‘নারীর অবৈতনিক কাজের স্বীকৃতি ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশের ইকোনমি স্মার্ট হবে না’

ঢাকা টাইমস ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ২৬ মে ২০২৪, ১৬:৩৫

নারীর অবৈতনিক কাজের স্বীকৃতি ও মূল্যায়ন ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশের ইকোনমি স্মার্ট হবে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, এমপি।

রবিবার রাজধানীর মহাখালীতে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত (এমজেএফ) ‘রিকগনিশন অফ আনপেইড কেয়ার ওয়ার্ক: অ্যা স্টেপ টুওয়ার্ডস ফিন্যান্সিয়াল অ্যান্ড সোশ্যাল এমপাওয়ারমেন্ট অফ উইমেন’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। ২০১২ সাল থেকে এমজেএফ মর্যাদায় গড়ি সমতা ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে নারীর গৃহস্থালি ও সেবামূলক কাজের মূল্যায়ন, জিডিপিতে অন্তর্ভুক্তি ও জাতীয় আয় পরিমাপের পদ্ধতি সংস্কারের জন্য দাবি জানিয়ে আসছে। এর মাধ্যমে সর্বস্তরে নারীর মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আনপেইড কেয়ার ওয়ার্কের স্বীকৃতি না দেয়া একটি বৈশ্বিক সমস্যা। নারীর গৃহস্থালি ও সেবামূলক কাজ জিডিপির বাইরে রাখার কোনো কারণ নেই। আমরা বাজেটে আনপেইড কেয়ার ওয়ার্ক অন্তর্ভুক্তির চেষ্টা করছি। কারণ কেয়ার ইকোনমি ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশের ইকোনমি স্মার্ট হবে না।’

সেইসঙ্গে তিনি গৃহকর্মীদের কাজের স্বীকৃতি দেয়ার ক্ষেত্রেও জোর দেন। কারণ গৃহকর্মে তাদের সহযোগিতা ছাড়া ঘরের বাইরে কাজ করা সবার জন্য সহজ নয়।

জিডিপিতে নারীর সেবামূলক কাজের অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কথা উল্লেখ করে এমজেএফ-এর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘সিপিডির এক গবেষণায় দেখা গেছে, নারীর বৈতনিক কাজের চেয়ে অবৈতনিক কাজের মূল্য তিনগুণ বেশি। এখন সময় এসেছে স্যাটেলাইট সিস্টেম অফ অ্যাকাউন্টসের মাধ্যমে নারীর অবৈতনিক কাজগুলো অর্থনৈতিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া। এর আর্থিক মূল্য জাতীয় বাজেটের কত অংশ তাও দেখতে হবে।’

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এমজেএফ-এর পরিচালক (কর্মসূচি) বনশ্রী মিত্র নিয়োগী। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা সমাজের কিছু রীতিনীতি পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। জাতীয়ভাবে নারীর গৃহস্থালি ও সেবামূলক কাজ স্বীকৃতি পেলে তা এই পরিবর্তনকে আরও বেগবান করবে। আমরা সামাজিক ও অর্থনৈতিক, দুইভাবেই নারীর গৃহস্থালি ও সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি চাই। এ ক্ষেত্রে সরকারের একটি বড় ভূমিকা আছে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা যে লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করছি তার জন্য নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। আমাদের রীতিনীতি এবং সামাজিক দায়িত্ববোধের ধারণায় পরিবর্তন আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে টক্সিক ম্যাসকুলিনিটি একটি বড় বাধা। এসবের জন্য আমাদের বাড়তি কিছু নীতিমালা তৈরি ও বাজেটে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।’

ইউএন উইমেন-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ গীতাঞ্জলি সিং মনে করেন, স্বীকৃতির প্রক্রিয়াটি সম্মিলিত পদ্ধতিতে হতে হবে। অংশীদারত্ব ও সমন্বয় এখানে মূল বিষয়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস)-এর গবেষণা পরিচালক ড. কাজী ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন-এর গভর্নিং বডির সদস্য আনিসাতুল ফাতেমা ইউসুফ।

তারা জানান, ২০১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপে উঠে এসেছে, নারীর কাজের ৮১ শতাংশের কোনো মূল্যায়ন হয় না। পুরুষের ক্ষেত্রে মূল্যায়নের বাইরে থাকে শুধু ১৮ শতাংশ কাজ। ২০২১ সালে বিআইডিএস পরিচালিত একটি জরিপ অনুযায়ী, সে বছর নারীর গৃহস্থালি ও সেবামূলক কাজ ছিল ৫৩০৭ বিলিয়ন টাকা সমমূল্যের যা জিডিপির ১৪.৮ শতাংশ-এর সমান। সে বছর জিডিপিতে পুরুষের অবদান ছিল মাত্র ২.৮ শতাংশ।

(ঢাকা টাইমস/২৬মে/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :