বসন্তের ভালোবাসা দিবস যেন কলুষিত না হয়

মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:১০| আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:১৯
অ- অ+

সম্ভবত ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখের ঘটনা। তখন অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি। গ্রাম থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকাতে যাই এবং সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাই। পড়াশোনার মাত্র বছরখানেক পার হয়েছে। ঢাকা শহরের হালচাল তখনো ততটা বুঝে উঠতে পারিনি। ক্যাম্পাসে কালেভদ্রে যেতাম। কারণ নিজের পড়াশোনার খরচ নিজেই চালাতাম টিউশনি করে। সবে প্রাইভেট পড়াতে অভ্যস্ত হয়ে উঠছিলাম। সঙ্গে ফার্মগেটে একটি একাডেমিক কোচিংয়ে পড়াই। ঘটনা চক্রে ইন্টারমিডিয়েটের একটা মেয়েকে প্রাইভেট পড়ানোর দায়িত্ব পাই। ধনী পরিবারের মেয়ে। দেখতে সুন্দর হলেও পড়াশোনায় ততটা মনোযোগী ছিল না বলেই আমাকে পড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বলে আমার মনে হয়। যাহোক পড়াতে থাকলাম এবং ফেব্রুয়ারি মাস আসলো। ১৪ ফেব্রুয়ারির আগের দিন অর্থাৎ ১৩ ফেব্রুয়ারিতে কয়েক বছর আগেও পহেলা ফাল্গুন পালিত হতো। আমাকে স্টুডেন্ট ফোন করে জানাল যে, স্যার আজকে একটু আগে আসতে হবে। রীতিমতো গেলাম এবং হলুদ শাড়ি পরে সামনে এসে বললো স্যার আজকে পড়বো না। আপনার সঙ্গে ক্যাম্পাসে ঘুরতে যাবো। তাকে নিয়ে ঘুরলামও বটে কিন্তু পরের মাস থেকে আর পড়াতে যাইনি। এই গল্প বললাম এই কারণে যে, আমাদের সময়েও কিছুটা লাজলজ্জা ছিল এবং এখনকার সময়ের মতো তখনো ততটা বেহায়াপনা ছিল না আস্তে আস্তে নীতি-নৈতিকতা কমতে শুরু করেছে। যুব সমাজ কেন এই বসন্ত ভালোবাসার আলো-আঁধারে হারিয়ে যাচ্ছে এবং এখান থেকে বের হওয়ার উপায় কি তা নিয়েই মূলত আমার এই লেখা।

বাংলাদেশেও বর্তমানে এই দিবস পালন খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে তরুণ সমাজের কাছে। পাশ্চাত্য সংস্কৃতি বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতির মিশ্রণে ভিন্নভাবে "বিশ্ব ভালোবাসা দিবস" নামে এটি পালিত হয়। বাংলাদেশে সর্বশেষ সংস্কারকৃত বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে ১৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে বসন্ত উৎসব তথা পহেলা ফাল্গুন উদযাপিত হয়। একই দিন ভালোবাসা দিবস পালন করা হয় বিধায় অনেকের কাছেই এই দিবসটি বেশ উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। এই দিনটি বাংলাদেশের অধুনা তরুণ সমাজ আরও ভিন্ন উপায়ে উদ্যাপন করতে উৎসাহিত হয়। বসন্ত আর ভালোবাসা দিবস এখন একাকার। মনে মনে ভাবনার মধ্যে উঁকি দেয় ভালোবাসার বসন্ত নাকি বসন্তের ভালোবাসা। ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইন ডে প্রজন্মের কাছে একটি উৎসবের নাম হয়ে গেছে। উপলক্ষে কিছু অপসংস্কৃতি বেহায়াপনাও পরিলক্ষিত হচ্ছে। মোটাদাগে আকাশ সংস্কৃতি ফ্রি মিক্সিংয়ের নামে উঠতি বয়সের কিশোর-কিশোরী এবং যুবক-যুবতী এই দিবসকে কলঙ্কিত করছে। ভালোবাসা দিবসে পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের, স্বামীর প্রতি স্ত্রীর এবং দাদা-দাদি, নানা-নানির প্রতি একে অপরের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশের মাধ্যমে এই দিবসটি আরও গুরুত্ব পাওয়ার কথা ছিল কিন্তু তা না হয়ে ভালোবাসা বসন্ত উঠতি বয়সের কিশোর-কিশোরী এবং যুবক-যুবতীদেরকে ধ্বংসের দিকে ধাবিত করছে। ভালোবাসা দিবস হয়ে উঠেছে অবাধ যৌনাচার বেহায়াপনার আরেক নাম। অল্প বয়সের কিশোর-কিশোরী এবং যুবক-যুবতী বা পরকীয়ায় লিপ্ত স্বামী বা স্ত্রী এই দিনকে বেছে নিয়ে যৌন-সুড়সুড়ি নিতে ব্যস্ত হয়ে উঠছে, যা সত্যি বসন্ত এবং ভালোবাসা দিবসের জন্য অবমাননাকর।

