আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি না দিলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধের হুঁশিয়ারি মুরাদনগর বিএনপির

সরকারের একজন বিতর্কিত উপদেষ্টার রাজনৈতিক খায়েশ পূরণ করতে বিএনপি ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো।
সোমবার (২৮ জুলাই) বিকাল চারটায় উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে বিএনপির নেতারা অবিলম্বে আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন এবং দাবি পূরণ না হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধের আলটিমেটাম দেন।
মিছিলটি উপজেলা কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে মুরাদনগর বাজারের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় অফিস চত্বরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, ‘আমরা ৫ আগস্টের পর থানা ও বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় পাহারা দিয়েছি। থানায় তিন বেলা খাবারও দিয়েছি। অথচ বর্তমানে ওসি জাহিদুর রহমান ও সরকারের একজন উপদেষ্টার নেতৃত্বে আমাদের নিরপরাধ নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় জেল খাটানো হচ্ছে।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘ওই উপদেষ্টার চাচাতো ভাই ওবায়দুল্লাহ প্রশাসনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বরাদ্দ দিচ্ছে, গ্রামে গ্রামে মিটিং করছে। সে কি ইউএনও, নাকি উপজেলা চেয়ারম্যান? প্রশাসনের দায়িত্ব যদি ঠিকভাবে পালন না হয়, আমরা উপজেলা ঘেরাও করব।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি না দিলে আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করব।’
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘৫ আগস্টের পরে আমরা মুরাদনগরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সক্রিয় ছিলাম। অথচ আজকে উপদেষ্টার ইন্ধনে ওসি বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে, মামলা দিচ্ছে। চাঁদাবাজি করছে উপদেষ্টার আত্মীয়, আর জেল খাটছে বিএনপির লোকজন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের সব অপকর্ম রেকর্ড হচ্ছে। সময়মতো আইনিভাবে আপনাদের জবাব দেওয়া হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ আছি, কিন্তু ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলে কেউ রক্ষা পাবেন না।’
সমাবেশে বক্তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, প্রশাসনের নির্লিপ্ত ভূমিকা ও পক্ষপাতমূলক আচরণে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ। সময় থাকতে দায়িত্ব পালন না করলে ইউএনও সাহেবকেও ছাড় দেওয়া হবে না।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ মোস্তাক আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি চৌধুরী রকিবুল হক শিপন, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খায়রুল আহসান, সদস্য সচিব সুমন মাস্টার, যুবদল নেতা মাসুম মুন্সি, মাওলানা মুহিবুল্লাহ, আনিছ খান, আলমগীর মেম্বারসহ উপজেলা ও ইউনিয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী, তবে দমন-পীড়নের মাধ্যমে তাদের দমিয়ে রাখা যাবে না। নেতাকর্মীদের মুক্তি না দিলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণারও হুঁশিয়ারি দেন তারা।

মন্তব্য করুন