ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রদলের নতুন কমিটির আনন্দ মিছিলে পদবঞ্চিতদের হামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ জুন ২০২৩, ১০:১৮

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির আনন্দ মিছিলে পদবঞ্চিতদের ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে।

সোমবার বেলা ১১টার দিকে শহরতলীর বিরাসার বাসস্ট্যান্ড মোড়ে এই ঘটনা ঘটে।

এসময় প্রায় অর্ধ শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে৷ পরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জেলা ছাত্রদলের ৭ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে আহবায়ক শাহীনুর রহমান ও সদস্য সচিব সমীর চক্রবর্তীকে করা হয়। নবগঠিত কমিটির আহবায়ক শাহীন, সদস্য সচিব সমীর, যুগ্ম আহবায়ক এলভীন লস্কর ও আব্দুল গাফফার রিমন শুক্রবার সকালে জেলা কৃষকদলের আহবায়ক আবু শামীম মো. ভিপি শামিমের কান্দিপাড়ার বাসায় যান।

সেখানে সদ্য ঘোষিত কমিটির সদস্যদের শুভেচ্ছা দেওয়া হচ্ছে বলে জানতে পারেন পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এই খবরে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা জেলা কৃষক দলের আহ্বায়কেরর কান্দিপাড়ার বাড়িতে হামলা চালায়।

এসময় আবু শামীমের বাড়ির পেছন দিয়ে সদ্য ঘোষিত কমিটির সদস্যরা পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। একই দিন বিকেলে জেলা শহরের টিএ রোড ও পাওয়ার হাউস রোডে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।

মিছিল শেষে তারা কান্দিপাড়ায় জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির আহবায়ক শাহীনুর রহমান ও কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক কাউসার কাউন্সিলরের বাড়িতে হামলা করে ভাংচুর চালায়। এসময় ভাংচুর করা হয় ঘরের দরজা জানালা, গেইট ও একটি মোটরসাইকেল। এরপর দিন শনিবার রাতে শহরের কান্দিপাড়ায় সদ্য ঘোষিত ছাত্রদলের কমিটির নেতারা পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নেয়।

এই খবরের পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উল্টো তাদের উপর হামলা করে। এতে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় অর্ধশত রাউন্ড গুলি বিনিময় হয় এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

সোমবার সকালে শহরের লোকনাথ দিঘীর মাঠ থেকে নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করায় একপক্ষ আনন্দ মিছিল বের করার ঘোষণা দেয়। একই সময় ও স্থানে সরকারের দুর্নীতি এবং লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয় পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

এই অবস্থায় সোমবার সকাল থেকে শহরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম শেখের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।

শহরে এমন পরিস্থিতিতে নতুন কমিটি তাদের কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করে শহরতলীর বিরাসার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আয়োজন করে। সকাল থেকে নেতাকর্মীরা মিছিলে অংশ নিতে বিরাসার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। এই খবরে পদবঞ্চিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিরাসার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হামলা করে।

এসময় প্রায় অর্ধ শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ হয়। উভয় পক্ষ মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তা ছড়িয়ে পড়ে বিরাসার মোড় ও খৈয়াসার সড়কে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ার গ্যাস ছুড়ে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম শেখ জানান, যে কোন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা কাজ করছি।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই সংঘর্ষ ও উত্তেজনা চলছে।

সোমবার দু’পক্ষই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করলে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয়। বিরাসার মোড়ে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুরো শহরজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, কান্দিপাড়া এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা হয়েছে। পুলিশের এসআই শ্রীবাস বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

আরও পড়ুন: জামালপুরে হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে

মামলায় জেলা কৃষকদলের আহবায়ক আবু শামীম মো.আরিফ, জেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক ফুজায়েল চৌধুরী, সাবেক সদস্য সচিব মহসিন হৃদয়সহ ৩০ জনকে নামীয় সহ ৯০-৯৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এরমধ্যে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ থেকে ২৫টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবারের সংঘর্ষের ঘটনায়ও মামলা হবে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৩জুন/এসএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :