কাপাসিয়ায় বিশাল দুই জনসভা, রিমি ও আলমের নানা প্রতিশ্রুতি

কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ২৩:১১ | প্রকাশিত : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:১৩
নৌকার প্রার্থী সিমিন হোসেন রিমি ও ঈগলের প্রার্থী আলম আহমেদ।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রচার-প্রচারণার শেষ দুই দিনে গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনে উপজেলার সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুই সভাতেই ছিল মানুষের উপচেপড়া ভিড়। বিশাল মাঠটি পরিপূর্ণ হয় কানায় কানায়।

আজ বৃহস্পতিবার জনসভা করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা সিমিন হোসেন রিমি। এছাড়া গতকাল বুধবার বিকালে জনসভা করেছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আলম আহমেদ। তারা দুজনই সম্পর্কে ফুফাতো-মামাতো ভাইবোন। দুজনেই এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে সিমিন হোসেন রিমির নির্বাচনি জনসভায় বক্তব্য দেন তার ছোট ভাই ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ। তিনি বলেন, অতীতে আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে দুইবার সংসদ সদস্য বানিয়েছেন। আমার প্রিয় বোন সিমিন হোসেন রিমিকে তিনবার সংসদ সদস্য বানিয়েছেন। এর ফলে কাপাসিয়ায় ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এবার আপনারা আবারও ভোট দিয়ে সিমিন হোসেন রিমিকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করবেন।

তিনি আরও বলেন, সিমিন হোসেন রিমি কাপাসিয়ার মানুষের উন্নতি নিয়ে চিন্তা করে। কাপাসিয়ার গর্ভবতী মায়েদের নিয়ে চিন্তা করে। কাপাসিয়ার মানুষের সুস্থতা ও স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে চিন্তা করে। নতুন প্রজন্ম ও আমাদের যুবসমাজকে নিয়ে চিন্তা করে।

তিনি তার পিতা শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের নানা অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, এই যে আপনারা ১৯৫৪ সালে, ১৯৭০ সালে, ১৯৭৩ সালে, ১৯৯৬ সালে, ২০০১ সালে, ২০০৮ সালে, ২০১২ সালে, ২০১৪ সালে ও ২০১৮ সালে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন। এবার দশম বারের মতো নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন আগামী ৭ তারিখ।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গতাজের স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়ার। সোনার বাংলা এমন একটি সুন্দর বাংলাদেশ যে বাংলাদেশে কোনো দুর্নীতি-অনিয়ম থাকবে না। সেই সোনার বাংলায় ন্যায় বিচার থাকবে। অন্যায়-অত্যাচার থাকবে না। সুশাসন থাকবে। এটাই আমাদের সোনার বাংলার স্বপ্ন। তাই আপনাদের ভোট হচ্ছে মহামূল্যবান। নৌকায় ভোট দেওয়া হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কাপাসিয়ার ভবিষ্যৎ আপনারাই নির্বাচন করবেন।

নৌকার প্রার্থী বঙ্গতাজ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি আবেগঘন বক্তব্যে বলেন, কাপাসিয়ার সব মানুষ আমার আত্মার আত্মীয়। এলাকার সব মানুষ আমাকে চেনে। রাত ১টা হোক ২টা হোক তারা আমাকে আস্থা ও বিশ্বাস করে স্মরণ করে। যেন আমি তাদের কোনো একটা উপকার করতে পারব। এর চেয়ে বড় ভালোবাসা আর কিছু নাই পৃথিবীতে। তিনি আরও বলেন, ১৫ বছর আগে একটা ভাঙাচোরা কাপাসিয়া পেয়েছিলাম। গত ১৫ বছরে কাপাসিয়া একটা অনন্য কাপাসিয়া হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ করার জন্য যে মানুষ প্রয়োজন তা গড়ার জন্য কারিগরি স্কুল, কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারি টেকনিকেল সেন্টার নার্সিং কলেজ স্থাপন হয়েছে। বর্তমান কাপাসিয়াকে সবুজ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য এক বছর আগে সরকারের কাছে একটি সবুজ অর্থনীতির অঞ্চল করার জন্য পরিকল্পনা দিয়েছি। সেই সবুজ অর্থনীতির অঞ্চল গড়তে শুরু করেছি। কাপাসিয়ার ২৩১টি গ্রামকে মডেল গ্রাম ও আদর্শ গ্রাম হিসেবে গড়ে তুলবো। প্রতিটা মানুষ যেন কিছু না কিছু করে খেতে পারে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মাজহারুল ইসলাম সেলিমের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আমানত হোসেন খান, সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী আফসার উদ্দিন আহমেদের ছেলে ডাক্তার হাসিব খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান মোল্লা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর রশিদ খান প্রমুখ।

এর আগের দিন বুধবার বিকালে একই মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলম আহমেদও বিশাল জনসভা করেন। জনসভায় আলম আহমেদ বলেন, আমি আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন ১০ বছর ধরে এলাকায় প্রচার করছি। আমি এই এলাকায় যদি নির্বাচিত হই তাহলে এই এলাকার মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব যেন এই এলাকার কোনো লোক বেকার না থাকেন। পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি করবো। এছাড়াও কাপাসিয়ায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমার প্রার্থিতা কেড়ে নেওয়ার জন্য বহু ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আমার প্রতিপক্ষ আদালতে গিয়েছেন। কিন্তু আমি আদালতে যাইনি। আল্লাহ অশেষ রহমতে জনগণের ভালোবাসায় তারা আমার প্রার্থিতা কেড়ে নিতে ব্যর্থ হয়েছে। আগামী ৭ তারিখেও তারা ব্যর্থ হবে। আপনারা সবাই কেন্দ্রে গিয়ে ঈগল মার্কায় আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন এবং সব ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত জবাব দেবেন।

এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গাজীপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা, কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সহসভাপতি হাবিবুর রহমান আকন্দ, কৃষকলীগের সাবেক উপজেলা সভাপতি আইন উদ্দিন মাস্টার, কাপাসিয়া উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ রুহুল আমিন, গাজীপুর জেলার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যার আনিসুর রহমান আরিফ, কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক ভিপি হাফিজুল হক চৌধুরী আইয়ুবসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

এই দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছাড়াও ওই আসনে অন্য প্রার্থীরা হলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সামসুল হক, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মাসুদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফ্রন্টের (বিএনএফ) সারোয়ার ই কায়নাত, বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির আব্দুর রউফ খান।

(ঢাকাটাইমস/৪জানুয়ারি/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :