চাঁদপুরে চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

চাঁদপুর প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩:৪৭
অ- অ+

চাঁদপুরের কচুয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই করে চালক ফারুক হোসেনকে (৩৩) হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে চালকের মোবাইল ফোন ও অটোরিকশা। শুক্রবার দুপুরে চাঁদপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— মো. আরিফুর রহমান (৩৫) কুমিল্লার বরুড়া থানার দেবপুর গ্রামের মমতাজ মিয়ার ছেলে, আল-আমিন (২৪) একই জেলার চান্দিনা থানার লতিফপুর গ্রামের মিলন মিয়ার বাড়ির মো. আলমের ছেলে এবং আবুল খায়ের (৪০) একই থানার একই গ্রামের মহর আলীর ছেলে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, গত ৫ ফেব্রুয়ারি হত্যার শিকার ফারুক যাত্রী বহনের উদ্দেশে বাড়ি থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হন। রাত ১০টায় বাড়িতে না আসলে এবং তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় স্ত্রী কচুয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলার সূত্র ধরে কচুয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান একটি টিম নিয়ে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করেন।

ঘটনার এক পর্যায়ে তদন্তকারী টিম অপরাধী চক্রকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। তার ধারবাহিকতায় ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারি দুদিন অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে এবং আসামি আরিফের দেয়া তথ্য মতে মোবাইল ফোন ও অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি আরিফ জানান, তিনি একজন পেশাদার মাদক কারবারি ও মাদক সেবক। এক সময় ঢাকায় সাউন্ড সিস্টেমের দোকানে কাজ করতেন। কয়েক বছর আগে নিজ বাড়িতে চলে আসেন। জীবিকা নির্বাহের জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাতেন আরিফ। ঘটনার সময় তিনি বেকার ও সংসার চালাতে না পেরে হতাশাগ্রস্ত ছিলেন।

অপরদিকে হত্যার শিকার ফারুক অটোরিকশা চালানোর পাশাপাশি মাদক কারবারে জড়িত ছিলেন। ঘটনার দিন ৪ ফেব্রুয়ারি আরিফ হোসেন ফারুকের কাছ থেকে ২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ক্রয় করেন এবং টাকা না থাকায় তার নিজের ব্যবহৃত নোকিয়া মোবাইল ব্যবহারের জন্য দিয়ে দেন। এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পুনরায় আরিফ তার বাড়ি ফাঁকা আছে এবং ইয়াবা নিয়ে ফারুককে তার বাড়িতে আসার জন্য বলেন। ওই বাড়ির বাগানে তারা দুজনে ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করেন। ফারুক ইয়াবার টাকা চাইলে আরিফ ঘরে গিয়ে একটি নাইলনের দড়ি নিয়ে আসে এবং হঠাৎ ফারুককে বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। তার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহ নিকটবর্তী ভবানিপুর-পায়ালগাছ সড়কের পাশে ফেলে মোবাইল ও অটোরিকশা নিয়ে আরিফ চলে যান।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পায়ালগাছা সড়কের পাশে জনৈক হালিম পাটওয়ারীর ফসলি জমি সংলগ্ন স্থানে ফারুকের মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে জানায়। জেলা পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডি মরদেহ শনাক্ত, সুরতহাল প্রস্তুতসহ মরদেহ উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরবর্তীতে ছায়েরা বেগম নামে এক নারী ফারুক তার স্বামী বলে শনাক্ত করেন।

পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের চাঁদপুর আদালতে সোপর্দ করা হবে। ঘটনায় জড়িতরা কুমিল্লা জেলার হলেও ঘটনাস্থল চাঁদপুরের অংশে। ঘটনার পরেই পুলিশ তৎপর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. লুৎফুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকা টাইমস/২১ফেব্রুয়ারি/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশে নেতা-কর্মীদের ঢল, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা
গোপালগঞ্জে নিরীহ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার না করার আহ্বান বিএনপি নেতা মেসবাহ'র
জামায়াতের সমবেশ উপলক্ষে বরাদ্দকৃত ট্রেন পরিচালনায় নিয়ম ভঙ্গ হয়নি : রেলপথ মন্ত্রণালয়
নারায়ণগঞ্জকে আর কোনো গডফাদারের কাছে বর্গা দিতে চাই না: নাহিদ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা