ওমারজাইয়ের ছক্কায় সিরিজ জিতল আফগানিস্তান

আরও এক হতাশার গল্প। ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার পর এবার আফগানিস্তানের কাছে সিরিজ হারলো বাংলাদেশ। আফগানদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৯২ রানের বিশাল ব্যবধানে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৬৮ রানে হারিয়ে সিরিজের সমতায় ফিরে নাজমুল শান্তর দল। তবে তৃতীয় ম্যাচেই খেই হারিয়ে ফেললো বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচে আফগানদের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারলো টাইগাররা।
সোমবার (১১ নভেম্বরে) শারজাহতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪৪ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৮ রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে রহমানউল্লাহ গুরবাজের সেঞ্চুরি আর ওমারজাইয়ের অর্ধশতকে ১০ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আফগনরা। শেষ ১১ বলে জয়ের জন্য মাত্র ৫ রান দরকার হলে পরের বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে জয় নিয়ে মাঠে ছাড়েন আজমাতউল্লাহ ওমারজাই। তার ছক্কাতেই সিরিজটাও নিজেদের করে নিলো আফগানরা।
আফগানিস্তানের হয়ে আজ ওপেনিংয়ে নামেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও সেদিকউল্লাহ আটাল। শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন এই দুই আফগান ব্যাটার। তবে ভযঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই জুটিকে থামান অভিষিক্ত নাহিদ রানা। গত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) গতির ঝড় তুলে নিজেকে আলাদাভাবে চিনিয়েছিলেন নাহিদ রানা। আজ ওয়ানডেতে অভিষেক হয়ে শুরুতেই বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছেন তিনি।
নাহিদের বলে বোল্ড হযে সাজঘরে ফিরে যান ১৮ বলে ১৪ রান করা সেদিকউল্লাহ আটাল। তার বিদায়ে ৪১ রানে ওপেনিং জুটি ভাঙে আফগানদের।
সেদিকউল্লাহ আটালের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন রহমাত শাহ। তবে আজ তাকে বেশিদূর এগোতে দেননি কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। মোস্তাফিজের শিকার হয়ে ২২ বলে ৮ রান করেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি।
রহমাত শাহ এর বিদায়ের পর হাশমতউল্লাহ শাহিদিকে নিয়ে জুটি গড়েন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। বাংলাদেমের বিপক্ষে আজ তিনি ৬০ বলে তুলে নেন অর্ধশতক। এটি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সপ্তম ফিফটি।
রহমানউল্লাহ গুরবাজ অর্ধশতক তুলে নিলেও বেশি সময় ক্রিজে থাকতে পারেননি আরেক ব্যাটার হাশমতউল্লাহ শাহিদি। তাকেও ফেরান মোস্তাফিজ। মোস্তাফিজের বলে স্লিপে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান হাশমতউল্লাহ। তার বিদায়ে ৮৪ রানে ৩ উইকেট হারায আফগানরা।
৮৪ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর আজমাতউল্লাহ ওমারজাইকে নিয়ে জুটি গড়েন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। এরপরেই জীবন পান গুরবাজ। ২২তম ওভারে মিরাজের পঞ্চম বলে গুরবাজকে স্টাম্পিং করতে ব্যর্থ জাকের আলী। ওয়াইড বলটি গ্লাভসে নিতে পারেননি। গুরবাজ (৫৬ রানে) ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন।
এই ভুলের মাশুল দিতে হতে হয়েছে বাংলাদেশকে। টাইগার বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি। তবে সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার তাকে আর বেশিদূর এগোতে দেননি মেহেদী হাসান মিরাজ।
মিরাজের বলে ডিপ স্কোয়ার লেগে জাকির হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান রহমানউল্লাহ গুরবাজ। তার বিদায়ে ভাঙে ১০০ রানের জুটি।
রহমানউল্লাহ গুরবাজের বিদাযের পর সাজঘরে ফিরে যান গুলবাদিন নাইবও। ৫ বলে মাত্র ১ রান করে নাহিদ রানাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে জাকের আলী অনিকের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান গুলবাদিন নাইব। দ্রুত এই দুই ব্যাটারকে ফিরিয়ে আবারও খেলায় ফিরে বাংলাদেশ।
তবে বাংলাদেশের এই স্বস্তি বেশি সময় স্থায়ী হয়না। কেননা ততক্ষনে মোহাম্মদ নবিকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়া শুরু করে দেন আজমাতউল্লাহ ওমারজাই। তুলে নেন অর্ধশতক। এই জুটিতে ভর করে ১০ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আফগানরা।
শেষ ১১ বলে জয়ের জন্য মাত্র ৫ রান দরকার হলে পরের বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে জয় নিয়ে মাঠে ছাড়েন আজমাতউল্লাহ ওমারজাই। তার ছক্কাতেই সিরিজটাও নিজেদের করে নিলো আফগানরা। ওমরজাই ৭০ এবং নবির ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে আগের ম্যাচের মতো এদিনও ভালো শুরু পায় বাংলাদেশ। প্রথম ৮ ওভার ১ বলেই তুলে নেয় ৫৩ রান। তবে পরের ৫ রান তুলতেই সাজঘরে ফিরে যান ৩ ব্যাটার। যার ফলে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে সাজঘরে ফিরে যান তাওহীদ হৃদয়ও। এরপরেই জুটি গড়েন মেহেদী হাসান মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
এই দুই ব্যাটারই তুলে নেন অর্ধশতক। মিরাজ ৬৬ রানে ফিরে গেলেও লড়াই চালিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ২ রান দূরে দাঁড়িয়ে সাজঘরে ফিরে যান মাহমুদউল্লাহ। তার ৯৮ রানের ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪৪ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ।
(ঢাকাটাইমস/১২ নভেম্বর/এনবিডব্লিউ)

মন্তব্য করুন