কোটা আন্দোলনে সহিংসতা নিয়ে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে বিষয়টির দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে বলে জানিয়েছে দেশটি।
স্থানীয় সময় বুধবার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন অব্যাহত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে অন্তত ছয় ছাত্র নিহত হয়েছেন। ক্ষমতাসীন সরকারের দলীয় শাখা ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশেষভাবে নিষ্ঠুর আচরণ করছে, বিশেষ করে মেয়ে ও নারীদের ওপর এবং তারা গত দেড় দশক ধরেই বারবার এটি করে আসছে। আপনারা কি ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করবেন?
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, এই বিষয়ে (ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন বিবেচনা করা) আমি নির্দিষ্ট করে কোনও কথা বলব না। তবে আমি বলব, ঢাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষোভের সময় যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে, তা আমরা নজরে রেখেছি।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণভাবে করার বিষয়েও আমরা অব্যাহত আহ্বান জানিয়েছি। একইসঙ্গে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে যেকোনও ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানাই আমরা।
আরেক প্রশ্নে একই সাংবাদিক মিলারের কাছে জানতে চান- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের তরুণ ছাত্র আবু সাঈদ তার সহপাঠীদের বাঁচাতে পুলিশের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু সরকারের বাহিনী তাকে গুলি করতে দ্বিধা করেনি এবং এমনকি সে নিজেও বুঝতে পারেনি যে, বন্ধুদের উদ্ধার করার চেষ্টা করার সময় তাকে গুলি করা হয়েছে। নির্বাচনের ঠিক আগে থেকে এভাবেই ক্ষমতা ধরে রেখেছেন শেখ হাসিনা। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, সারা বিশ্ব বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে এবং এ জন্য মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু যখন জনগণের (ভোটের) অধিকার ছিনতাই করা হলো, তখনই হঠাৎ আপনারা নীরব হয়ে গেলেন। কেন এমন হলো?
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে– আপনি যেটা বলেছেন তা ঠিক নয়। আপনি আমাকে এই সপ্তাহজুড়ে বেশ কয়েকবার এ বিষয়ে কথা বলতে শুনেছেন – গত সোমবার বলেছি – আমার মনে হয় আমি গতকালও আবার বলেছি; আমি আজ আবারও বলছি – শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের বিরুদ্ধে যেকোনও সহিংসতার নিন্দা করি আমরা।
কিছুক্ষণ পর আরেক সাংবাদিক বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে সোমবার থেকে এই মঞ্চ থেকে, আপনি বাংলাদেশে যা ঘটছে তা নিশ্চিত করেছেন এবং নিন্দাও করেছেন। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ছয় ছাত্রের এবং যখন আমরা এখানে কথা বলছি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই জাতির উদ্দেশে টেলিভিশন ভাষণে এই ছাত্রদের কীভাবে হত্যা করা হয়েছে তা তদন্ত করার জন্য স্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিটি ঘোষণা করেছেন। তিনি আরও ঘোষণা করেছেন, সরকার নিহতদের প্রতিটি পরিবারকে প্রয়োজনীয় দায়িত্ব নেবে।
কিন্তু এখানে আমার উদ্বেগের বিষয়, কোটা সংস্কারের বিষয়টি বর্তমানে বিচারাধীন। তবে একজন সিনিয়র বিএনপি নেতার অডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যেখানে স্পষ্ট হয়েছে– সহিংস ছাত্র আন্দোলনটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশকে ব্যাহত করার জন্য বিরোধীদের সংগঠিত এবং শিবির, বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর ইন্ধন আছে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি?
জবাবে মিলার বলেন, প্রথমত, আমি সেই ক্লিপটি দেখিনি যা প্রচারিত হচ্ছে তাই আমি কোনোভাবেই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারি না। কিন্তু ১০-১৫ মিনিট আগে আমি এই সঠিক বিষয়ে যে উত্তর দিয়েছিলাম তার কোনো আপডেটও আমার কাছে নেই।
(ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/এমআর)

মন্তব্য করুন