বারোমাসি লেবু চাষে সফল মাওলানা মাঈন উদ্দিন

আমিনুল হক সাদী, কিশোরগঞ্জ
  প্রকাশিত : ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:০৪| আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:২৬
অ- অ+

কিশোরগঞ্জের সদর উপজেলার মহিনন্দ ইউনিয়নের কলাপাড়া গ্রামের মো. আ. জলিলের ছেলে মাওলানা মাঈন উদ্দিন। তিনি পেশায় মসজিদের ইমাম ও ইফার গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষক। ইমামতি ও শিক্ষকতার পাশাপাশি শখের বসে গড়ে তুলেছেন বারোমাসি লেবু বাগান। লেবু বিক্রি করে তিনি বছরে আয় করছেন লাখ টাকা। তার লেবু বাগান দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে লেবু চাষে ঝুঁকছেন আশেপাশের বেকার যুবকরা।

২০২০ সালে সারাদেশ যখন করোনা মহামারিতে আতঙ্কগ্রস্ত সেই সময়ে অনলাইনে টাংগাইলের এক চাষির সাথে পরিচয় হয় মাইন উদ্দিনের। ওই চাষির কাছ থেকে একশ বারোমাসি লেবুর চারা সংগ্রহ করে বাড়ির পাশে ২০ শতক জমিতে চাষ শুরু করেন মাঈন উদ্দিন। এখন তিনি একজন সফল লেবু চাষি।

মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘অনলাইনে পরিচয় টাংগাইলের একজন চাষির কাছ থেকে ২০২০ সালে চার হাজার টাকা দিয়ে একশ লেবুর চারা সংগ্রহ করি। তারপর বাড়ির পাশে ২০ শতক জমিতে লেবুর চাষ শুরু করি। এখন আমার বাগানে চায়না বারোমাসি লেবুর ৭০টি গাছ রয়েছে।’

লেবু বিক্রি করে বেশ ভালো আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় বাজার ও শহরে লেবু বিক্রি করি। এই লেবু বিক্রি করে আমি অনেক ভালো আছি। বাজারে আমার লেবুর ব্যাপক চাহিদা আছে। লেবুর বাগান করে আমি লাভবান হয়েছি। প্রতি বছরে কয়েক লাখ টাকা আয় হয় আমার। এতে আমার পরিবারের ভরনপোষণসহ চাহিদা মিটাতে সহায়ক হচ্ছে।’

ফাল্গুন, চৈত্র ও বৈশাখ মাসে লেবু বিক্রি করে ভালো টাকা আয় হয় জানিয়ে মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘ফাল্গুন, চৈত্র ও বৈশাখ মাসে লেবুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। তখন প্রতিটি লেবু ৭ থেকে ১০ টাকা দরে বিক্রি করি। ওই তিন মাসে লেবু বিক্রি করে ভালো টাকা আয় হয় আমার। তাছাড়া অফ সিজনে এখন দুদিন পর পর ৮ থেকে ১০ কেজি লেবু বিক্রি করি। এক কেজি লেবু ৭০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।’

লেবু চাষে মাঈন উদ্দিনের সফলতা দেখে তার গ্রামসহ আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামের বেকার যুবকেরা তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে লেবু চাষ শুরু করেছেন বলেও জানান তিনি।

মাঈন উদ্দিনের বাগানের লেবু কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয় জানিয়ে প্রতিবেশী শাহজাহান বলেন, ‘এই লেবু কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয়। এ ছাড়া মাঝে মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশেও যায়। সিডলেস চায়না থ্রি জাতের বারোমাসি লেবু চাষে লাভবান হয়েছেন মাঈন উদ্দিন। লেবু বেচাকেনার সঙ্গে যারা জড়িত তারাও লাভবার হচ্ছেন।’

নূরে মদীনা কওমি মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা আবু হানিফা বলেন, ‘মাইন উদ্দিন যে বারোমাসি লেবু চাষ করে, সেটার অফ সিজনে প্রচুর দাম থাকে। এ ছাড়া সিজনেও ভালো বিক্রি হয়। এ লেবুতে প্রচুর ঘ্রাণ ও রস। আমি মাদরাসার বাচ্চাদের জন্য এই লেবু ক্রয় করে থাকি।’

মহিনন্দ ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ হোসাইন বলেন, ‘আমি মাঈন উদ্দিন ভাইয়ের লেবু বাগানের কথা শুনে দেখতে এলাম। আমিও একটি লেবু বাগান করতে আগ্রহী। তার কাছ থেকে কিছু লেবুর চারার কলম নিয়ে আমার জমিতেও চাষ শুরু করবো।’

মাঈন উদ্দিন লেবু চাষির পাশাপাশি একজন আদর্শ খামারীও জানান প্রতিবেশী নূর মোহাম্মদ। বলেন, ‘মাঈন উদ্দিন ভাই লেবু চাষের পাশাপাশি একজন আদর্শ খামারীও। গত বছরে তিনি ত্রিশটি গরু মোটাতাজা করে বাজারে বিক্রি করেছেন। তার এ খামারটি গত বছরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় ইমাম সম্মেলনে ঢাকা বিভাগের প্রথম হয়ে পুরস্কার ও সনদ পেয়েছেন।’

(ঢাকাটাইমস/১০ডিসেম্বর/এমআই)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাতের আঁধারে সীমান্ত দিয়ে পুশইন, ৫২ বাংলাদেশি আটক
কম্বোডিয়ায় দেখার আছে অনেক কিছু
রিট খারিজ, ইশরাককে শপথ পড়াতে বাধা নেই
স্টারলিংকের সংযোগ যেভাবে পাওয়া যাবে
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা