বাংলাদেশ মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৩ মার্চ ২০২৩, ২০:৪৮
অ- অ+

বাংলাদেশ মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। বলেন, আমাদের কাছে রিপোর্ট রয়েছে, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি উৎপাদন হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর খামারবাড়ির প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চত্বরে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে রাজধানীতে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস ভ্রাম্যমাণ বিক্রির কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এই কার্যক্রমে ৬৪০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি করা হবে। দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রমে কোনো ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে কিনা? কিংবা ভর্তুকি না দিলে ৬৪০ টাকা করে গরুর মাংস কিভাবে বিক্রি করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা অতিরিক্ত লাভ করতে চায়, তারা অতিরিক্ত মূল্য নেয়। সরকার কোনো লাভের জন্য না, মানুষের উপকারের জন্য আমরা এ কার্যক্রম চালাচ্ছি।

মন্ত্রী বলেন, এক্ষেত্রে আমরা ভর্তুকি না দিয়েও করতে পারছি, অর্থাৎ যারা ব্যবসায়ী, তারা কিন্তু আমরা যে দামে বিক্রি করছি, এই দামে বিক্রি করার মতো যৌক্তিকতা আছে। আমরা কোনও ভর্তুকি দিচ্ছি না, আমরা কোনো লাভও করছি না। যৌক্তিক মূল্যে বিক্রি করলে, এই মূল্যে যে বিক্রি করা যায়, আমরা তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করছি।

গতবারের তুলনায় এবার গরুর মাংসের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতবছর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ছিল না, গতবার বিদেশে থেকে পশু খাদ্য আমদানিতে প্রতিকূল পরিবেশ ছিল না, ফলে পশু খাদ্যের দাম বেড়েছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক একটা মন্দায় রয়েছে। সেক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ বেড়েছে।

মন্ত্রণালয়ের এমন উদ্যোগ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এটা আমাদের অফিশিয়াল ম্যান্ডেড না। তারপরও একজন মানুষকে যদি উপকার করতে পারি, একজন মানুষ যদি সহজলভ্য বা সাধ্যের মধ্যে দুধ, ডিম, মাংস কিনতে পারেন, তাহলে তার রোজা রাখা স্বস্তিদায়ক হবে। সে লক্ষ্য মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এই কার্যক্রম শুরু করেছি।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, গতবার একজন বৃদ্ধা বলেছিলেন, এক কেজি মাংস কেনার সাধ্য তো আমার নেই। আমি তো আমার সন্তানকে মাংস খাওয়াতে পারব না। দুধ ছোট্ট প্যাকেটে, ডিম অল্প পরিমাণে, মাংস আধা কেজি পর্যন্ত প্যাকেটে রাখব। যাতে একেবারে নিম্নপর্যায়ের মানুষও যেন তাঁদের সাধ্যের মধ্যে কিনতে পারেন।

এখন যে দাম ধরা হয়েছে, তার চেয়ে বাড়বে না। বাজারে দাম কমলে এসব পণ্যেরও মূল্য কমবে বলে জানান মন্ত্রী।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, পবিত্র রমজাম মাস সিয়াম সাধনের মাস। এই মাসে আমরা সর্বোচ্চ সংযম ধারণ করব। শুধু কি খাব না, এই সংযম? অবশ্যই না। আমার কৃতকর্মের ভিতর সংযম হবে, আমার আচরনের ভিতর সংযম হবে, আমার সততার জায়গায় আমি সর্বোচ্চ সততা প্রদর্শন করব। অন্যকে সহায়তা করার জন্য আমি স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে যাব।

মন্ত্রী বলেন, এক সময় বাংলাদেশকে বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ি। এক সময় বাংলাদেশকে বলা হতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সিম্বলিক রাষ্ট্র। আজ বাংলাদেশ কিন্তু সেখানে নাই। কারণ একজন সৎ, সাহসী, দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ চলছে। তিনি বলেন, এই বাংলাদেশে তিনি চান একজন মানুষও যেন কষ্ট না পায়। সে কারণে আপনারা লক্ষ্য করেছেন, গতকাল গৃহহীন মানুষদের গৃহ দেওয়ার অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না। এটা কিন্তু পৃথিবীর বিস্ময়। এটা কোনো রাষ্ট্র তার নাগরিকদের নিজের টাকায় ঘর করে দিচ্ছে, দলিল দিয়ে তার জায়গার মালিকানা দিচ্ছে, বিদ্যুতের কানেকশন করে দিচ্ছে, পানি সরবরাহ করে দিচ্ছে। এটা বিশ্ব রেকর্ড। একজন মানুষ গৃহহীন থাকবে না।

প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব ড. নাহিদ রশীদ।

উল্লেখ্য, রাজধানীর ২০টি স্থানে পুরো রমজান মাস জুড়ে চলবে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রম। রমজানে মাংস, দুধ ও ডিমের সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি ভোক্তারা যেন সহজেই প্রাণিজ আমিষ ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারে সেজন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ এই সকল বিক্রয়কেন্দ্রে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৪০ টাকা, খাসির মাংস ৯৪০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার ৩৪০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা এবং ডিম প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যে বিক্রয় করা হবে।

সচিবালয়সংলগ্ন আব্দুল গনি রোড, খামারবাড়ি, মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটি, মিরপুর ৬০ ফুট রাস্তা, আজিমপুর মাতৃসদন, পুরান ঢাকার নয়াবাজার, আরামবাগ, নতুন বাজার (বাড্ডা), মিরপুরের কালশী, খিলগাঁও রেলগেট, নাখালপাড়ার লুকাস মোড়, সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার, মোহাম্মদপুরের বসিলা, উত্তরার দিয়াবাড়ি, যাত্রাবাড়ী, গাবতলী, হাজারীবাগ, বনানীর কড়াইল বস্তি, কামরাঙ্গীরচর এবং রামপুরায় এ বিক্রয় কার্যক্রম চালু থাকবে।

প্রাণিজাত পণ্যগুলো বিক্রয়ের জন্য পিকআপ সুসজ্জিত কুলভ্যান ব্যবহার করা হবে। সকাল ৯টার মধ্যে প্রাণিজাত পণ্য নিয়ে কুলভ্যানগুলো পৌঁছে যাবে প্রতিটি বিক্রয় কেন্দ্রে।

(ঢাকাটাইমস/২৩মার্চ/এলএম/এসএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধি বর্ষা
শরীয়তপুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
ইউনিয়ন ব্যাংকের নবগঠিত নিরীক্ষা কমিটির ১০ম সভা অনুষ্ঠিত
পঞ্চগড়ে দুই মাথাবিশিষ্ট শিশুর জন্ম
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা