হারানো জৌলুস ফেরাতে বিপিএলে আনা হতে পারে বিদেশি ফুটবলার-হলিউড তারকাদের
দেখতে দেখতেই এখন পর্যন্ত দশটি আসর শেষ হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল)। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৩০ ডিসেম্বর মাঠে গড়াবে বিপিএলের ১১তম আসর। ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম আসর দিয়ে তাক লাকিয়ে দেয় আয়োজকরা। ফ্র্যাঞ্চাইজি স্বত্ব পাওয়ার লড়াই, ক্রিকেটারদের নিলাম, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও ছিল বিশ্ব মানের। কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথে মানে ভাটা পড়ে, রং হারায় বিপিএল।
তবে হারানো জৌলুস ফেরাতে এবারের আসরকে নিয়ে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিপিএলকে বিশ্বমানের বানাতে বিসিবির সঙ্গে মাঠে থাকবে বাংলাদেশ সরকারও। পুরো দেশেই ক্যাম্পেইন চলবে, বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় কাজও করবে। পাশাপাশি বিভিন্ন আয়োজনে থাকবে, বিদেশি অনেক তারকা— এমন কথা জানিয়েছেন বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম।
আসন্ন আসরের আয়োজন নিয়ে গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ক্রিকেট বোর্ড কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং সম্প্রচার স্বত্বাধিকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিসিবি। বিপিএলকে দেশের সব স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে আলোচনা করা হয়েছে বৈঠকে।
প্যারিস অলিম্পিকের পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বিপিএলে ভিন্ন মাত্রা যোগ করা যাবে বলে মনে করেন বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম। সোমবার মিরপুরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'এ ধরনের ইভেন্টের সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে মানুষকে কীভাবে আরও সম্পৃক্ত করতে হয়, মানুষকে উজ্জীবিত করে অন্যান্য সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করা যায়, এ বিষয়গুলো আমাদের প্রধান উপদেষ্টার চেয়ে ভালো কেউ জানেন না।'
এবারের আসর দিয়ে বিপিএল বাংলাদেশের একটি ব্র্যান্ড হয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস নাজমুল আবেদীনের। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগটাকে আন্তর্জাতিক মানের টুর্নামেন্টে রূপ দেওয়ার আশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, 'কীভাবে এটাকে আন্তর্জাতিক মানের টুর্নামেন্টে পরিণত করা যায়, কীভাবে এটাকে ব্র্যান্ড হিসেবে তৈরি করা যায়, কীভাবে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া যায়…বিশ্ব যেন দেখে বাংলাদেশের তরুণেরা কেমন, বাংলাদেশের সমাজটা কেমন, বাংলাদেশের খাওয়া কেমন…এ জিনিসটা যেন সবাই দেখে। শুধু বিপিএল নয়, বাংলাদেশও একটা ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিতি পাবে এই বিপিএলের পর।'
অতীতে বিপিএলে মঞ্চ মাতিয়েছেন বলিউডের সালমান খান, ঋত্বিক রোশান, জ্যাকলিন ফার্নান্দেজের মতো তারকারা। নিয়ে আসা হয়েছে কেকে, আতিফ আসলামের মতো তারকা সঙ্গীত শিল্পীদের। এবার হলিউড তারকাদেরও উপস্থিতি থাকতে পারে বিপিএলে। এ ছাড়া বিশ্বের নামিদামি ক্রিকেটার, ফুটবলারদেরও দেখা যেতে পারে বলে জানান নাজমুল আবেদীন।
বিসিবির এই পরিচালক বলেন, 'আমাদের প্রধান উপদেষ্টা যদি মাঠে আসেন, একটা বক্তব্য দেন, বিদেশ থেকে দারুণ নামকরা একজন ফুটবলার বা হলিউড থেকে একজন অভিনেতা বা অভিনেত্রী এখানে এসে সংযুক্ত হন, এটা নিশ্চয়ই সারা পৃথিবীর মিডিয়াতে আসবে।'
'সেভাবেই কিন্তু এটার প্রচার হতে পারে। আমাদের চেষ্টা থাকবে বিশ্বব্যাপী এটা প্রচার করা। আমার ধারণা, এত দিন আমরা যতটুকু করতে পেরেছি তার চেয়ে বেশিগুণ এবার করা সম্ভব হবে।'-যোগ করেন তিনি।
কোন কোন তারকাদের দেখা যাবে সেটি অবশ্য খোলাসা করেননি ফাহিম, 'আমি এখনই নাম বলতে পারছি না বা বলতে চাই না। ক্রিকেট হতে পারে বা বাইরের অন্য স্পোর্টসের হতে পারে। স্পোর্টসের বাইরেও হতে পারে। এমন কাউকে এবার দেখতে পারি।'
বিপিএলের প্রথম আসের ছিল থিম সং, গানটি তৈরি করেন ভারতের বিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ি। এরপর আরও ৯টি আসর চলে গেলেও নতুন কোনো থিম সং তৈরি করা হয়নি। এবার নতুন করে থিম সং তৈরি করা হচ্ছে।
আসরটিতে এবার প্রথমবারের মতো থাকবে মাসকট। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বড় অংশজুড়ে থাকবে কনসার্ট, যেখানে সঙ্গীত পরিবেশনা করতে পারেন পাকিস্তানের বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী রাহাত ফাতেহ আলী খান। মিরপুরের পাশাপাশি বাকি দুই ভেন্যু সিলেট ও চট্টগ্রামেও আয়োজন করা হবে কনসার্ট।
(ঢাকাটাইমস/ ০৫ নভেম্বর/এনবিডব্লিউ)
মন্তব্য করুন