বিএনপি ও শ্রমিক নেতাদের মুক্তির দাবিতে কোম্পানিগঞ্জে বাস চলাচল বন্ধ, ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি এবং পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দিনব্যাপী বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে কোম্পানিগঞ্জ পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও শ্রমিক ইউনিয়ন। একইসঙ্গে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তি না দিলে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কোম্পানিগঞ্জ থেকে দূরপাল্লার সকল ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়। তবে যাত্রী দুর্ভোগ এড়াতে রাস্তা খোলা রেখে অটোরিকশা ও সিএনজি চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়।
দিনব্যাপী এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে শ্রমিকরা স্লোগান দেন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। সমাবেশে বক্তারা মামলাগুলোকে ‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ এবং ‘সরকারের একজন উপদেষ্টার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
বক্তব্য দেন মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভুইয়া, কোম্পানিগঞ্জ শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক হাজী ইদ্রিস, জেলা শ্রমিকদল নেতা জাকির হোসেন বিএসএস, বাবুল সরকার, জেলা কৃষকদল নেতা জাকির হোসেন, নবীপুর পূর্ব ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি মাইনুদ্দিন, যুবদল নেতা ওয়াশিম, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. শফিকুল ইসলামসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা কোনো সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত নয়। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশে এই গ্রেপ্তার ও হয়রানি চালানো হচ্ছে। তাদের নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে সড়কে আরও কঠোর কর্মসূচি আসবে।
গত ২৫ মার্চ কুমিল্লার মুরাদনগর থানায় হামলা এবং ছাত্র সমন্বয়ক ওবায়দুল হকের ওপর হামলার অভিযোগে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়কসহ ৩২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। মামলায় আরও ৭০–৮০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
পরবর্তীতে ৬ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়, যারা জামিনে মুক্ত হন। বাকিরা হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিনে আসেন। তবে গত ২৭ জুলাই কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন নাকচ করে বিএনপি ও যুবদলের ১৩ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠান ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ আবেদা খাতুন।
এরপর থেকেই উপজেলা জুড়ে বিএনপি, শ্রমিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষের মাঝে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তারই ধারাবাহিকতায় এ পরিবহন ধর্মঘট ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সকল বন্দি নেতাকর্মীকে মুক্তি না দিলে পরবর্তী আন্দোলন হবে আরও বৃহত্তর পরিসরে।
বক্তারা বলেন, জনগণের ধৈর্য পরীক্ষা না নেওয়াই ভালো হবে। আন্দোলন জনগণের অধিকার রক্ষার লড়াই।

মন্তব্য করুন