ভালোবাসা দিবসের উৎস নিয়ে নানা মত প্রচলিত আছে। সম্পর্কে যদ্দুর জানা যায়, লুপারকালিয়া নামে প্রাচীন রোমে এক উৎসব ছিল, যা ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি অবধি হতো। যে উৎসবে নারী-পুরুষ সমানতালে মদ পান করত এবং লটারির মাধ্যমে সঙ্গী বেছে নিয়ে তার সঙ্গে একান্তে মিলিত হতো। অতঃপর রোমানরা যখন তাদের প্রাচীন ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিস্টধর্মে ধাবিত হচ্ছিল, তখন তারা প্রাচীন দেবীর নামে লুপারকালিয়া উৎসবকে মেনে নিতে পারছিল না। আবার উৎসবটি খুব জনপ্রিয় ছিল বলে ছেড়েও দিতে পারছিল না। অবশেষে উৎসবটিকে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নামে উৎসর্গ করে উদযাপন করত। বিখ্যাত ইতিহাসবিদ নোয়েল লেন্সকি বলেছেন, লুপারকালিয়া উৎসবে পুরুষরা দেবী লুপারকাসের নামে একটি ছাগল আর একটি কুকুর বলি দিত। তারপর মৃত ছাগল বা কুকুরের চামড়া দিয়ে উৎসবে অংশগ্রহণকারী মেয়েদের বেদম প্রহার করত। তাদের বিশ্বাস, প্রহারের কারণে মেয়েদের প্রজননক্ষমতা বাড়ে।

ভালোবাসা দিবসের উৎপত্তির ইতিহাস সম্পর্কে যা জানা যায় তা হলো, ২৭০ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস বিবাহিত পুরুষদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ বন্ধ করে দেন এবং আইন জারি করেন, তার সাম্রাজ্যে কেউ বিয়ে করতে পারবে না। কারণ বিবাহিত সেনারা স্ত্রী-সন্তানদের মায়াজালে আবদ্ধ হয়ে যুদ্ধের ময়দানে মৃত্যুর ঝুঁকি নিতে চাইত না। কিন্তু রোমান এক ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইন সম্রাটের ন্যায়ভ্রষ্ট নিয়মের প্রতিবাদ করেন এবং বিয়ে করেন। খবর সম্রাট ক্লডিয়াসের কাছে পৌঁছলে তিনি সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে গ্রেপ্তার করে মৃত্যুদণ্ড দেন। আর সে মৃত্যুদণ্ডটি কার্যকর হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই দিবসকে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আবার কারও কারও মতে, ভ্যালেন্টাইন ছিলেন একজন খ্রিস্টান পাদরি চিকিৎসক। সে সময় রোমানরা ছিল দেব-দেবীর অনুসারী। ২৭০ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস খ্রিস্টধর্ম প্রচারের অভিযোগে ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। বন্দি অবস্থাতেই ভ্যালেন্টাইন জেলারের অন্ধ মেয়ের চোখের চিকিৎসা করেন। ফলে মেয়েটি তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দিন ভ্যালেন্টাইন মেয়েটিকে লিখে যান, আই লাভ ইউ। আর দিনটি ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি।

এছাড়া আরও একটি মিথ চালু রয়েছে যে, ২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামে একজন খ্রিস্টান পাদ্রী চিকিৎসক ছিলেন। ধর্ম প্রচারের অভিযোগে নয়, বরং অনেকের সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগে তৎকালীন রোম সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস তাকে বন্দি করেন। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্যে খ্রিস্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল, আর নৈতিকতার অবক্ষয়ও রোধ করা প্রয়োজন ছিল। বন্দি অবস্থায় তিনি জনৈক কারারক্ষীর দৃষ্টিহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এর পেছনে কালো সত্যি আরো ভয়াবহ, সেই অন্ধ মেয়েকেও ইনি অবৈধ সম্পর্ক ছাড়া ছাড়েন না। সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। আর তাই তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই দিন ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিল। অতঃপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেন্টাইন স্মরণে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন দিবস ঘোষণা করেন। খ্রিস্টান জগতে পাদ্রী-সাধু সন্তানদের স্মরণ কর্মের জন্য ধরনের অনেক দিবস রয়েছে। (উইকিপিডিয়া)

আমাদের প্রিয়নবী (সা.) ভালোবাসা, সম্প্রীতি উত্তম চরিত্রমাধুর্য দ্বারা শত কোটি মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন, বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছেন ইসলামের বিকিরণ। প্রেম-ভালোবাসা, মায়া-মমতা ভক্তি-শ্রদ্ধা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। এসব মানবিক গুণ আছে বলেই এখনো টিকে আছে নশ্বর পৃথিবী। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা নিজেই ঘোষণা করেছেন, আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। (সূরা: আর রুম, আয়াত: ২১)

প্রতিটি ভালোবাসা আবেগ, বিবেক স্রষ্টার সম্মতির সমন্বয় হতে হবে কিন্তু শুধু আবেগ বা কুপ্রবৃত্তি দিয়ে যে ভালোবাসা হয় সে ভালোবাসা মানুষের ইহকাল-পরকাল উভয়কে ধ্বংস করে দেয়। ধ্বংস করে মানুষের মনুষ্যত্ব, জাগরিত করে পশুত্বের হিংস্র বৈশিষ্ট্য। বর্তমানে ভালোবাসা মানেই যুবক-যুবতীর অবৈধ মেলামেশা, নির্লজ্জতা বেহায়াপনা, যা ইসলাম কোনোভাবেই সমর্থন করে না। ইসলামের দৃষ্টিতে প্রত্যেক বালেগ নারী-পুরুষের ওপর পর্দার বিধান রক্ষা করা ফরজ। ইসলাম বিয়ে পূর্ব নারী-পুরুষের কোনো সম্পর্ককেই বৈধতা প্রদান করে না। চাই তা যেভাবেই হোক না কেন। দেখা-সাক্ষাৎ, চিঠিপত্র আদান-প্রদান, পারস্পরিক কথাবার্তা এই সবই নাজায়েজ মারাত্মক গুনাহ। বিষয়ে অসংখ্য কোরআনের আয়াত হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

মূলত ভালোবাসা হচ্ছে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষিত হওয়ার ফল এবং এটা একটি আপেক্ষিক বিষয়। মানুষ ভালোবাসার ক্ষেত্রে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না। বিষয়টির ওপর মানুষের হাত না থাকায় রাসূল (সা.)- আপন স্ত্রীদের পালা বণ্টন করে বলেছেন, হে আল্লাহ, আমার যতটুকু সাধ্য ছিল আমি ইনসাফ করার চেষ্টা করেছি, আর যে বিষয়টি আমার সাধ্যে নেই (অর্থাৎ কোনো স্ত্রীর প্রতি বেশি ভালোবাসা), সে বিষয়ে আমাকে ভর্ৎসনা করবেন না। (সুনানে তিরমিজি: /১৮৫, হাদিস নম্বর ১১৪০, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: /৪১৪) তবে ভালোবাসা মানেই অবৈধ নয়। কিছু কিছু ভালোবাসা শরীয়তে কাম্য। সেটার প্রতি শরীয়ত উৎসাহ প্রদান করেছে।

