দিনাজপুরে আগাম জাতের ধান কাটার ধুম

উত্তরের শস্য ভান্ডার খ্যাত দিনাজপুরে আগাম জাতের আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। কেউ কাটছেন, কেউ আঁটি বাঁধছেন, আবার কেউ ভাড় করা ধান নিয়ে যাচ্ছেন বাড়ির উঠোনে।
এমনি দৃশ্য এখন প্রতিনিয়ত চোখে পড়ছে জেলায়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং রোগবালাই না হওয়ায় আমনের ভালো ফলন আশা করছেন কৃষকরা।
ফলন ভালো হওয়ায় কৃষক পরিবারে বইছে খুশির জোয়ার। ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে কৃষি কর্মকর্তারা মনে করছেন। বেশকিছু এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে,১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ধানকাটা পুরোদমে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
জেলায় এবার ২ লাখ ৭৩ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে আরও বেশি জমিতে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় আমনের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বিভিন্ন হাইব্রিড ও উফশী জাতের পাশাপাশি স্থানীয় জাতের আমন ধানের চাষ করা হয়েছিল এবার।
বিরল উপজেলায় পুরিয়া গ্রামের আদর্শ কৃষক মো. মতিউর রহমান তার ২২ একর জমির আগাম আমন কেটে মাড়াই করে ঘরে তুলেছে ধান। এ বিষয়ে তাকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) সহযোগিতা করেছেন বলে জানান তিনি।
কৃষক মতিউর বলেন, ধানের ফলন প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়েছে। এই আগাম জাতের ধানের বীজ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) সহযোগিতায় সারা দেশে ছড়িয়ে যাবে।
দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. নুরুজ্জামান জানান, জেলায় এবার আমন ধানের চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। মৌসুমের প্রথম দিকে বৃষ্টি না হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না বলে আশঙ্কা ছিল। তবে তা শেষ পর্যন্ত হয়নি। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি ফলনও ভালো হয়েছে। প্রতি হেক্টরে প্রায় পাঁচ মেট্রিকটন থেকে সড়ে পাঁচ মেট্রিকটন ধান উৎপাদিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পাকা ধান কাটা শুরু হয়েছে। মাঠপর্যায়ে ক্ষেতের অবস্থা ও চাষিদের সঙ্গে সমন্বয় করে জেনেছি আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে আমন চাষে প্রত্যেক চাষি লাভবান হবেন। বাজারে ধানের দামও সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান আরও জানান, আগাম জাতের আমন ধান কাটা-মাড়াই শেষে কৃষকরা কোথাও শীতকালীন সবজি, কোথাও বোরো ধান আবাদ করবেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষি উপকরণ সহজলভ্য হওয়ায় কৃষকরা আগাম জাতের রোপা আমন চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন। ফলে প্রতি বছর চাষাবাদের পরিধি বাড়ছে। আমন ধান কাটার পরে সবজি আবাদ করা ছাড়াও বোরোর খরচ যোগান দিতে এই রোপা আমন সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
(ঢাকাটাইমস/০৩ নভেম্বর/ইএইচ)

মন্তব্য করুন