আলফাডাঙ্গায় বিরল রোগে আক্রান্ত দুই সন্তানকে বাঁচাতে মা-বাবার আকুতি

মো. মুজাহিদুল ইসলাম নাঈম, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৩ জুন ২০২৩, ২০:১৬ | প্রকাশিত : ১৩ জুন ২০২৩, ১৫:৩৯

আপন দুই ভাই ১৪ বছরের আবির হুসাইন নাঈম ও চার বছরের শিশু মো. নূর হোসেন। বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে জীবন পার করছে তারা। জন্মের পাঁচ মিনিট পর থেকেই শরীরে এই রোগ দেখা দিয়েছে তাদের।

এতে হাত-পা, মাথা, চোখ, মুখসহ সারা শরীরের ত্বক ফেটে ফেটে রক্ত ঝরে। দেখতে মনে হয় আগুনে ঝলসে গেছে। হয় প্রচণ্ড রকম চুলকানি। চুলকাতে চুলকাতে রক্ত বের হতে থাকলে দেখা দেয় প্রবল শ্বাসকষ্ট। অনেক সময় হাত-পা কুঁকড়ে যায়। কিছুতেই সহ্য করতে পারে না গরম, ৩-৪ মিনিট পরপর শরীরে ঢালতে হয় পানি।

বিরল রোগে আক্রান্ত এই দুই শিশুকে ঢাকাসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানের অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত রোগটিই শনাক্ত করা যায়নি।

করোনার আগে গবেষণার জন্য রোগীদের রক্ত নেন ভারতের ভেলর সিএমসি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। করোনার পরে চিকিৎসকরা পুনরায় হাসপাতালে যেতে বললেও বাদ সেধেছে অর্থ।

দেশ-বিদেশে দুই সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা। এখন ভিটা ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই। সব হারিয়ে একজন চা দোকানি বাবার পক্ষে দুই সন্তানের সু-চিকিৎসা করানো দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। বর্তমানে অর্থাভাবে শিশু দুইটির সবরকম চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে।

জানা গেছে, ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটা গ্রামের চা দোকানি হাবিবুর রহমান ও রাবেয়া বেগম দম্পতির ১৮ বছর আগে বিবাহ হয়। প্রথম সন্তান সুরাইয়া এ রোগে আক্রান্ত হয়ে জন্মের ১০ মাস পরই মারা যায়। এরপর তাদের কোল আলো করে আসে দুই ছেলে ও এক মেয়ে।

বড় ছেলে আবির হুসাইন নাঈম (১৪) ও ছোট ছেলে মো. নূর হোসেন (৪) এবং মেঝ মেয়ে সাদিয়া আক্তার সামিয়া (৯)। বড় ছেলে ইচাপাশা হাফেজিয়া নূরানী মাদ্রাসায় পড়ে। ৮ পারা শেষ করেছে। মেঝ মেয়ে সাদিয়া আক্তার সামিয়াও ওই মাদ্রাসায় নূরানী বিভাগে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। বড় ছেলে নাঈম ও ছোট ছেলে নূর হোসেন বিরল এ রোগে আক্রান্ত হলেও মেঝ মেয়ে সাদিয়া সুস্থ রয়েছে।

এ বিষয়ে অসহায় হাবিবুর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ২০১৮ সালে দুই ছেলেকে নিয়ে ভারতের ভেলর সিএমসি হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছি। করোনার পর ওই হাসপাতালে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অর্থনৈতিক সমস্যা থাকায় আর যাওয়া হয়নি। চা দোকান করে যা পাই তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে আমাদের।

আরও পড়ুন: গাছের পাতা, ডাল ও কাণ্ড বেয়ে পড়ছে পানি, অলৌকিক ভেবে মানুষের ভিড়

বিরল রোগে আক্রান্ত দুই সন্তানের পিতা হাবিবুর রহমান তার সন্তানদের চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা কামনা করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৩জুন/এমআই/এসএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :