হার্টের বন্ধু বিদেশি ফল অ্যাভোকাডো! ক্যানসার প্রতিরোধেও ওস্তাদ
অ্যাভোকাডো একটি চমৎকার বিদেশি ফল। মেক্সিকো এবং মধ্য আমেরিকায় বেশি উৎপাদন এটির। আমদানি করে আনতে হয় বিধায় বাংলাদেশের হাটে বাজারে এটি কম দেখা যায়। ফলটির খোসা কুমিরের গায়ের মতো অমসৃণ। তাই এটি কুমির নাশপাতি নামেও পরিচিত।
সারা বিশ্বের তাবড় চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা এই অ্যাভোকাডোর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এমনকি তারা এই ফলকে সুপারফুড বলতেও পিছপা হন না। তাই মাঝেমধ্যে অ্যাভোকাডো খেলে যে একাধিক রোগের ফাঁদ এড়িয়ে যেতে পারবেন, তা তো বলাই বাহুল্য।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, অ্যাভোকাডোতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি৬, রাইবোফ্ল্যাভিন, নিয়াসিন, ফোলেট, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, বিটা ক্যারোটিন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, লিউটিন, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজের মতো একগুচ্ছ উপকারী উপাদান।
তাই সুস্থ-সবল জীবনযাপন করার ইচ্ছে থাকলে অ্যাভোকাডোকে ডায়েটে জায়গা করে দেয়াটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তাই আর সময় নষ্ট না করে এই সুপারফুডের একাধিক চমকে দেয়া গুণ সম্পর্কে জেনে নিন।
হার্টের স্বাস্থ্য রাখে ভালো
আজকাল বয়স মাত্র ৩০ পেরোতেই অনেকে প্রাণঘাতী হার্টের অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই চিকিৎসকরা সবাইকে হার্টের হাল ফেরানোর পরামর্শ দেন। এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে অ্যাভোকাডো। প্রতি ১০০ গ্রাম অ্যাভোকাডোতে রয়েছে ৭৬ মিলিগ্রাম প্ল্যান্ট স্টেরল। এই উপাদান রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। যার ফলে হার্ট থাকে সুস্থ-সবল।
চোখের জন্য উপকারী
সারাদিন কম্পিউটার ও মোবাইলের স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকার ফলে চোখের বাজছে বারোটা। তাই দৃষ্টিশক্তির হাল ফেরানোর ইচ্ছে থাকলে এসব গ্যাজেট ব্যবহার কমানোর পাশাপাশি অ্যাভোকাডো খাওয়া শুরু করুন।
কারণ এই ফলে রয়েছে লিউটিন এবং জিয়াজ্যানথিনের মতো উপাদান। এই দুই উপাদান চোখের কোষকলাকে সুরক্ষা দেয়। ফলে চোখের হাল ফিরতে সময় লাগে না। এমনকি নিয়মিত অ্যাভোকাডো খেলে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির হাত থেকেও চোখকে রক্ষা করা যায় বলে ইতোমধ্যে একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।
হাড় হবে শক্তপোক্ত
হাড়ের ক্ষয় রোধ করার ইচ্ছে থাকলে নিয়মিত একটা করে এই ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ অর্ধেক অ্যাভোকাডো খেলেই দৈনিক ভিটামিন কে-এর চাহিদার ১৮ শতাংশ মিটে যায়। শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি মিটলেই বাড়ে হাড়ের জোর। রোধ করা যায় হাড়ের ক্ষয়। তাই অস্টিওপোরোসিসের মতো হাড়ের রোগের খপ্পর থেকে বাঁচতে চাইলে নিয়মিত এই ফলের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে নিন।
ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে
অ্যাভোকাডোতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফোলেট। এই উপাদানই স্টমাক, সার্ভাইক্যাল এবং প্যাংক্রিয়াটিক ক্যানসার প্রতিরোধের কাজে একাই একশো। তাই এসব ভয়াবহ অসুখের ফাঁদ এড়াতে চাইলে নিয়ম করে অ্যাভোকাডো খান।
তবে শুধু এই ফল খেয়ে ক্যানসারকে দূরে রাখতে পারবেন না। বরং এর পাশাপাশি ধূমপান ও মদ্যপান ছাড়ুন। এমনকি ফাস্টফুড, রেডমিট ও প্রসেসেড ফুড খাওয়ার অভ্যাসও ছাড়তে হবে। তাহলেই মারণ অসুখ ক্যানসার থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে পারবেন।
মন থাকবে হাসিখুশি
দ্রুত এগিয়ে চলা জীবনে অনেকেই দুশ্চিন্তা, উৎকণ্ঠা এবং অবসাদের মতো মানসিক সমস্যায় ভোগেন। এই সমস্যার সমাধান করতে পারে অ্যাভোকাডো। এই ফলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফোলেট, যা ডিপ্রেশন কাটানোর কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই হাসিখুশি জীবন কাটাতে অ্যাভোকাডো খান।
(ঢাকাটাইমস/২৭আগস্ট/এজে)