টেকনাফ-সেন্টমার্টিন দ্বীপ সীমান্তে মর্টারশেলের শব্দ, সতর্ক বিজিবি-কোস্টগার্ড

টেকনাফ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৩ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০১| আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৯
অ- অ+
ফাইল ছবি।

মিয়ানমারের রাখাইনে আবারও মর্টারশেলের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দিবাগত রাত থেকে শুক্রবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত টেকনাফ-সেন্টমার্টিন দ্বীপ সীমান্তে মর্টারশেলের শব্দ শুনেছেন সীমান্তের এপারে বসবাসরতরা। এতে কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে তাদের মাঝে। এ ঘটনার পরই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে মিয়ানমারের চলমান ঘটনাকে কেন্দ্র করে এর আগেও সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছিল সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে।

স্থানীয়রা মনে করছেন, আরাকান আর্মির হামলা তীব্র হলে এবং তার অগ্রসর হতে থাকলে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) বা সেনাবাহিনীর সদস্যরা আবারও বাংলাদেশে আশ্রয়ের জন্য প্রবেশ করতে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টেকনাফ সীমান্তের ওপারে উত্তরপাড়া, লম্বাবিল, উনচিপ্রাং, কাঞ্জরপাড়া, হ্নীলা, মোলভীপাড়া, ওয়াব্রাং, ফুলের ডেইল, চৌধুরীপাড়া ও জালিয়াপাড়া এলাকা থেকে থেমে থেমে গুলি ও মর্টারশেলের শব্দ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে রাখাইনের কুমিরহালি, নাইচদং, কোয়াংচিগং, শিলখালী, নাফপুরা এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপের ওপারে গৃহযুদ্ধের কারণে গোলার বিকট শব্দে কাঁপছে এপারও।

সীমান্তঘেঁষা শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দাদের মতে, ঈদের রাত (বৃহস্পতিবার) থেকে মিয়ানমারে যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে। সেখানকার গোলার বিকট শব্দে আমাদের ঘরবাড়ি কাঁপছে। শুক্রবার জুমার নামাজের পরও বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। শব্দ এত তীব্র যে নারী-শিশুরা ঘুমাতে পারছে না। এভাবেই আতঙ্কে দিন পার করছি আমরা।

তবে রাখাইনে চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে নতুন করে বাংলাদেশে যাতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ না ঘটে, সে জন্য বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

এ বিষয়ে টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাখাইনে গোলাগুলি চলছে। যে কারণে এপারে বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের সীমান্তবর্তী লোকজনের ভয়ের কোনো কারণ নেই। সীমান্তে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি এ সমস্যাকে কেন্দ্র করে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ যাতে না ঘটে, সেজন্য সীমান্তে টহল জোরদার রয়েছে।’

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮৩ কিলোমিটার। এর বড় একটা অংশই পড়েছে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায়। ২০২৩ সাল থেকে কক্সবাজার ও বান্দরবান সীমান্তে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও দেশটির সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) গোলাগুলির ঘটনা ঘটে আসছে। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা এর সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। যদিও গোলাগুলি হলে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আদনান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সীমান্তে নজর রাখছি পরিস্থিতি কোন দিকে যায়। তবে সীমান্তে বসবাসকারী মানুষ যাতে আতঙ্কিত না হয়, সে জন্য আমরা খোঁজ-খবর রাখছি। এছাড়া নাফ নদ সীমান্তে আমাদের বিজিবি ও কোস্টগার্ড সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।’

এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তের ওপারে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়। এর জের ধরে গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসে বিজিপি সদস্যসহ ৩৩০ জন। এর মধ্যে ৩০২ জন বিজিপি সদস্য, ৪ জন বিজিপি পরিবারের সদস্য, ২ জন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য ও ৪ জন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৩এপ্রিল/পিএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
খিলগাঁওয়ে নির্মাণাধীন ভবনে আগুন
কারামুক্ত হলেন মডেল মেঘনা আলম
দেশের মানুষ নির্বাচন চায় না এটা ড. ইউনুসের অভিমত, সাধারণ মানুষের নয়: আমিনুল হক
সামরিক অভিযানের ‘সবুজ সংকেত’ দিলেন মোদি
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা