দ্রুত ওজন কমানোর স্বাস্থ্যসম্মত উপায়

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:২০
অ- অ+

শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রায় সবার জন্যই কঠিন হয়ে পড়ে। ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে শরীরে নানা রকম জটিলতা দেখা দেয়। তাই ওজন কমাতে সঠিক ডায়েট প্ল্যান গ্রহণ করতে হবে। অনেকে কিটো ডায়েট করেন। কেউ আবার স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। অনেকে খাবার কম খেয়ে ব্যায়াম করে শরীরের মেদ কমান। তবে খাওয়াদাওয়া একেবারে বন্ধ করে কিংবা কঠোর ডায়েট করে নয়, ওজন কমাতে পারেন স্বাস্থ্যকর উপায়ে।

পুষ্টিবিদদের মতে, এক মাসে তিন কেজি কমানো স্বাস্থ্যসম্মত। অর্থাৎ হাতে যদি পাঁচ মাস সময় থাকে, তবে আট-দশ কেজি কমানো হবে লক্ষ্য। প্রত্যেক মেয়ের শারীরিক গঠন আলাদা। বিয়ের কনেদের নজর থাকে পেট, উরু ও নিতম্বের মেদ কমানোর দিকে। তাই এমন ব্যায়াম বাছতে হবে, যাতে কম সময়ে বেশি ফল পাওয়া যায়।

ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাথমিকভাবে ছ’-সাতটি ব্যায়াম বেছে নিতে হবে। স্কোয়াট, রোয়িং, হ্যামকার্ল, লঞ্জ। এই ব্যায়ামগুলো নিয়ম করে করলে অনেকটা ওজন ঝরানো সম্ভব হয়। পেটের অংশের মেদ কমানোর জন্য কোর এক্সারসাইজ় যেমন প্ল্যাঙ্ক, সাইড প্ল্যাঙ্ক, ব্রিজ করা যেতে পারে। তবে কেবল শরীরচর্চা করলেই হবে না, ব্যায়ামের পাশাপাশি জীবনযাপন এবং খাওয়াদাওয়াতেও বদল আনতে হবে ।

আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা জানান, দ্রুত ওজন কমানোর জন্য সবার আগে খাবারের তালিকা থেকে চিনি বাদ দেওয়ার দরকার। চিনির পরিবর্তে গুড়ের ব্যবহার করলে স্বাস্থ্যও সঠিক থাকে এবং ওজনও কমে।

ঠান্ডা পানির পরিবর্তে তালিকায় হালকা গরম পানি রাখা দরকার। গরম পানি শরীরে জমে থাকা মেদ গলিয়ে দিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া খাবারও দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে গরম পানি।

অনেকেই ফলের পরিবর্তে ফলের রস বেছে নেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমরা যখন ফলের রস খাচ্ছি তখন ফলে থাকা ফাইবার হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যখন ফল চিবিয়ে খাচ্ছি, তখন ফলের সমস্ত উপকারী উপাদান শরীর পেতে পারছে।

বেশি ক্যালোরির কার্বোহাইড্রেডযুক্ত খাবারের বদলে শস্য থেকে উৎপাদিত খাবার খাওয়া হচ্ছে ওজন কমানোর অন্যতম সহজ উপায়। অর্থাৎ সাদা আটা থেকে উৎপাদিত খাবার খাওয়া কমাতে হবে। আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। এটি আপনার ক্ষুধার মাত্রা কমাবে। কার্ব-ডায়েট করার সময় দেহশক্তির জন্য শর্করার বদলে আপনার শরীরের সঞ্চিত ফ্যাট ব্যবহার করবে।

রাতের খাবার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেরে ফেলতে হবে। ঘুমোনোর অন্তত আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা আগে খাবার খেয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন।

পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের জন্য খুবই জরুরি। প্রতিদিন অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য প্রয়োজন। রাত ১০টার আগে ঘুমিয়ে পড়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

নিয়মিত শরীরচর্চা করার পাশাপাশি দিনে অন্তত আধ ঘণ্টা জোরে হাঁটার অভ্যাসও করতে হবে। প্রতিদিন ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার পা হাঁটুন। এতে যেমন ওজন কমবে, তেমনই বহু অসুখও প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

ওজন কমানোর বড় দাওয়াই হচ্ছে সবুজ শাকসবজি। বেশি করে শাকসবজি আপনাকে স্বাস্থ্যকর থাকতে সাহায্য করে। সবুজ শাকসবজি পুষ্টিতে ভরপুর এবং কম ক্যালোরিযুক্ত হয়। কম ক্যালোরি, পুষ্টিগুণযুক্ত সবুজ শাকসবজির মাঝে অন্যতম হচ্ছে ব্রোকলি, ফুলকপি, শাক, টমেটো, কেল, ব্রাসেলস স্প্রাউটস, বাঁধাকপি, সুইস চারড, লেটুস ও শসা।

এক সঙ্গে ভারী খাবার না খেয়ে সারা দিনে অল্প অল্প করে পাঁচ থেকে ছ’বার খাওয়ার অভ্যাস করুন।

ওজন ঝরানোর প্রক্রিয়া শুরু করলে সব থেকে আগে বেশি করে পান পান করুন। না হলে কিন্তু সমস্যায় পরবেন। দিনে আট থেকে দশ গ্লাস করে পানি পান করতে হবে। ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাসে রাশ টানতে হবে।

মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় নানা পরীক্ষা-নীরিক্ষার মাধ্যমে ওজন কমানোর নতুন একটি পদ্ধতি নিয়ে এসেছেন। তারা বলছেন, দই-কালোজিরার মিশ্রণ নিয়মিত খেলে এক মাসে ১৫ কেজির মতো ওজন কমবে।

মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের প্রকাশ করা সমীক্ষা-রিপোর্ট অনুযায়ী, ৪৪ জন মেদযুক্ত মানুষের ওপর এই মিশ্রণের প্রভাব পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, প্রতিদিন যদি দই-কালোজিরার এই মিশ্রণ খাওয়া যায় তাহলে এক মাসে অন্তত ১৫ কেজি ওজন কমানো সম্ভব।

ঘরোয়া পদ্ধতিতে একটি পাত্রে এক চা চামচ কালোজিরাগুঁড়া আর এক গ্লাস পাতলা টক দই ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে রাতে শোওয়ার আগে খেতে হবে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছে, এই মিশ্রণ শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে কমে যায় মেদের পরিমাণ এবং দ্রুত হ্রাস পায় শরীরের ওজন।

যেসব খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে

জ্যাম-জেলি, মাখন, মার্জারিন, মিষ্টিজাতীয় খাবার, চিপস, চকোলেট, রাস্তার ধারের ভাজাভুজি, হাই ক্যালোরিযুক্ত ফল (কলা, সবেদা, আম, আতা, কাঁঠাল), বড়া, ভাজা, আলুর কোনও পদ, নরম পানীয়, প্যাকেটজাত ফলের রস খাওয়া বন্ধ করতে হবে। ড্রাই ফ্রুটসের মধ্যে আখরোট, কাজুবাদাম, চিনাবাদাম খেতে পারেন, তবে ২-৪টির বেশি নয়। এই সময়ে লো-ক্যালোরি ডায়েট মেনে চলতে হবে। দৈহিক সৌন্দর্যকে অটুট রেখে বাড়তি ওজন কমিয়ে ফেলুন। নিজেকে সুন্দর ও ফিট রাখতে সব সময়ই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন।

ঢাকাটাইমস/০২ ফেব্রুয়ারি/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
গোপালগঞ্জে বৃহস্পতিবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
আদাবরে সালিস বৈঠকে গুলি: নিহত ১, অস্ত্রসহ আটক ২
বৃহস্পতিবার সারাদেশে বিক্ষোভের ডাক এনসিপির
রাজনৈতিক কারণে পাঠ্যবইয়ে জায়গা হয়নি শহীদ ওয়াসিমের: নাছির
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা