শেরপুরে পতিত জমিতে আনারস চাষে সাফল্য

সুজন সেন, শেরপুর
| আপডেট : ১০ জুন ২০২৩, ০৮:৫২ | প্রকাশিত : ১০ জুন ২০২৩, ০৮:১৮

শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতীর গারো পাহাড়ের পতিত জমিতে বাণিজ্যিকভাবে আনারস চাষ শুরু হয়েছে। উপজেলার উত্তর বাকাকুড়া গ্রামের পিটার সাংমা নামে এক গারো আদিবাসী তার শ্বশুর হালেন্দ্র সাংমার ১৮ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে এই আনারসের বাগান করেন।

পিটার বলেন, ফলন ভালো হওয়ায় এখন পর্যন্ত বাগানের প্রায় সোয়া লাখ পিস আনারস ১৬ লাখ টাকায় তিনি বিক্রি করেছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, এর স্বাদ মধুপুরের আনারসের চেয়ে অনেক বেশি ও রসালো।

অপরদিকে এ অঞ্চলের মাটি আনারস চাষের জন্য খুবই উপযোগী আর পাহাড়ী অঞ্চলে কৃষিতে নতুন অর্থকরি ফসল হিসেবে আনারসের খ্যাতি সারা দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছে জেলা কৃষি বিভাগ।

আনারস চাষী পিটার সাংমা ঢাকা টাইমসকে জানান, প্রায় দেড় বছর আগে টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে ঝিনাইগাতী এসে তিনি শ্বশুরের ১৮ বিঘা জমিতে প্রায় সোয়া লাখ আনারসের চারা রোপন করেন। এবার ওইসব চারা থেকে এক লাখ ১০ হাজার গাছে আনারসের ফলন হয়। এসব ফল মধুপুরের এক ব্যবসায়ীর কাছে ১৬ লাখ টাকায় বিক্রিও করেছেন। এছাড়া বাগানে আরও প্রায় তিন লাখ টাকার আনারস বিক্রি করার উপযোগী হয়েছে।

পিটার সাংমা বলেন, বাগানে বন্য হাতির আক্রমণের কারণে প্রায় ২০ হাজার পিস আনারসের চারার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যার বর্তমান বাজার দর আড়াই লাখ টাকার বেশি। আর চারা সংগ্রহ, বাগান রক্ষণাবেক্ষণ, সেচ, সার ও পরিচর্যা বাবদ খরচ হয় প্রায় ১০ লাখ টাকা।

এক প্রশ্নের জবাবে পিটার সাংমা বলেন, এ অঞ্চলে তিনি ঘুরতে এসে দেখেন পাহাড়ি বিস্তৃর্ণ জমি বছরের পর বছর পতিত পড়ে থাকে। পরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন এ এলাকা বন্য হাতির আক্রমণ প্রবল হওয়ায় এখানে কেউ কোন ধরণের ফসল আবাদ করেন না। তাই তিনি পাহাড়ি পতিত জমিতে ফসল উৎপাদনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে এবার প্রথম আনারসের বাগান করেন।

স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরেন মারমা ঢাকা টাইমসকে বলেন, প্রথম অবস্থায় স্থানীয়রা পিটারের বাগান দেখে সন্দিহান ছিলেন। পরবর্তীতে ফলন ভালো দেখে গ্রামের মানুষের মনে আশার আলো দেখা যায়। শুধু তাই না অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছে পাহাড়ি পতিত জমিতে আনারস চাষ করবেন।

হরেন মারমা আরও বলেন, পিটারের বাগান দেখতে দূর দূরান্তের অনেকেই প্রতিনিয়ত এখানে আসছে। এছাড়া এ বাগানে পরিচর্যার কাজ করে অনেকেই আয়ের উৎস খুঁজে পেয়েছেন।

স্থানীয় কৃষক আব্বাস মিয়া, রতন শেখ ও আরজ আলী ঢাকা টাইমসকে বলেন, পিটারের বাগানের আনারস মধুপুরের আনারসে চেয়ে অনেক বেশি সুস্বাদু ও রসালো। তারা আগামীতে আনারসে বাগান করার পরিকল্পনা করছেন বলেও জানান।

আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে বীর নিবাস থেকে মাকে পিটিয়ে বের করলেন ছেলে ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার ঢাকা টাইমসকে বলেন, পাহাড়ি মাটি মূলত এসিডিক। আর এ মাটি আনারস চাষের জন্য খুবই উপযোগী। উচ্চমূল্যের এ ফল চাষ করে পাহাড়ের অনাবাদি জমি যেমন চাষের আওতায় আসবে, তেমনি পাহাড়ি অঞ্চলে কৃষিতে নতুন অর্থকরি ফসল হিসেবে আনারসের খ্যাতি সারা দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়বে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

(ঢাকাটাইমস/১০জুন/এসএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :