কমছে পানি, বাড়ছে রোগ
ফেনী হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ড গাছতলা থেকে ছয়তলায়
ফেনীতে বন্যার পানি আরও কমেছে, একই সঙ্গে বাড়ছে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের হার। তাদের মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি। রোগীর চাপ সামাল দিতে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডটি নতুন ভবনের ছয়তলায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
এর আগে হাসপাতাল থেকে বন্যার পানি নামার পর রোগীর চাপ সামলাতে আঙিনার গাছতলায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু প্রচণ্ড গরম আর হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টির কারণে সেখানে চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তাই নতুন ভবনের ছয়তলায় স্থানান্তর করা হয় ডায়রিয়া ওয়ার্ড।
এখন আরেক বিড়ম্বনায় পড়েছেন রোগীরা। ছয়তলা ভবনে ওঠানামার জন্য সিঁড়ি ছাড়া বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই। এতে ছয় তলায় উঠতে কষ্ট হয় রোগী ও বয়স্ক স্বজনদের।
জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরে ধারণক্ষমতার দশ গুণ বেশি রোগীর চিকিৎসা দিতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। চিকিৎসাসেবায় হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল খায়ের মিয়াজী জানান, জায়গার অভাবে রোগীদের আপাতত ছয় তলায় নেওয়া হয়েছে। সংকট নিরসনে ইতোমধ্যে অস্থায়ী ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ২১ শয্যার বিপরীতে শিশু রোগীর সংখ্যা ছিল ১২৫ জন। চিকিৎসাধীন রোগীর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধার সংখ্যা বেশি। ২৫০ শয্যার এই হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগী ৫৭৫ জন।
বন্যায় মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব; এই অবস্থায় হাসপাতালে এসেও অনেক সহজলভ্য ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। রোগী ও তাদের স্বজনরা বলেন, সরকারের উচিত এটি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।
হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ইনচার্জ সবিতা রায় বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে যেসব ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে আমরা তা রোগীদের দিচ্ছি। যেগুলো আমাদের সাপ্লাইয়ে নেই কেবল সেসব ওষুধ কিনতে বলা হচ্ছে। ডায়রিয়া রোগীদের হাসপাতালের পক্ষ থেকে কলেরা স্যালাইন, খাবার স্যালাইন, স্যালবিউট্যামল সিরাপ, নাপা সিরাপ, ক্যানোলা, স্যালাইন সেট দেওয়া হচ্ছে।’
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার আসিফ ইকবাল বলেন, ‘বন্যার পরপর ফেনীর ৬ উপজেলা থেকে আসা ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের চাপ বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। এরপরও আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি সেবা নিশ্চিত করতে। আমাদের জনবল ও জায়গার অভাব আছে। গুরুত্বপূর্ণ অনেক চিকিৎসক সংকটও রয়েছে।’
(ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/মোআ)