হাতিরঝিলে ‘জয় বাংলা ম্যারাথন’ শুক্রবার, অংশ নেবেন ৩৫০০ দৌড়বিদ

শুক্রবার ভোর ৫টায় রাজধানীর হাতিরঝিলে ‘জয় বাংলা ম্যারাথন-২০২৪’ শিরোনামে হাফ ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক্স ও সাইক্লিং ক্লাবের এই আয়োজনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তিন হাজার ৫০০ দৌড়বিদ অংশ নেবেন।
বুধবার সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ম্যারাথন আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরেন বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক্স ও সাইক্লিং ক্লাবের সভাপতি এবং পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার। এরপর এই আয়োজনের জার্সি উন্মোচন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বনজ কুমার জানান, হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় চারটি কাটাগরিতে মোট পাঁচ হাজার প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও অংশগ্রহণেচ্ছু শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুরোধে এবং ভালো মানের সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ৩৫০০-তে সীমিত রাখা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রতিযোগীদেরকে তিন ঘণ্টা ৪০ মিনিটের মধ্যে ২১.০৯৫ কিলোমিটির পথ পাড়ি দিতে হবে। দৌড় শুরু হবে হাতিরঝিলের মেরুল বাড্ডা পয়েন্ট থেকে এবং সমাপ্ত হবে হাতিরঝিলের এম্ফিথিয়েটারের সামনে। প্রতিযোগীদের ওয়ার্মআপ সেশন চলবে ভোর ৪টা ৩০ মিনিট থেকে ৪টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত এবং লাইন আপ হবে ভোর ৪টা ৪৬ মিনিটে। দৌড় শুরু হবে ভোর ৫টায়।
প্রতিটি ক্যাটাগরিতে বিজয়ী ১০ জনকে পুরস্কার প্রদানসহ অংশগ্রহণকারীদের জন্য রয়েছে টি-শার্ট, মেডেল ও সার্টিফিকেট। ১৬ বছর থেকে ৫০ বছর (পুরুষ ও মহিলা) বিজয়ীদের পুরস্কার হিসেবে রয়েছে- প্রথম পুরস্কার এক লাখ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৭৫ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা, চতুর্থ পুরস্কার ৪০ হাজার টাকা, পঞ্চম পুরস্কার ৩৫ হাজার টাকা, ষষ্ঠ পুরস্কার ৩০ হাজার টাকা, সপ্তম পুরস্কার ২৫ হাজার টাকা, অষ্টম পুরস্কার ২০ হাজার টাকা, নবম পুরস্কার ১৫ হাজার টাকা, দশম পুরস্কার ১০ হাজার টাকা।
৫১ বছর থেকে তদুর্ধ্ব (পুরুষ ও মহিলা) বিজয়ীদের জন্য রয়েছে- প্রথম পুরস্কার এক লাখ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৭৫ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা, চতুর্থ পুরস্কার ৪০ হাজার টাকা, পঞ্চম পুরস্কার ৩৫ হাজার টাকা।
ম্যারাথনের সময় পুরো ট্র্যাক জুড়ে দৌড়বিদদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে একাধিক মেডিকেল টিম এবং হাইড্রেশন পয়েন্ট, অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ডিএমপির ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগ কর্তৃক ম্যারাথন চলাকালীন সময়ে বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ম্যারাথনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ পুলিশের আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। অনুষ্ঠানগুলোতে সভাপতিত্ব করবেন বনজ কুমার মজুমদার এবং পরিচালনা করবেন বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক্স ও সাইক্লিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৭ তারিখটি নির্ধারণ করা হয়েছে ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এই তারিখটি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণের জন্য বিখ্যাতভাবে স্মরণ করা হয়। ‘৭ই মার্চের ভাষণ' নামে পরিচিত এই ভাষণটি বাঙালি জনগণকে জাগিয়ে তুলতে এবং স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন জোগাড় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ‘জয় বাংলা' স্লোগান মুক্তিযুদ্ধে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। তাই ৭ই মার্চ, ১৯৭১, বাংলাদেশের স্বাধীনতার দিকে যাত্রার সূচনার প্রতীক এবং বাঙালি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও সার্বভৌমত্বের অন্বেষণে তাদের সাহস, সংকল্প এবং স্থিতিস্থাপকতার স্মারক হিসেবে কাজ করে।
এর আগে, ১৯৬৬ সালের ৭ই জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ছয় দফা আন্দোলন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথে এখনো একটি নির্দিষ্ট পয়েন্ট অব রেফারেন্স। দিনগুলোর তাৎপর্য স্মরণে রাখতে জয় বাংলা ম্যারাথন নামকরণ করা হয়েছে। এই ম্যারাথনের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশি নাগরিকদের একটি সুস্থ ও সক্রিয় লাইফস্টাইল চর্চায় উদ্বুদ্ধ করা।
(ঢাকাটাইমস/৫জুন/এলএম/এফএ)

মন্তব্য করুন