কোটা সংস্কার আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের বিচারবিভাগীয় তদন্ত হবে: প্রধানমন্ত্রী

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডসহ যেসব অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, সুষ্ঠু ও ন্যয়বিচারের স্বার্থে সেসব বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার একযোগে এই ভাষণ সম্প্রচার করে। শোকের কালো পোশাকে ভাষণ দিতে আসেন তিনি।
ভাষণের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আমি এসেছি। তিনি কোটা আন্দোলন ঘিরে নিহতদের জন্য শোক প্রকাশ করেন। বলেন, আমি খুবই মর্মাহত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িত তাদের সাথে সন্ত্রাসীদের কোনো সম্পর্ক নেই। যারা সংঘাত ও নৈরাজ্য পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে তাদের পরিবারের জন্য জীবন-জীবিকা নির্বাহ ক্ষেত্রে যে সহযোগিতা দরকার আমি করব।
প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়ে বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করছি যারা হত্যাকাণ্ড, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে তারা যেই হোক না কেন তারা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায় সে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি আরও ঘোষণা করছি, হত্যাকাণ্ডসহ যেসব অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, সুষ্ঠু ও ন্যয়বিচারের স্বার্থে সেসব বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে।
কারা কোন উদ্দেশ্যে দেশকে একটি অরাজক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিলো, তা তদন্ত করে বের করা হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আন্দোলনরত কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। যে কোনো সময় সংঘাতের পরিবেশ তৈরি করে তাদের ক্ষতিসাধন করতে পারে। শিক্ষার্থীদের পিতা-মাতা অভিভাবক এবং শিক্ষকদের প্রতি আমার আবেদন, তারা যেন তাদের সন্তানদের নিরাপত্তা বিষয়ে সজাগ থাকে। একইসঙ্গে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষভাবে নজর রাখেন।
তিনি বলেন, সরকার হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছে। আপিল আদালতে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কোনো বক্তব্য থাকলে তা শোনার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় আন্দোলনে নেমে সংঘাতের সুযোগ করে দেবেন না।
সরকারপ্রধান বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত আমি সবাইকে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমার বিশ্বাস আমাদের ছাত্রসমাজ উচ্চ আদালত থেকে ন্যায়বিচারই পাবে। তাদের হতাশ হতে হবে না ইনশাল্লাহ।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে সবার সহযোগিতায় স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব। আমি আবারো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি। তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমার সমবেদনা জানাচ্ছি।
ঢাকাটাইমস/১৭জুলাই/এলএম/ইএস

মন্তব্য করুন