বগুড়ায় শিক্ষার্থী-পুলিশ সংঘর্ষ, অবরোধে আটকা ট্রেন

‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন ও কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বগুড়ায় ৬ ঘণ্টা ধরে আটকা পড়েছে সান্তাহার থেকে ছেড়ে আসা দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেন। ট্রেনটি দুপুর ১২টা ১৫ থেকে এ রিপোর্ট লেখা (৬টা ১৫মিনিট) পর্যন্ত আটকে রয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার সাজেদুর রহমান সাজু।
রেলের এই কর্মকর্তা বলেন, রেলের ২১-২২ নং গেটে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। রেল লাইনের ওপর আগুন লাগিয়ে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। সেলিম হোটেল, কাঠালতলা ও থানার মোড় এলাকার রেলঘুমটি ক্লিয়ার হলে ট্রেনটি যেতে পারবে।
এদিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সকাল থেকে বগুড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে পুলিশের সংঘর্ষ চলছে। সংঘর্ষে কয়েকজন পুলিশ, শিক্ষার্থী ও পথচারীসহ শতাধিক আহত হয়েছে।
এদের মধ্যে বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে ৩৬ জন ও বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ১৮ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে গেছেন।
আহতরা পুলিশের ছররা গুলি, রাবার বুলেট আর ইট পাটকেলের আঘাতের শিকার হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুজন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।
এদিকে আন্দোলনরত ১৫ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর সুজন মিয়া।
অপরদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় জিয়া নামে ট্র্যাফিক পুলিশের এক সার্জেন্টের উর্দি খুলে নিয়েছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বেলা এগারোটায় শিক্ষার্থীরা শহরের সাতমাথা অংশে আসতেই পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় শিক্ষার্থীরা সাতমাথা অংশ থেকে সরে গিয়ে বগুড়ার সবগুলো রাস্তা দখলে নেয়। তখন থেকেই গুলি, টিয়ারশেল, রাবার, বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড, ছুড়তে থাকে পুলিশ।
বর্তমানে আন্দোলকারীরা বগুড়া সদর থানার পশ্চিম এবং উত্তর পার্শ্বের রাস্তাগুলো দখল করে আছে। সেই সঙ্গে শহরের জেলখানা, পৌরসভা কার্যালয় এলাকাতেও অবস্থান করছে আন্দোলনকারীরা। দুপুরে ঘণ্টাখানেক খাবার বিরতি ছিল। তার পর আবার রাস্তা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, বিকাল পৌনে ৫টা পর্যন্ত ৩৭ জন ভর্তি ছিল। এদের অধিকাংশই রাবার বুলেটে আহত হয়েছেন। তবে কারোরই মৃত্যু ঝুঁকি নেই।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের অন্তত ১৫ জনের মতো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা টিয়ারশেল নিক্ষেপ, সাউন্ড গ্রেনেড এগুলোই বেশি ব্যবহার করেছি। শর্টগান বা রাবার বুলেট মাঝে মাঝে ব্যবহার করতে হয়েছে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত আমাদের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। হয়ত তারা বিভিন্ন জায়গায় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে। আমরা সেই স্থানগুলোও নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছি।
(ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/পিএস)

মন্তব্য করুন