বিপিএল প্লে-অফ: নির্ভার রংপুর, বাকি দলগুলোকে যা করতে হবে

জমে উঠেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ-বিপিএলের ১১তম আসরের মাঠের লড়াই। ঢাকার প্রথম ও সিলেট পর্বের খেলা শেষে এখন চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিপিএল। প্লে-অফে নিজেদের জায়গা দখল করে নেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে দলগুলো।
এবারের আসরে রীতিমতো উড়ছে উত্তরের দল রংপুর রাইডার্স। ৮ ম্যাচ শেষেও কোনো দল হারাতে পারেনি রংপুরকে। তাতেই প্রথম ও একমাত্র দল হিসেবে প্লে-অফে খেলা নিশ্চিত করেছে নুরুল হাসান সোহানের দল। চিটাগাং কিংস এবং ফরচুন বরিশালও প্লে-অফে জায়গা করে নেয়ার পথেই আছে। পিছিয়ে থাকলেও প্লে-অফের লড়াইয়ে টিকে আছে বাকি তিন দলও।
বিপিএলের লিগ পর্বে মোট ম্যাচের সংখ্যা ৪২টি। এর মধ্যে ২৮টি ম্যাচের ফল হয়েছে এখন পর্যন্ত। ম্যাচ বাকি আর মাত্র ১৪টি। এখন পর্যন্ত ৯টি করে ম্যাচ খেলেছে ঢাকা ক্যাপিটালস এবং দুর্বার রাজশাহী। রংপুর রাইডার্স, চিটাগাং কিংস এবং সিলেট স্ট্রাইকার্স খেলেছে ৮টি করে ম্যাচ। ৭টি করে ম্যাচ খেলেছে ফরচুন বরিশাল এবং খুলনা টাইগার্স। লিগ পর্বে প্রত্যেকটা দল খেলবে ১২টি করে ম্যাচ।
দেখে নেয়া যাক প্লে-অফে জায়গা করে নিতে বাকি ম্যাচগুলোতে কোন দলের সামনে কেমন সমীকরণ।
রংপুর রাইডার্স, ৮ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট: ৮ ম্যাচ খেলা রংপুর রাইডার্স একমাত্র দল হিসেবে এবারের আসরে এখন পর্যন্ত সবগুলো ম্যাচ জিতেছে। তাতে প্লে-অফে খেলা নিশ্চিত হয়েছে তাদের। হাতে থাকা ৪ ম্যাচের ২টি জিতলে শীর্ষ দল হিসেবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলবে তারা। এমনকি ১টি ম্যাচ জিতলেও শীর্ষ দুইয়ে থেকেই কোয়ালিফায়ার খেলার সুযোগ থাকবে তাদের সামনে।
বাকি ৪ ম্যাচের দুটিতেই রংপুরের প্রতিপক্ষ রাজশাহী। বাকি ২ ম্যাচে প্রতিপক্ষ চিটাগাং এবং খুলনা।
চিটাগাং কিংস, ৮ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট: পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে আছে বন্দর নগরীর ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। সমান পয়েন্ট ফরচুন বরিশালের, তবে রানরেটে পিছিয়ে তামিম ইকবালের দল।
আগামীকাল (২২ জানুয়ারি) ঘরের মাঠে ঢাকা ক্যাপিটালসকে হারাতে পারলেই প্লে-অফ অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যাবে চিটাগাংয়ের। দিনের আরেক ম্যাচে বরিশাল যদি খুলনাকে হারিয়ে দেয়, তাতেও লাভ হবে চিটাগাংয়ের।
বাকি থাকা ৪ ম্যাচের ২টিতে জিতলেই প্লে-অফ নিশ্চিত হবে চিটাগাংয়ের। এই ম্যাচগুলোতে তাদের প্রতিপক্ষ ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট এবং বরিশাল।
ফরচুন বরিশাল, ৭ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট: এক ম্যাচ কম খেলেই চিটাগাংয়ের সমান পয়েন্ট তামিম ইকবালের দলের। প্লে-অফের লড়াইয়ে তাই সুবিধাজনক অবস্থানে বরিশাল।
হাতে থাকা ৫ ম্যাচের ২টি জিতলেই প্লে-অফ নিশ্চিত হবে বরিশালের। ২ ম্যাচে বরিশালের প্রতিপক্ষ খুলনা। বাকি ম্যাচে প্রতিপক্ষ সিলেট, ঢাকা এবং চিটাগাং।
খুলনা টাইগার্স, ৭ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট: খুলনার হাতে ম্যাচ বাকি ৫টি। এর মধ্যে ৩টি জিতলেই নিশ্চিত হবে প্লে-অফ খেলা। তবে ২টি জিতলেও সুযোগ থাকবে। সে ক্ষেত্রে তাদের তাকিয়ে থাকতে হবে বাকি দলের ম্যাচের দিকেও।
শেষ ৫ ম্যাচের ২টিতে খুলনার প্রতিপক্ষ বরিশাল। বাকি ৩ ম্যাচে তারা খেলবে সিলেট, রংপুর এবং ঢাকার বিপক্ষে।
দুর্বার রাজশাহী, ৯ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট: আসরের অন্যতম দুর্বল দল মনে করা হচ্ছিল দুর্বার রাজশাহীকে। এনামুল হক বিজয় এবং তাসকিন আহমেদ ব্যাটে-বলে ভালো করলেও দল হিসেবে ভালো করতে পারছে না রাজশাহী। ফলে প্লে-অফের লড়াই থেকে অনেকটাই ছিটকে গেছে তারা।
রাজশাহীর হাতে ম্যাচ আছে মোটে ৩টি। এর মধ্যে কমপক্ষে ২টিতে জয় না পেলে পুরোপুরিই ছিটকে যাবে লড়াই থেকে। এর মধ্যে দুটিতেই আবার তাদের প্রতিপক্ষ অপরাজিত রংপুর। ফলে কাজটা আরও কঠিন। রাজশাহীর বাকি ম্যাচটি সিলেটের বিপক্ষে।
ঢাকা ক্যাপিটালস, ৯ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট: গত ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে হারিয়ে প্লে-অফের সম্ভাবনাটা টিমিটিম করে হলেও জ্বালিয়ে রেখেছে ঢাকা ক্যাপিটালস। বাকি ৩ ম্যাচের প্রতিটিতেই জয় দরকার তাদের। একটিতে হারলেও বিদায় নিতে হতে পারে তাদের। এই তিন ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ চিটাগাং, বরিশাল এবং খুলনা।
সিলেট স্ট্রাইকার্স, ৮ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট: ঘরের মাঠে টানা ৩ ম্যাচ হেরে সমীকরণ কঠিন করে ফেলেছে সিলেট। আগামী বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) খুলনা টাইগার্সকে না হারাতে পারলে তাদের সমীকরণও ঢাকার মতোই হয়ে যাবে। তখন শেষ ৩ ম্যাচের ২টিতে জিতলেও অনেক যদি-কিন্তুর ওপর নির্ভরশীল হয়ে যাবে।
বাকি চার ম্যাচে সিলেটের প্রতিপক্ষ খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী এবং চিটাগাং।
(ঢাকাটাইমস/২১ জানুয়ারি/এনবিডব্লিউ)

মন্তব্য করুন