রঙিন ফুলকপি চাষে সফল কৃষক আনছারুল

সাইফুল আলম তুহিন, ত্রিশাল (ময়মনসিংহ)
 | প্রকাশিত : ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:৫৬

ময়মনসিংহের ত্রিশালে রঙিন ফুলকপির পরীক্ষামূলক চাষে সফলতা পেয়েছেন উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বীররামপুর চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক আনছারুল হক।

সুষম সার ব্যবস্থাপনার আওতায় আধুনিক উচ্চ ফলনশীল জাত সম্প্রসারণ প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদিত পণ্য থেকে তিনি এই সফলতা পান।

নিজ বাড়ির আঙিনায় ২০ শতক জমির অধিকাংশে পরীক্ষামূলকভাবে এই রঙিন ফুলকপির চাষ করেন তিনি। এর আগে তিনি এ জমিতে প্রতিবছর নানা ধরনের সবজির চাষ করতেন। এবার প্রথমবারের মতো সেই জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে রঙিন ফুলকপির চাষ করে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। তার উৎপাদিত রঙিন ফুলকপিগুলোর মধ্যে রয়েছে কমলা ও বেগুনি রঙের ফুলকপি।

ত্রিশাল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ত্রিশালে আনছারুল হক প্রথম রঙিন ফুলকপির চাষ করেছেন। চীনে এ ফুলকপি সালাদ হিসেবে খাওয়া হয়। সাদা রঙের চেয়ে এ জাতের ফুলকপিতে পুষ্টিগুণও বেশি। দেখতে সুন্দর এ কপি অর্ধসিদ্ধ করেই খাওয়া যায়। অন্যান্য ফুলকপির মতোই কম খরচ ও স্বল্প পরিশ্রমে রঙিন কপি চাষ করা হয়। তবে শুধু জৈব সার ব্যবহার করেই এ কপির চাষাবাদ সম্ভব। দেশের হাট-বাজারেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

চলতি মৌসুমে কৃষক আনছারুল হক তার জমিতে বিভিন্ন রঙের ফুলকপি চাষ করেন। রঙিন ফুলকপির সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন সকাল-বিকাল তার ক্ষেতে ভিড় জমান উৎসুক জনতা। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ফুলকপি কিনছেন, কেউ বা পরামর্শ নিচ্ছেন। আবার অনেকেই রঙিন ফুলকপির সঙ্গে ছবি তুলছেন ও ভিডিও করছেন।

এ বছর রঙিন ফুলকপি চাষ করে লাভবান হয়েছেন আনছারুল হক। তার এমন সফলতা দেখে স্থানীয় তরুণসহ অনেকেই এ সবজি চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তার এমন সাফল্যে খুশি স্থানীয় কৃষি অফিসও।

এ বিষয়ে কৃষক আনছারুল হক বলেন, ‘উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া রহমানের পরামর্শে কৃষি অফিস থেকে নতুন জাতের রঙিন ফুলকপির ২০০০ চারা নেই। এরপর পরীক্ষামূলকভাবে বাড়ির পাশে মাত্র ২০ শতক জমিতে রঙিন ফুলকপির চাষ করি। জমিতে চারা রোপণের ৬০ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে তা পরিপক্ব হয়। বাজারে নেয়ার পর দামও প্রতি পিসে ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি পাচ্ছি। অথচ সচরাচর যে ফুলকপি চাষ করতাম তা পরিপক্ব হতে আরও ২০ থেকে ৩০ দিন বেশি সময় লাগতো। এখন সময় কম লাগাই কম খরচ ও শ্রমে বেশি লাভ পাচ্ছি। কৃষি অফিসের সহযোগিতা পেলে সামনের বছর থেকে আরও বেশি পরিমাণ জমিতে ফুলকপির চাষ করবো।’

মঠবাড়ী ইউনিয়নের তানভীর মাহতাজ এসেছিলেন রঙিন ফুলকপি দেখতে।

তিনি বলেন, ‘রঙিন ফুলকপির চাষ আমাদের ত্রিশালে হচ্ছে জানতে পেরে নিজ চোখে দেখতে এসেছি। কৃষক আনছারুল হকের কাছ থেকে রঙিন ফুলকপি চাষ সম্পর্কে জানলাম। আগামীতে আমিও এই ফুলকপি চাষ করব।’

ত্রিশাল পৌর বাজারে ফুলকপি কিনতে আসা সোহাগ ও ফরিদ জানান, এ ধরনের রঙিন ফুলকপি এর আগে কখনো দেখেননি। লোক মুখে শুনে ৪০ টাকা দরে ফুলকপি কিনেছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া রহমান বলেন, 'উপজেলায় এবারই প্রথম রঙিন ফুলকপি পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তখন কেউ আগ্রহী ছিলেন না। পরে মো. আনছারুল হক নামে এক কৃষক আগ্রহ প্রকাশ করলে তাকে কৃষি অফিস থেকে ২০০০ ফুলকপির চারা ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা দেয়া হয়। চলতি মৌসুমে পরীক্ষামূলক চাষে সফলতা পাওয়ায় অনেক কৃষক আগামী বছর বাণিজ্যিকভাবে এ কপি চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’

(ঢাকাটাইমস/৩১জানুয়ারি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :