লাখো ভক্তের অংশগ্রহণে চলছে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের উরস, আছেন বিদেশিরাও

ফরিদপুরের সদরপুরে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও অনুষ্ঠিত হচ্ছে চার দিনব্যাপী বিশ্ব উরস। ইতোমধ্যে লাখো ভক্তের অংশগ্রহণে মুখরিত রয়েছে উরস এলাকা। এদের মধ্যে বিদেশি ভক্তরাও আছেন।

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বাদ জুমা পবিত্র ফাতেহা শরিফ পাঠ ও আটরশি পীরের রওজা শরিফ জেয়ারতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় উরসের কার্যক্রম। ওই দিন জুমার নামাজে অংশ নেন লাখো মুসল্লি।

জাকের মঞ্জিল দরবার শরীফের প্রচার প্রধান শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, দেশ বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লাখো আশেকান-জাকেরান, ধর্মপ্রাণ মুমিন মুসলমানসহ বিভিন্ন ধর্মের ভক্তরা উরস অনুষ্ঠানে সমবেত হচ্ছেন। এ বছর প্রথমবারের মতো দেশের উত্তরবঙ্গ থেকে যুক্ত হয়েছে ট্রেন কাফেলা। প্রাত্যহিক ফরজ ও সুন্নাত এবাদতের পাশাপাশি নফল এবাদত জিকির আসকারসহ তরিকতের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পালন করা হয়।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে আটরশি পীরের স্থলাভিষিক্ত খাজা মাহফুজুল হকের নির্দেশনায় আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে এ আয়োজন।

উল্লেখ্য, বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের প্রতিষ্ঠাতা শাহসূফী হযরত মাওলানা খাজাবাবা ফরিদপুরী (রহ.) ছাহেবের পীর ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত সুফি সাধক হযরত খাজা ইউনুস আলী এনায়েতপুরী (রহ.) ছাহেব। হযরত এনায়েতপুরী (রহ.) ছাহেব ১৯৫২ সালে ওফাত লাভ করেন। সেই থেকে আজ অবধি বিশ্ব জাকের মঞ্জিল দরবার শরীফে মহাপবিত্র উরসের আয়োজন করা হয়।

উরস কী?

‘যে দিবসে সাধকের পুণ্য আত্মার সঙ্গে বিশ্ব আত্মা মিলিত হয়, সেই দিবসে তার পবিত্র রুহে সওয়াব রেছানির উদ্দেশ্যে যে ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি উদযাপন করা হয় তা উরস নামে পরিচিত।’

ভক্তদের মতে, এটা অত্যন্ত বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ অনুষ্ঠান। উরস বিশ্ব মানবের জন্য কল্যাণকর এক পবিত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠান।

মহাপবিত্র উরসে কুরআন হাদিসের আলোকে ওয়াজ নসিহত, শরিয়তের তাৎপর্য ও গুরুত্ব ব্যাখ্যা, খোদাপ্রাপ্তিতত্ত্ব জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কীয় আলোচনা, খোদাপ্রাপ্তিতত্ত্ব জ্ঞান চর্চা অর্থাৎ জিকির, রাবেতা, মোরাকাবা, শোগল ও মোহাসাবাসহ বিভিন্ন প্রকারের ফয়েজ খেয়াল করা হয়। শরিয়তের খেলাপ কোনো কাজ এখানে করা হয় না।

বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে প্রতিদিন মানুষ আসে। তবে বছরের নির্দিষ্ট একটা দিনে মহা পবিত্র উরস উপলক্ষে ভক্তসহ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নামে। তারা এখানে আসেন শান্তির খোঁজে। আল্লাহ ও রাসুলকে পাওয়ার উদ্দেশ্যে ইহকাল ও পরকালের মুক্তির আশায়।

রোগ, জরা, দুঃখ-দারিদ্র্য, অভাব-অনটন বিপর্যস্ত হতাশাগ্রস্ত মানুষ ছুটে যাচ্ছে দলে দলে। এসময় বিশ্ব জাকের মঞ্জিল পরিণত হয় এক তীর্থক্ষেত্রে। মানব সম্মিলনের এক পবিত্র ভূমি হয়ে ওঠে জাকির মঞ্জিল।

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বাদ জুমার পর শুরু হওয়া উরস ১৭, ১৮, ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারি শনি, রবি, সোম ও মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে। ২০ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) শাহসূফী হযরত মাওলানা খাজাবাবা ফরিদপুরী (রহ.) ছাহেবের পবিত্র রওজা শরীফ জেয়ারত করে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে এর কার্যক্রম।

(ঢাকাটাইমস/১৭ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/পিএস)