নীলফামারীতে পৃথক ঘটনায় শিশুসহ ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার
নীলফামারীতে পৃথক ঘটনায় শিশুসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত জেলার কিশোরগঞ্জ ও সৈয়দপুর উপজেলায় এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন- সৈয়দপুর শহরের নয়াটোলা মহল্লার বাসিন্দা সোহেল রানার স্ত্রী ফারজানা শান্তা (২৬), কিশোরগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ছিট রাজীব দুন্দিপাড়া এলাকার রোমান আলীর দুই বছরের ছেলে জোবায়ের ইসলাম ও কিশোরগঞ্জের বাহাগিলি ইউনিয়নের কারবালার ডাঙ্গা সংলগ্ন চাড়ালকাটা নদী খননের বালুস্তুপ থেকে উদ্ধার করা অজ্ঞাত যুবকের মরদেহের পরিচয় মেলেনি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে কিশোরগঞ্জের সদর ইউনিয়নের ছিট রাজীব দুন্দিপাড়া গ্রামের রোমান আলীর দুই বছরের ছেলে জোবায়ের বাড়ির পেছনে যায়। পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাড়ির পাশের ছোট একটি গর্তে শিশুটির ভাসমান মরদেহ দেখতে পায়। পরে তাকে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
একই দিন বিকালে কিশোরগঞ্জের বাহাগিলি ইউনিয়নের কারবালার ডাঙ্গা সংলগ্ন এলাকায় চাড়ালকাটা নদী খননের বালু স্তুপ থেকে অজ্ঞাত এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্তুপকৃত বালুর নিচ থেকে শিয়াল মরদেহটি বের করে আনে। পরে এলাকার লোকজন দেখতে পেয়ে থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজীব কুমার বলেন, বাড়ির পাশে খালে দুই বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে আমাদের লোক গিয়েছিল। কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কারবালার ডাঙ্গা সংলগ্ন এলাকায় চাড়ালকাটা নদী খননের বালু স্তুপ এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। মুখে দাড়ি আছে। পরনে কোন কাপড় নেই। গায়ের চামড়া ফোঁসকা পড়েছে।
এদিকে নীলফামারীর সৈয়দপুরে ফারজানা ববি শান্তা (২৬) নামে এক গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিকালে মরদেহটি সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
ফারজানা সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার সিএইচআর সপের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহেল রানার স্ত্রী। তিনি জমজ দুই মেয়েসহ স্বামীর সঙ্গে শহরের নয়াটলা ডিআইবি রোড এলাকায় এক বাসায় ভাড়ায় থাকতেন। ফারজানা বগুড়ার দুপচাচিয়া উপজেলার গুনাহার পুকুরপাড় এলাকার মৃত শাহীন সরকারের মেয়ে।
হাসপাতালে নিহতের স্বামী সোহেল রানা বলেন, অফিস থেকে দুপুরে বাড়িতে ফিরে দেখতে পাই আমার স্ত্রী শয়নকক্ষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ছটফট করছে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর ঘটনাটি রহস্যজনক মনে হওয়ায় বিষয়টি থানায় অবহিত করা হয়।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সোহেল রানার কয়েকজন সহকর্মী বলেন, সোহেল রানার সাথে এক নারী সহকর্মীর পরকীয়া চলছে। এ খবরটি তার স্ত্রী জানার পর থেকে পারিবারিক অশান্তি চলছিল।
সৈয়দপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের গলায় কালো দাগ দেখা গেছে। তবে শরীরের অন্য কোথায় আঘাতের চিহ্ন নেই। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই জানা যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা।
(ঢাকাটাইমস/২৮আগস্ট/এসএ)