বিয়ে-ডিভোর্সসহ তিন ক্ষেত্রে হ্যাটট্রিক পূর্ণ হলো চিত্রনায়িকা মাহির

আরও একবার ভাঙল আলোচিত চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সংসার। এই নিয়ে তৃতীয়বার। শুক্রবার গভীর রাতে সবশেষ স্বামী রাকিব সরকারের সঙ্গেও বিচ্ছেদ হয়েছে ‘ম্যাজিক মামনি’র। বার্তা এসেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ভিডিওবার্তায় মাহি জানিয়েছেন, রাকিবের সংসারে তিনি নেই।
শুক্রবার রাত ১১টায় লাইভে মাহি বলেন, ‘আমাকে এমন একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে কখনো ভাবিনি। তবে আমার মনে হয়েছে এখন সবাইকে বলার সময় হয়েছে আমাদের নিজেদের ভালোর জন্য। আমি আর রাকিব খুব ভালো বোঝাপড়া থেকে বিয়ের সিদ্ধান্তে এসেছিলাম। আমরা খুব ভালোই ছিলাম। কিন্তু জীবনের এ পর্যায়ে এসে বুঝলাম আমরা আসলে দুজন দুজনের জন্য না।’
ফলে বিয়ের হ্যাটট্রিক তো মাহি তিন বছর আগেই করেছেন, এবার ডিভোর্সের হ্যাটট্রিকটাও সেরে ফেললেন।
নানা কারণে আলোচিত-সমালোচিত এই নায়িকা প্রথম বিয়ে করেন ২০১৬ সালের মাঝামাঝি শাহরিয়ার ইসলাম শাওন নামে এক যুবককে। সে সময় ওই যুবক মাহিকে তার স্ত্রী বলে দাবি করেন। জানান, তাদের বিয়ে হয়েছে। এক মাস সংসারও করেছেন।
ওই সময় শাওনের সঙ্গে তোলা মাহির বেশ কিছু ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তার মধ্যে কিছু ছিল খুবই ঘনিষ্ঠ, কিছু ছিল বিয়ের সাজের। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলা মোকদ্দমা হয়।
ওই সময় সিলেটের ব্যবসায়ী মাহমুদ পারভেজ অপুকে বিয়ে করেন মাহি। সেটি জানতে পেরেই তার এবং মাহির বিয়ের খবর সামনে আনেন শাওন। প্রমাণ হিসেবে পেশ করেন বিয়ের কাগজপত্র এবং ঘনিষ্ঠ কিছু ছবি।
কিন্তু মাহির ‘ক্ষমতা’ আর জনপ্রিয়তার কাছে টিকতে পারেননি শাওন। শোনা যায়, নায়িকার করা মামলায় টাকা ঢালেন তার দ্বিতীয় স্বামী অপু। পুলিশের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করে আইনিভাবেও সহায়তা দেন।
ফলে সে সময় মাহির করা মামলায় গ্রেপ্তার হন নায়িকার প্রথম স্বামী শাওন। ২০১৬ সালের ১৬ জুন আদালতে এক লাখ মুচলেকা দিয়ে পরে তিনি জামিন পান। এর পরের বছর শাওনকে ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। পরবর্তীতে আর স্বামীর দাবি নিয়ে মাহির সামনে দাঁড়াননি শাওন।
কিন্তু যাকে বিয়ে করে শাওনকে পর করেছিলেন মাহি, সেই অপুর সঙ্গেও সংসার করতে পারেননি তিনি। ২০২১ সালের জুন মাসে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন মাহি ও অপু। ওই বছরেরই সেপ্টেম্বরে বিয়ে করেন গাজীপুরের ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান রাকিব হাসান সরকারকে।
এই রাকিব ছিলেন বিবাহিত। দুটি সন্তানও আছে তার। শোনা যায়, মাহিকে বিয়ে করার জন্য প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স দেন রাকিব। তৃতীয় সংসারে গত বছরের ২৮ মার্চ মাহির একটি পুত্রসন্তান হয়। নাম ফারিশ। কিন্তু সন্তানের বাঁধন টেকাতে পারল না রাকিব-মাহির সংসার।
এদিকে শুধু বিয়ে এবং ডিভোর্স নয়, আরও একটি ক্ষেত্রে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেছেন মাহি। সেটি হলো, রাজনীতির মাঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত হওয়া। গত বছরের শেষ দিকে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটে দুটি পদ পেয়ে রাজনৈতিক অঙ্গণে পথচলা শুরু হয় মাহির।
এর মাত্র দুই মাসের মাথায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে বসেন নায়িকা। কিন্তু পাননি। সে সময় দল থেকে মনোনয়ন দেয় জিয়াউর রহমানকে। তিনি বিজয়ীও হন। এরপর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান মাহি।
কিন্তু দ্বিতীয়বারও তাকে মনোনয়ন দেয়নি আওয়ামী লীগ। ফলে তিনি রাজশাহী-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়াই করেন। কিন্তু খুবই বড় ব্যবধানে হেরে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। হার না মানা মাহি সম্প্রতি সংরক্ষিত নারী আসন থেকেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন।
কিন্তু তৃতীয়বারও মাহিকে প্রার্থী করেনি সরকারি দলটি। ফলে মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার ক্ষেত্রেও হ্যাটট্রিক হয়ে যায় এই অভিনেত্রীর। শোনা যাচ্ছে, সব ভুলে তিনি আবার অভিনয়ে নিয়মিত হবেন। মানুষের মতো মানুষ করবেন একমাত্র ছেলেকে ফারিশকে। তার জন্য সবার দোয়া চেয়েছেন মাহি।
(ঢাকাটাইমস/১৭ফেব্রুয়ারি/এজে)

মন্তব্য করুন