক্রেন বেশ খানিকটা হতাশই হয়েছে। কেননা গত ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া যুদ্ধটি কোন সমাধান ছাড়াই ঝুলে আছে। রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি বিশেষভাবে আরও যুদ্ধ ট্যাঙ্কের মিত্রদের কাছে অনুরোধ করেছিলেন।
চলতি সপ্তাহে দিনিপ্রোর একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৪৪ জনের মৃত্যু এবং নিখোঁজ হওয়া আরও ২০ জনের কথা জানিয়েছে ইউক্রেন। সেন্ট পিটার্সবার্গ এবং মস্কোতে রাশিয়ানরা নিহতদের স্মৃতিতে ফুল দিচ্ছেন।
জেলেনস্কি একটি ভিডিও বক্তৃতায় মিত্রদের অস্ত্র সরবরাহের ‘গতি বাড়ানোর’ আহ্বান জানিয়েছেন এবং প্রাথমিক চাহিদা জার্মানির লিওপার্ড ট্যাঙ্ক সরবরাহের ওপর জোর দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন আমরা এটাকে আরও স্পষ্ট করে দিচ্ছি যে, এই ট্যাঙ্কের কোন বিকল্প নেই, ট্যাঙ্ক সরবরাহ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
কন্টাক্ট গ্রুপের বৈঠকের আগে ইউক্রেন প্রত্যাশা করেছিল, অস্টিনের নেতৃত্বে অস্ত্র সরবরাহকারীদের একটি গোষ্ঠী বিশেষ করে জার্মানি অন্তত সম্মত হবে যে, অন্যান্য দেশগুলো যারা লিওপার্ড ট্যাঙ্ক পরিচালনা করছে তাদের এই ট্যাঙ্ক কিয়েভের সেনাবাহিনীতে স্থানান্তর করার অনুমতি দেবে।
ব্রিটেন তার চ্যালেঞ্জার ২ ট্যাঙ্কের মধ্যে ১৪টি ইউক্রেনে পাঠাতে সম্মত হওয়ায় কারণে জার্মানির এই নিস্পৃহতা কি-না তা অস্পষ্টই রয়েছে। জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘লিওপার্ড ট্যাঙ্কের বিষয়ে কখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং সিদ্ধান্ত কী হবে তা আমরা এখনও বলতে পারি না।’
জার্মানি কিয়েভকে সাহায্য করার জন্য যথেষ্ট কাজ করছে না এমন সমালোচনার জবাবে অস্টিন জার্মানির পক্ষে কথা বলেন।
(ঢাকাটাইমস/২১জানুয়ারি/এসএটি)