পুলিশ পরিদর্শক হত্যা: আরাভ খানসহ আটজনের বিরুদ্ধে বাদীর সাক্ষ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২১ মার্চ ২০২৩, ১৯:১৭

পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন ইমরান খান ওরফে মামুন হত্যা মামলায় আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানসহ আটজনের বিরুদ্ধে বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। মামলাটির বাদী জাহাঙ্গীর আলম সম্পর্কে পুলিশ পরিদর্শক মামুনের বড় ভাই। মঙ্গলবার ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফয়সল আতিক বিন কাদেরের আদালতে জাহাঙ্গীরকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। এদিন তার জেরা শেষ হওয়ায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৪ জুন নতুন দিন ধার্য করেন বিচারক।

এর আগে গত বছরের ২৮ জুলাই মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলমের জবানবন্দি রেকর্ড করেন আদালত। বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে এ মামলায় ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে একজনের সাক্ষ্য শেষ হলো। এদিন কারাগারে আটক ছয় আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাদের উপস্থিতিতে বাদীকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। এ মামলার আসামিদের মধ্যে রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান ও তার স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়া পলাতক রয়েছেন। অন্য আসামিরা হলেন- রহমত উল্লাহ, স্বপন সরকার, মিজান শেখ, আতিক হাসান, সারোয়ার হাসান ও দিদার পাঠান।

২০১৮ সালের ৭ জুলাই রাজধানীর বনানীতে খুন হন পুলিশ পরিদর্শক মামুন। ঘটনার তিন দিন পর তার ভাই জাহাঙ্গীর বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ এ মামলায় রহমত উল্লাহ, রবিউল ইসলাম ওরফে আপন ওরফে সোহাগ ওরফে হৃদয় ওরফে হৃদিসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর আদালত এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, বনানীর ২ নম্বর সড়কের ৫ নম্বরের ওই বাসায় নিয়ে আসামি দিদার, স্বপন, রহমত উল্লাহ পুলিশ কর্মকর্তা মামুনের হাত-পা বেঁধে ফেলেন। পরে ওই তিন আসামির সঙ্গে মিজান, আতিক ও সারোয়ার যুক্ত হয়ে মামুনকে নির্দয়ভাবে মারতে থাকেন। এতে মামুন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। রাত ১০টার দিকে আসামি কেয়া (রবিউলের স্ত্রী) বাসা থেকে চলে যান। রাতের কোনো একসময় সেখান থেকে রবিউলও চলে যান।

গভীর রাতে আসামি আতিক আসামি স্বপনকে ডেকে বলেন, ‘দাদা, দেখেন তো পুলিশ কর্মকর্তার হাত-পা কেমন শক্ত মনে হচ্ছে।’ ভোরবেলায় তারা নিশ্চিত হন যে মামুন মারা গেছেন। মামুন মারা যাওয়ার পর রহমত উল্লাহ সবাইকে বলেন, লাশ গুম না করলে তারা সবাই বিপদে পড়ে যাবেন। কারণ, মামুন তার বন্ধু। তিনি মামুনকে ফোন করে ডেকে এনেছেন। রহমত উল্লাহর মুঠোফোনের শেষ কলটিও তার (মামুনের)। তখন স্বপন মুঠোফোনে রবিউলকে মামুনের মৃত্যুর বিষয়টি জানান। স্বপন বলেন, ‘এখন আমরা কী করবো? আপনি সকালে এখানে আসেন।’

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, দুটি বস্তা ও একটি সাদা কাপড় নিয়ে বাসার নিচে আসেন রবিউল। তার কাছ থেকে বস্তা নিয়ে বাসার ওপরে যান দিদার। এসময় রহমত উল্লাহ, আতিক ও মিজানকে সঙ্গে নিয়ে বাসার নিচে গিয়ে তার ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি লিফটের দরজার কাছে নিয়ে রাখেন। সকাল সাতটার দিকে স্বপন, দিদার ও আতিক মিলে মামুনের লাশ লিফটে করে নিচে নামান। সবাই মিলে গাড়ির পেছনের অংশে লাশ তোলেন। পরে রহমত উল্লাহ ওই গাড়ি চালিয়ে বনানীর রাস্তায় যান। গাড়িতে ছিলেন দিদার, স্বপন ও আতিক। সেখানে রবিউল তার স্ত্রী কেয়াকে নিয়ে একটি মোটরসাইকেলসহ অপেক্ষায় ছিলেন। পরে সেখান থেকে রবিউলের মোটরসাইকেল অনুসরণ করে রহমত উল্লাহ গাড়ি চালাতে থাকেন।

খিলক্ষেতের একটি পাম্পে গিয়ে মোটরসাইকেলে তেল নিয়ে রবিউল ফিরে আসেন। আর গাড়ি নিয়ে রহমতউল্লাহ যান গাজীপুরের দিকে। এ সময় রবিউলের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে কথা বলেন দিদার ও স্বপন। গাজীপুরের শিমুলতলীতে দিদার, স্বপন ও আতিক একটি দোকান থেকে সাত লিটার পেট্রোল কেনেন। রবিউল আসামি স্বপনের মুঠোফোনে টাকা পাঠান।

পরে রাত সাড়ে 8টার দিকে উলুখোলা থেকে আবদুল্লাহপুর যাওয়ার পথে একটি বাঁশবাগানে পেট্রোল ঢেলে মামুনের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর গাড়ি নিয়ে সবাই ঢাকায় ফিরে আসেন। ঘটনার তিন দিন পর ১০ জুলাই গাজীপুরের একটি জঙ্গলে পুলিশ পরিদর্শক মামুনের লাশ পাওয়া যায়।

(ঢাকাটাইমস/২১মার্চ/এএ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আদালত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আদালত এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :