বর্ষায় ভৈরবে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। তবে বর্ষার পানি না বাড়ায় নৌকা বেচাকেনা কম হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
উপজেলার শিমুলকান্দি, গজারিয়া, কালিকাপ্রসাদ, মিরারচর, সাদেকপুরসহ বিভিন্ন এলাকার গ্রাম্য হাট-বাজারগুলিতে বর্ষার আগমনের শুরু থেকে পুরোদমে বিভিন্ন ধরণের কোশা নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
তৈরিকৃত এসব কোশা স্থানীয় ক্রেতাদের পাশাপাশি পাশ্ববর্তী কুলিয়ারচর, বাজিতপুর, কটিয়াদী, রায়পুরা, বেলাব, সরাইল উপজেলায় বিক্রি করা হচ্ছে। বর্ষাকালে হাওরসহ নিম্নাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম বাহন হলো কোশা নৌকা।
চারদিকে বর্ষায় যখন রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়, তখন নৌকা, কলাগাছের ভেলা হয়ে ওঠে পারাপারের ভরসা। এছাড়া বর্ষার মৌসুমে খালবিলে নতুন পানিতে মাছ ধরতে অনেক জেলেরা নতুন নৌকা কিনে নিজেদের প্রস্তুত করে মাছ শিকারে নদীতে নামেন।
বর্ষা মৌসুমে গ্রামাঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষজনের অন্য কোনো কাজ না থাকায় নদী-নালাসহ প্লাবন ভূমি থেকে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। মাছ শিকারেও এসব নৌকার প্রয়োজন হয়। সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, উপজেলার শিমুলকান্দি ও সাদেকপুর বাজারের কারিগররা নৌকা তৈরিতে এখন বেশ ব্যস্ত। এসময় কথা হয় উপজেলার শিমুলকান্দি বাজারের নৌকা তৈরির কারিগর মো. ছিদ্দিক মিয়ার সঙ্গে। তিনি ঢাকা টাইমসকে জানান, নৌকা বানানো কাজের সঙ্গে ১০-১৫ বছর যাবত যুক্ত আছেন। এই বছর বর্ষার পানি না বাড়ায় বাজারে নৌকার চাহিদা কম। তবে এই পর্যন্ত ৩০-৩৫ টি নৌকা তৈরি করে বিক্রি করেছেন। আরও কিছু নৌকা তৈরি করে বিক্রির জন্য রেখেছেন।
তিনি বলেন, একটা নৌকা পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকায় বিক্রি করি। তবে কাঠের ধরণ ও ভিন্নতা, নৌকার ছোট বড় হওয়ার কারণে নৌকার দাম কম বেশি হয়ে থাকে। কোষা নৌকা সাধারণ ৯-১০ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। তবে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়লেও কোশা নৌকার দাম বাড়েনি।
আরেক নৌকা তৈরির কারিগর কাঠমিস্ত্রি মো. ইউসুফ ঢাকা টাইমসকে বলেন, প্রতি বছরই বর্ষার মৌসুমে নৌকা তৈরি করি। এই বছর পানি কম আসায় নৌকা তৈরির চাপ কিছুটা কম। তবে এই মৌসুমে ২০-২৫ টি নৌকা তৈরি করে বিক্রি করেছি। প্রতিটি নৌকা ৩-৫ হাজার টাকা দরে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে থাকেন।
গজারিয়া বাজার এলাকার বাসিন্দা মাছুম মিয়া ঢাকা টাইমসকে বলেন, নৌকা তৈরির কারিগররা ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী সাড়ে তিন থেকে ছয় হাজার টাকার মধ্যে নৌকাগুলো তৈরি করে থাকেন। গুণগতমান ভালো এবং দামেও সাশ্রয়ী হওয়ায় বিভিন্ন এলাকার ক্রেতাদের কাছে এখানকার নৌকার বেশ কদর রয়েছে।
সাদেকপুর বাজারের কাঠ ব্যবসায়ী হাকিমুল ঢাকা টাইমসকে বলেন, কয়েক বছর যাবত কাঠের ব্যবসা করছি। তবে বর্ষার মৌসুমে প্রতিবছরই নৌকা তৈরি করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে থাকি। এই বছর বর্ষার পানি কম হওয়ায় বাজারে নৌকার ক্রেতা অন্য বছরের তুলনায় খুবই কম।
আরও পড়ুন: শেরপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় কৃষকের মৃত্যু
নৌকার ক্রেতা রসুলপুর গ্রামের কাসেম মিয়া ঢাকা টাইমসকে বলেন, সারাবছরই নদীতে মাছ ধরি। প্রতি বছরই বর্ষার শুরুর দিকে নতুন পানিতে জাল দিয়ে মাছ ধরতে নতুন নৌকা কিনে ভালোভাবে প্রস্তুত হয়ে মাছ ধরতে যাই। তাই এই বছর ১০ ফুট লম্বা একটি কোশা নৌকা ছয় হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি।
(ঢাকাটাইমস/২০জুলাই/এসএম)

মন্তব্য করুন