বগুড়ার সাতটি আসনে ২৮ জনের মনোনয়ন বাতিল

বগুড়ার তিনটি আসনে মনোনয়ন যাচাইবাছাইয়ে জাতীয় পার্টিসহ বাদ পড়েছেন ১৬ জন প্রার্থী। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বগুড়ার ৫, ৬ ও ৭ আসনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাইবাছাই করা হয়।
আগের দিন রবিবার বগুড়ার ১, ২, ৩ ও ৪ আসনের মনোনয়ন যাচাইবাছাই করা হয়। সেদিন বাদ পড়েন ১২ জন প্রার্থী। এ নিয়ে জেলার সাতটি সংসদীয় আসনে মোট ২৮ জনের প্রার্থিতা বাতিল হলো। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ২১ জন। বাকি সাত জন বিভিন্ন দলের। টিকে থাকলো ৬০ জনের মনোনয়ন।
জানা গেছে, বগুড়া-৫ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন আট প্রার্থী। যাচাইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবির রিপোর্টে ঋণসংক্রান্ত তথ্য থাকলেও আসনটির জাতীয় পার্টির প্রার্থী ওমর ফারুক হলফনামায় তা গোপন করেন। এ জন্য তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়। একই আসনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী আব্দুর নুর শেখের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবকারী, সমর্থকের স্থানে তিনি নিজেই স্বাক্ষর করেন।
বগুড়া-৬ আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন আট জন প্রার্থী। যাচাইয়ে দুই জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম। এর মধ্যে সৈয়দ কবির আহমেদ মিঠু ঋণ পরিশোধের ছাড়পত্র ছিল না। এ ছাড়া এক শতাংশ ভোটার সমর্থনের তথ্যে ভুল ছিল।
নয়ন রায় নামে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক শতাংশ সমর্থনযুক্ত ভোটার যাচাইয়ে দশ জনের তথ্য ভুল পাওয়া গেছে। এ জন্য তার মনোনয়নও বাতিল করা হয়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবার বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী ভোটের মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে মনোনয়ন যাচাইয়ে ১২ জনের প্রার্থিতা বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এদের মধ্যে ১১ জনই স্বতন্ত্র।
এর মধ্যে এক শতাংশ ভোটার সমর্থনের তথ্যে ভুল থাকায় মোস্তাফিজুর রহমান মিলু, মেজবাউল আলম, মানিকুর রহমান, আমজাদ হোসেন, আমিনুল ইসলাম, আসাফুদ্দৌলা সরকার, নজরুল ইসলাম মিলন, আতাউর রহমান, ছারোয়ার হোসেন, জুলফিকার আলীর প্রার্থীতা বাতিল হয়। আর জহুরুল ইসলাম নামে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঋণখেলাপির তথ্য না দেওয়ায় প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা।
এ ছাড়া এই আসনে জাতীয় পার্টির (জেপি) মনোনীত প্রার্থী থাকা সত্বেও জালিয়াতি করায় রাকিব হাসান নামে একজনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। আসনটিতে মোট ১৩ জনের মনোনয়ন গ্রহণ করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চাইলে আপিল করার সুযোগ আছে। ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই আপিল করতে পারবেন।
এর আগে ৩০ নভেম্বর বগুড়ার সাতটি আসনে ৮৯ জন প্রার্থী নিজেদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ নিয়ে বগুড়ার সাতটি আসনে মোট প্রার্থিতা টিকে থাকলো ৬০ জনের। বাতিল হয়েছে ২৮টি। আর বগুড়া-৬ আসনের একজনের প্রার্থিতা স্থগিত রাখা আছে।
বগুড়ার-৭ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৮ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৪। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৪ লাখ ৪ হাজার ৩২১ এবং নারী ভোটার ১৪ লাখ ২৪ হাজার ২৩ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৯৬৯টি। ভোট কক্ষ স্থায়ী ৫ হাজার ৮১৫টি ও অস্থায়ী ৪০৮ টি মিলে মোট ৬ হাজার ২২৩ টি কক্ষে ভোট দিবেন জেলাবাসী।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী- রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ৬-১৫ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। এর মধ্যে বগুড়ায় মনোয়নপত্র বাছাইয়ের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ ডিসেম্বর।
প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
(ঢাকাটাইমস/৪ডিসেম্বর/এআর)

মন্তব্য করুন