ছেলেমেয়ের মাঝে যদি ভালোবাসা থাকে তবে অভিভাবকদের উচিত ছেলেমেয়ের সেই সম্পর্ককে গুরুত্ব দেওয়া। তাদের মাঝে বিচ্ছেদ না ঘটিয়ে ছোটখাটো বিষয় বিবেচনায় না এনে বিয়ে দিয়ে দেওয়াই উত্তম। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ভালোবাসায় আবদ্ধ দুইজন পুরুষ-নারীর মাঝে বিয়ের চেয়ে উত্তম কোনো ব্যাপার নেই। এই হাদিসটির প্রেক্ষাপটের দিকে দৃষ্টিপাত করলে আমাদের কাছে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়। এক ব্যক্তি রাসূল (সা.) এর নিকট এসে বলল, আমার যত্নে একটি ইয়াতিম বালিকা আছে। দুইজন ব্যক্তি তাকে বিয়ে করতে চায়। একজন দরিদ্র, অন্যজন ধনী। কিন্তু ইয়াতিম বালিকাটি দরিদ্র লোকটিকে ভালোবাসে এবং তাকেই বিয়ে করতে চায়। তার কথা শুনে রাসূল (সা.) বলেন, ভালোবাসা আবদ্ধ দুইজনের মাঝে বিয়ের চেয়ে আর কী উত্তম হতে পারে?

ইসলাম একটি প্রায়োগিক ধর্ম বিষয়টি অভিভাবকদের মনে রাখতে হবে। এটা স্বভাবগত সহজাত বিষয় যে, কারও সঙ্গে ভালোবাসা হয়ে যাওয়া। ইসলাম এই সহজাত বিষয়টিকে শরীয়তসম্মত রূপদানের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে। যাতে করে ছেলেমেয়ে কোনো অবৈধ কর্মে লিপ্ত না হতে পারে। সামান্য কারণ দেখিয়ে বেশির ভাগ বাবা-মা বা নিজেদের বংশমর্যাদা রক্ষার অজুহাতে ভালোবাসায় আবদ্ধ দুইজনের মাঝে প্রাচীর হয়ে দাঁড়ান। ফলে তারা নিজেরাও বিপদে পড়েন, সন্তানদেরও বিপদে ফেলেন। অনেক সন্তান জেদি হয়ে থাকে। তারা বাবা-মায়ের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পেরে অন্য জীবন বেছে নেয়। বাবা-মায়ের সিদ্ধান্তের প্রতি বিদ্রোহ ঘোষণা করে অনেক সময় আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। তাছাড়া বাবা-মা যখন জোর করে তাদের পারিবারিক সিদ্ধান্তকে সন্তানের ওপর চাপিয়ে দেন, তখন সন্তান পরিবারে নিজেকে নিঃস্ব অসহায় ভাবে। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েই পরে সে তালাক-ডিভোর্সের মতো জঘন্য কোনো অপরাধ করে।

মোদ্দাকথা হলো সন্তানের প্রতি যখন জোর করে পরিবারের কোনো কোনো বিষয় চাপিয়ে দেওয়া হয় অথবা তাদের সিদ্ধান্ত আবেগকে সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করা হয়, তখন তাদের মাঝে জেদ, হিংসা-বিদ্বেষ, নিষ্ঠুরতার মতো ভয়ংকর অমানবিক দোষগুলো তাদের অবচেতন মনেই গ্রথিত হয়ে যায়। আর এগুলো নিজের বাবা-মা, ভাইবোন এমনকি নিজের জীবনের প্রতি প্রয়োগ করতেও দ্বিধা করে না। পরিবারে যদি ভালোবাসা হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করে তাহলে সেই পরিবারের সন্তানেরা মানবীয় জঘন্য প্রবৃত্তিগুলোর ঊর্ধ্বে উঠে নৈতিকতা চর্চা করতে পারে। তখন পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সহজ হয়। অনেকে প্রিয় মানুষকে না পেয়ে মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে মাদকাসক্ত হয়ে যায়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেও জড়িয়ে পড়ে। কিশোর-কিশোরী যুবক-যুবতীর মাঝে ভালোবাসা দিবস (ভ্যালেন্টাইন ডে) পালনের রেওয়াজ নেশার মতো করে বিস্তার লাভ করেছে। প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি তারা দিবসটি উদযাপন করে, উপহার-উপঢৌকন লাল গোলাপ বিনিময় করে থাকে, লাল রঙের পোশাক পরিধান করে থাকে। ধরনের চরিত্র বিধ্বংসী উৎসব পালন করা সঠিক কি না ভেবে দেখতে হবে।

লেখক: কবি কলামিস্ট

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ওপারে কারফিউ, সুনামগঞ্জের ১২ কিলোমিটার সীমান্তে বিজিবির সতর্ক অবস্থান
খালিশপুরে শহীদ মিনারের জমি দখলের ভিডিও করায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ঘোষণায় শাহবাগে ছাত্র-জনতার উল্লাস
৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের সিদ্ধান্ত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা