অভিযোগ ঢাকতে জেলেদের চাল দিচ্ছেন সেই চেয়ারম্যান, তাতেও অনিয়ম

জেলেদের চাল আত্মসাতের অভিযোগ ধামাচাপা দিতে এবং তদন্ত কমিটির তদন্ত কমিটির কাছে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টায় চাল না দেওয়া জেলেদের কয়েকজনের মাঝে চাল বিতরণ করছেন মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল মজিদ। তবে সেই চাল বিতরণেও অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি চেয়ারম্যান তার নিজস্ব লোক দিয়ে জেলেদেরকে ডেকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বরাদ্দকৃত ৮০ কেজির স্থলে ৩০ কেজির এক বস্তা করে চাল বিতরণ করেছেন। সেটি জেলেদের জন্য বরাদ্দ ছিল না।
জানা যায়, বহুমুখী প্রতিকূলতার শিকার হওয়ায় দুঃস্থ নারীর দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারিভাবে বিভিন্ন প্রকার সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচি অন্যতম, যা ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট বা দুঃস্থ মহিলা উন্নয়ন (ভিজিডি) নামে পরিচিত ছিল। এ কর্মসূচির বরাদ্দ থেকেই জেলেদের চাল দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে জাটকা আহরণে বিরত থাকা জেলে পরিবারকে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে ‘ঢাকা টাইমস'’ এর প্রিন্ট এবং অনলাইনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম ফলাও করে সংবাদটি প্রকাশ করে। সংবাদ প্রকাশের পরে চাল আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান। বর্তমানে বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তদন্ত প্রতিবেদন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এবং অভিযোগ ধামাচাপা দিতে চালা, বাবুপুর, দিয়াবাড়ী ও কল্যাণপুর গ্রামের ১৫-২০ জন জেলের মাঝে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করেছেন চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল মজিদ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন ইউপি সদস্য বলেন, এপ্রিল মাসের ভিডাব্লিউবি কর্মসূচির চাল বিতরণ শেষ হয়নি। এছাড়া, মে মাসের চালও বরাদ্দ হয়েছে। ভিডাব্লিউবি কর্মসূচির সেই চাল থেকে জেলেদের ৩০ কেজির এক বস্তা করে চাল দিচ্ছেন চেয়ারম্যান।
চালা গ্রামের এক জেলের নাম এ বছরের বিতরণকৃত দুই তালিকাতেই রয়েছে। কিন্তু তাকে চাল দেওয়া হয়নি। তদন্ত কমিটি গঠনের পরে তাকে ডেকে নিয়ে ৩০ কেজির এক বস্তা চাল দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলেদের মাঝে চাল বিতরণের কথা স্বীকার করেন ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল মজিদ। তিনি বলেন, সোমবারও কল্যাণপুর গ্রামের ১১ জনকে চাল দিয়েছি।
এতদিন পরে জেলেদেরকে চাল দিচ্ছেন কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, মার্চের বরাদ্দ হওয়া চাল আমি জুন মাস পর্যন্ত দিতে পারবো। আগে দেইনি, এখন দিচ্ছি। ৮০ কেজির জায়গায় ৩০ কেজি কেনো দিচ্ছেন এবং ভিডাব্লিউবি এর বরাদ্দ থেকে চাল দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
এ বিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল মজিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। আর চাল বিতরণের বিষয়ে আমি অবগত নই।
(ঢাকাটাইমস/৩১মে/প্রতিনিধি/পিএস)

মন্তব্য করুন