চিনির বদলে কোন কোন প্রাকৃতিক খাবার খাবেন
![](/assets/news_photos/2023/01/23/image-295986.jpg)
মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য চিনি মোটেই উপকারী কোন খাবার নয়। চিনি একটি প্রক্রিয়াজাতকরণ খাবার। অতিরিক্ত চিনি খাওয়া ডেকে আনতে পারে বিভিন্ন রোগব্যাধি। স্বাস্থ্য সচেতনতার চিকিৎসক-পুষ্টিবিজ্ঞানীরা সাদা চিনি বা চিনিকে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে বলেছেন। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সাদা চিনি খাওয়া নিষেধ। সাদা চিনি উচ্চ সরল শর্করা ও উচ্চ ক্যালরিযুক্ত হওয়ায় রক্তে শর্করার পাশাপাশি শরীরের ওজন বাড়িয়ে দেয়। বাড়তি চিনি রক্তে ও যকৃতে চর্বি বা ট্রাইগিস্নাসারাইড হিসেবে জমা হতে থাকে। ফ্যাটি লিভার, হৃদ্রোগসহ নানা রোগের ঝুঁকি বাড়ায় সাদা চিনি। কার্যক্ষেত্রে চিনি থেকে দূরে থাকা অনেকের জন্য সহজসাধ্য হয় না ৷ বিশেষ যারা মিষ্টি খেতে খুব পছন্দ করেন। উৎসবে রাবড়ি বা রসমালাই থেকে দূরে থাকার প্রচেষ্টাটা আপনাকেই করতে হবে ৷ নানা কারণে চিনি খাওয়া ছেড়ে দিচ্ছেন অনেকে। চিনির বিকল্প প্রাকৃতিক খাবার আছে যেগুলো হতে পারে চিনির বিকল্প।
মধু
প্রাকৃতিক এনার্জি বুস্টার হিসেবে মধু আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। চিনির বিকল্প হিসেবে মধুর কোনো জুড়ি নেই। মধুতে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম আর পটাশিয়ামের মতো মিনারেল থাকে, প্রতিটিরই অনেক গুণ আছে৷ পুষ্টিগুণের দিক থেকেও এটি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য৷ তাই চিনির বিকল্প হিসেবে আপনার পানীয়ে মধু ব্যবহার করতেই পারেন৷
খেজুর
খেজুর অত্যন্ত সুস্বাদু ও বেশ পরিচিত একটি ফল। যা ফ্রুকটোজ এবং গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ। এটা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। খেজুর ফলকে চিনির বিকল্প হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎস। তাই খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়। আছে প্রচুর ভিটামিন বি। যা ভিটামিন বিসিক্স মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। খেজুরে পটাশিয়াম, কপার, আইরন, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি ৬ থাকে। এটি চিনির চাইতেও মিষ্টি স্বাদের হয়। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে খেজুরের জুড়ি নেই।
তাজা ফল
বেদানা, আপেল, আঙুর, কিশমিশ, কলার মতো ফলগুলো এমনিতেই মিষ্টি৷ খুব মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে করলে ফল খেতে পারেন৷ ফলের রস নয়, গোটা ফল চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যেস তৈরি করুন৷ এর ফলে প্রয়োজনীয় ফাইবারটাও আপনার শরীরে ঢুকবে৷
গুড়
চিনির চেয়ে গুড় অনেকাংশেই কম প্রসেসড৷ নতুন গুড়ের মিষ্টি খাওয়াও অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর ৷ চিনির রসে ডোবানো ভাজা মিষ্টির চেয়ে গুড়ের সন্দেশ বা রসগোল্লা নিশ্চিতভাবেই অনেক ভালো অপশন৷ গুড় থেকে তৈরি বাদামি চিনিও খেতে পারেন ৷
স্টেভিয়া
স্টেভিয়া এক ধরনের ভেষজ পাতা। গবেষণায় দেখা গেছে, এর অনেকগুলো পাতা একসঙ্গে নিলে এটি খেতে চিনির চাইতেও মিষ্টি লাগে। এটি দাঁতের ক্ষয়রোগ রোধ করে। স্কিন কেয়ার হিসেবে কাজ করে, তাই ত্বকের কোমলতা এবং লাবণ্য বৃদ্ধি করে। স্বাদ বৃদ্ধিকারক হিসেবেও স্টেভিয়ার অনেক চাহিদা রয়েছে। চা, কফি, মিষ্টি, দই, বেকারি ফুড, আইসক্রিম, কোমল পানীয়সহ এ জাতীয় নানা খাদ্যপণ্য তৈরিতে স্টেভিয়া ব্যবহার করা যায়। এর ভেষজ উপাদান মানুষের দেহে কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না।
কোকোনাট সুগার
নারিকেল গাছের ফুলের কুঁড়ি থেকে কোকোনাট সুগার তৈরি করা হয়। এটি চিনি বিকল্প হিসেবে খাওয়া যেতে পারে। কোকোনাট সুগারে ফ্রুক্টোজের পরিমাণ কম এবং এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও কম। এটি খাবার তৈরিতেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
ডিটক্স ওয়াটার বা ফ্লেভারড ওয়াটার
অনেকে মিষ্টি খেতে খুব ভালোবাসেন এবং সারা দিনের যখন-তখন মিষ্টি কিছু খাওয়ার ইচ্ছে হয়, তাদের জন্য আদর্শ ডিটক্স ওয়াটার বা ফ্লেভারড ওয়াটার৷ এক বোতল পানিতে মিশিয়ে নিন আপনার পছন্দের ফল৷ স্ট্রবেরি, আঙুর, আপেল, তরমুজ, পুদিনা, লেবু যা খুশি মেশাতে পারেন৷ এক রাত ফ্রিজে রাখুন৷ পরদিন পানিটা ছেঁকে পান করুন৷ সারাদিনে অল্প অল্প করে চুমুক দিয়ে খেলে আপনার মিষ্টি খাওয়ার তীব্র ইচ্ছে নিশ্চিতভাবেই কমে যাবে ৷
জাইলিটল
জাইলিটল খেতে মিষ্টি হলেও এটি চিনি নয়। বিকল্প চিনি তৈরিতে জাইলিটল বা এ জাতীয় রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়। এতে চিনি প্রায় নেই বললেই চলে, ক্যালরিও খুব কম। ইরাইথ্রিটলও এ ধরনেরই একটি রাসায়নিক, যাতে ক্যালরি জিরো এবং চিনিও নয়, কিন্তু স্বাদে মিষ্টি। যারা মিষ্টি ছাড়তেই পারছেন না, তারা এগুলো দিয়ে মিষ্টান্ন দ্রব্য তৈরি করে মাঝেমধ্যে খেতে পারেন।
বাদাম
আমন্ড, কাজু, আখরোটের মতো বাদামের পাশাপাশি মিষ্টি কুমড়া, তিসি ইত্যাদির বীজ রাখুন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়৷ এগুলোর প্রভাবে আপনার পেট বেশিক্ষণ ভরে থাকবে৷ বাড়তি চিনির প্রয়োজন হবে না।
কলা
কলা একটি প্রাকৃতিক খাবার। কলা চিনির মতই মিষ্টি জাতীয় একটি ফল। অনেকেই দুধ ভাত আর চিনি মাখিয়ে খেতে পছন্দ করেন। সেক্ষেত্রে চিনির বিকল্প হিসেবে কলা যোগ করা যেতে পারে।
কাঠাল
বর্তমানে কাঠাল সারাবছরই পাওয়া যায়। চিনির বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন খাবারে কাঠালের কোষ ব্যবহার করা যায়। কাঠালের বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাবারও প্রস্তুত করা যায়। যেগুলোতে চিনির বদলে কাঠালের কোষ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
আখের রস
আখের রস প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি হওয়ায়, ডায়াবেটিস রোগীরা এটি এড়িয়ে চলেন। তবে জানেন কি আখের রসও কিন্তু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণায় জানা গেছে, আখের রসে থাকে আইসোম্যাল্টোজ নামক একটি উপাদান। যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে নেমে গেলে আখের রস খেলে উপকার মিলবে। হাইপোগ্লাইসিমিয়ায় আক্রান্ত রোগীর জন্যও এই রস উপকারী। তবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে আখের রস খাবেন না।
সংবাদটি শেয়ার করুন
ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
ফিচার এর সর্বশেষ
![](/cache-images/news_photos/2024/07/25/resize-90x60x0image-360180.jpg)
কিছু খাবারে বাড়ে বাতের ব্যথা, এই বর্ষায় কিন্তু সাবধান
![](/cache-images/news_photos/2024/07/25/resize-90x60x0image-360158.jpg)
ক্যানসারের যম কাকরোল! কমায় কোলেস্টেরল, বাড়ায় দৃষ্টিশক্তি
![](/cache-images/news_photos/2024/07/24/resize-90x60x0image-360081.jpg)
মরণব্যাধি ক্যানসার দূরে রাখে বেগুন! ওজনও কমায় তরতরিয়ে
![](/cache-images/news_photos/2024/07/18/resize-90x60x0image-359972.jpg)
ব্লাড প্রেসার লো? পাঁচ খাবার নিয়ম মতো খেলেই কেল্লাফতে
![](/cache-images/news_photos/2024/07/17/resize-90x60x0image-359892.jpg)
অকালে চুল পাকা ঠেকায় যেসব খাবার
![](/cache-images/news_photos/2024/07/17/resize-90x60x0image-359841.jpg)
ক্যানসার দূরে রাখে পেঁয়াজকলি! কমায় অ্যাজমার কষ্ট
![](/cache-images/news_photos/2024/07/16/resize-90x60x0image-359707.jpg)
শরীরের ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায়? এই নিয়মগুলো মানলেই কেল্লাফতে
![](/cache-images/news_photos/2024/07/15/resize-90x60x0image-359585.jpg)
ডায়াবেটিস বশে রাখে মুগ ডাল! লড়াই করে ক্যানসারের সঙ্গেও
![](/cache-images/news_photos/2024/07/14/resize-90x60x0image-359484.jpg)
টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে সতর্ক থাকার উপায়
![](/cache-images/news_photos/2024/07/14/resize-90x60x0image-359480.jpg)